নির্মীয়মাণ এই ভবনকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
দেড় বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও শেষ হয়নি ‘ট্রমা সেন্টার’-এর কাজ। শিল্প-বন্দর শহর হলদিয়ার অসমাপ্ত ট্রমা সেন্টারের বাড়িটাই এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় মানুষের কাছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ট্রমা সেন্টার এখনও চালু না হওয়ায় ‘সুযোগ বুঝে’ সেই বাড়়ির একাংশে আড্ডা জমিয়েছে সমাজবিরোধীরা। মদ–সাট্টা-জুয়ার আড্ডা হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই বাড়ি।
হলদিয়ার সিটি সেন্টারের কাছে দেভোগ মৌজায় ওই ট্রমা সেন্টার নির্মাণের কাজ চলছে। পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ওই ট্রমা সেন্টার তৈরি করছেন হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। ২০১৭ সালে ট্রমা সেন্টারের জন্য ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, ভবনে বহিরাগতদের অনায়াস যাতায়াত। নিয়মিত মদ আর সাট্টার আসর চলে। এমনকী, স্থানীয় এক প্রবীণের দাবি, মাঝেমধ্যেই ওই নির্মীয়মাণ ভবন থেকেই অল্পবয়সি ছেলে-মেয়েদের বেরোতে দেখা যায়। এলাকায় ওই ভবনকে ঘিকে অসামাজিক কাজকর্মে ক্ষুব্ধ সিটি সেন্টারে আশপাশের মানুষ। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে তাঁরা জানান, এলাকায় পুলিশ টহল দিলেও ওই সব অসামাজিক কাজ বন্ধ করতে তাদের তেমন উদ্যোগ দেখা যায় না।
প্রসঙ্গত, শিল্প ও বন্দর শহর হওয়ার সুবাদে জেলায় হলদিয়ায় গুরুত্ব অনেক বেশি। তাই এখানে ট্রমা সেন্টারের প্রয়োজনীয়তা কথা ভেবে দেভোগ মৌজায় তা গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয় হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এইচডিএ)। কিন্তু কাজ শুরু হওয়ার পর দেড় বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও এখনও ভবন নির্মাণ শেষ হয়নি। বিদ্যুৎ সংযোগ কিংবা অগ্নি নির্বাপণের মতো জরুরি কাজ হয়নি বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, ট্রমা সেন্টারটি গড়ে উঠলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। কিন্তু যা পরিস্থিতি, তাতে সেটি কবে চালু হবে বা আদৌ চালু হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে স্থানীয়রা।
এইচডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রাম সেন্টারের কাজ শেষ হতে আরও কিছু দিন সময় লাগবে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং ট্রমা সেন্টার চালু করার জন্য কী কী দরকার তার জন্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘যেহেতু এইচডিএ ওই ট্রমা সেন্টার বানাচ্ছে, তাই আমরা কিছু জানি না। কাজ কবে শেষ হবে, তারাই বলতে পারবে।’’
হলদিয়ার পুর-পারিষদ (স্বাস্থ্য) আজিজুল রহমান বলেন, ‘‘সামান্য কাজ বাকি আছে শুনেছি। তবে দু-তিন মাসের মধ্যে তা শেষ হয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে।’’ অসামাজিক কাজের অভিযোগ কার্যত মেনে নিয়েছেন হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। সংস্থার চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার বিভু গোয়েল বলেন, ‘‘অতীতে কিছু এ ধরনের অভিযোগ কানে এসেছিল। তবে পুলিশ পদক্ষেপ করার পর সে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফের হচ্ছে কি না, খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ সমস্যা এড়ানোর জন্য ভবনে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওযার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে এইচডিএ-র তরফে দাবি করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy