Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সরকারি জামিতে বাড়ি, সর্বদল বৈঠক বিডিও’র

আপাতত ওই সব নির্মাণ কোলঘাটে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাস্তা সম্প্রসারণ কাজের। সমস্যার সমাধানে শনিবার সর্বদল বৈঠক ডাকতে বাধ্য হলেন কোলাঘাটের বিডিও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোলাঘাট শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০৩
Share: Save:

রাস্তা সম্প্রসারণ করবে পূর্ত দফতর। হয়ে গিয়েছে জমি জরিপের কাজ। সেই কাজের পরে জানা গেল, সরকারি জমিতে বেআইনি ভাবে গড়ে উঠেছে যথেচ্ছ নির্মাণ। শিক্ষক, ব্যবসায়ী থেকে রাজনৈতিক দলের নেতা— এমন শতাধিক মানুষের বহু নির্মাণ পূর্ত দফতরের জমির বেশ কিছু অংশ দখল করে রেখেছে।

আপাতত ওই সব নির্মাণ কোলঘাটে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাস্তা সম্প্রসারণ কাজের। সমস্যার সমাধানে শনিবার সর্বদল বৈঠক ডাকতে বাধ্য হলেন কোলাঘাটের বিডিও।

স্থানীয় সূত্রের খবর, কোলাঘাটে পানশিলা থেকে জশাড় পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার রাস্তাটি এলাকায় যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। সঙ্কীর্ণ ওই রাস্তা দিয়ে কোলা-২, পুলশিটা, গোপালনগর, বৈষ্ণবচক, খন্যাডিহি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা-সহ দাসপুর-২ এবং হাওড়া জেলার কিছু অংশের মানুষ ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং কোলাঘাট স্টেশনে সহজে পৌঁছতে পারেন। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে রাস্তাটি একেবারে ভেঙেচুরে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

রাস্তাটি সম্প্রসারণের জন্য গত মার্চে পূর্ত দফতর প্রায় ১৯ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেন। অগস্ট থেকে রাস্তা জরিপের কাজ শুরু হয়। রাস্তার দু’পাশে কোথাও ১৮ মিটার, কোথাও ৩০ মিটার জুড়ে পূর্ত দফতরের জমি রয়েছে। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, পানশিলা-জশাড় রাস্তাটি সাত মিটার চওড়া করা হবে। রাস্তার দু’পাশ মিলিয়ে ফুটপাত থাকবে তিন মিটার। আর দু’পাশে দু’মিটার করে মোট চার মিটার জায়গা নিয়ে নিকাশি তৈরি হবে। সব মিলিয়ে সম্প্রসারণের জন্য ১৫ মিটার জায়গা দরকার হবে।

অভিযোগ, ওই ১৫ মিটার অংশের মধ্যেও বেশ কিছু দোকান, বাড়ি, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কারও কারও বাড়ির বা দোকানের কিছু অংশ পূর্ত দফতরের জমির ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। জানান গিয়েছে, বৈষ্ণবচক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মাছিনান এবং গোপালনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গোপালনগরে সব থেকে বেশি বাড়িঘর রয়েছে পূর্ত
দফতরের জমিতে।

পূর্ত দফতর অবশ্য জরিপের পরে নিজেদের এলাকার সীমানায় ফলক পুঁতে দেন। জমি অধিগ্রহণ করা হবেও জানানো হয়। পূর্ত দফতের জমিতে যাঁদের নির্মাণ রয়েছে, তাঁদের একাংশের দাবি, তাঁরা নিজেদের রায়ত জায়গার ওপরই বাড়ি করেছেন। এই মর্মে কোলাঘাটের বিডিওর কাছে বেশ কিছু অভিযোগও জমা পড়ে। ওই জট কাটাতে এ দিন সর্বদল বৈঠক ডাকেন কোলাঘাটের বিডিও মদন মণ্ডল। উপস্থিত ছিলেন পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরাও।

এদিনের বৈঠকে সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি রাস্তা তদারকি সর্বদল কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সম্পাদক হয়েছেন বিডিও। বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে মানুষজনকে বোঝানোর দায়িত্ব নেবে ওই কমিটি। পূর্ত দফতরের সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সৌরভ চৌধুরী বলেন, ‘‘রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য আমাদের এই মুহূর্তে ১৫ মিটার জায়গা দরকার। কোথাও সমস্যা হলে বিডিওকে জানানো হবে।’’

কারা ওই বেআইনি নির্মাণ করেছেন? এ ব্যাপারে ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় এখনই খোলসা করেনি ব্লক প্রশাসন। তবে বিডিও মদন মণ্ডল বলেন, ‘‘সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা রাস্তা সম্প্রসারণের কাজে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। শীঘ্রই এলাকায় মাইকে প্রচার করা হবে।’’

কিন্তু সরকারি জমিতে কীভাবে নির্মাণ গড়ে উঠল? অনুমোদনই দিল বা কে? এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলি জানাচ্ছে, অনেকে না জেনেই নির্মাণ করে ফেলছেন। যদিও স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করেই অনেকে এক রকম নির্মাণের অনুমোদন নিয়ে অন্য নির্মাণ বানিয়ে জাঁকিয়ে বসে রয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal Construction Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE