দিঘা বিজ্ঞান কেন্দ্র। পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ। নিজস্ব চিত্র
কেউ এসেছেন মালদা, কেউ বা খড়গপুর থেকে। দিঘায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে সমুদ্রে বেড়ানোর পাশাপাশি অন্যতম প্রধান আকর্ষণ বিজ্ঞান কেন্দ্র।
শুধু দিঘা নয়, একদা অবিভক্ত মেদিনীপুরের মানুষের কাছেও এই বিজ্ঞানকেন্দ্রের আকর্ষণ ছিল। জেলা ভাগ হয়ে যাওয়ার পরেও অবশ্য সেই আকর্ষণে ছেদ পড়েনি। উল্টে এই বিজ্ঞানকেন্দ্র ক্রমশ আরও আধুনিক হওয়ায়, নতুন নতুন বিষয়ের সংযোজন হওয়ায় বর্তমানে দিঘায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে অবশ্য দ্রষ্টব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিজ্ঞান কেন্দ্রের তথ্য বলছে, দিনে গড়ে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার দর্শক এই কেন্দ্রে আসেন। এ ছাড়া পুজো বা ক্রিসমাসের ছুটির সময় প্রতিদিন দর্শক সংখ্যা প্রায় সাত হাজারে দাঁড়ায়। বছরে প্রায় পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ এই কেন্দ্রে আসেন। দেখা গিয়েছে, এমন অনেক পর্যটক আছেন যিনি একাধিকবার এখানে এসেছেন।
বিজ্ঞান কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে এখানে ৫১ আসন যুক্ত ডিজিটাল প্ল্যানেটোরিয়াম তৈরি করা হয়। সেখানে মোট ১২টি শো হয়ে থাকে। সৌরমণ্ডল, চাঁদের জগৎ, মহাকাশের চিত্র, বিজ্ঞানের নানা অগ্রগতি নিয়ে ওই শো দর্শকেরাও খুব উপভোগ করেন। এ ছাড়া বিজ্ঞান বিষয়ে পৃথক তিনটি শো-এর ব্যবস্থা রয়েছে। যার স্লোগান হল, ‘বিজ্ঞান শিখব মজা নিয়ে’। ছোটদের কাছে এগুলি খুব প্রিয় বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
আগামী দিনে এই বিজ্ঞান কেন্দ্রকে আরও আকর্ষণীয় করতে ‘ইনোভেশন হাব’ নামে নতুন একটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞান কেন্দ্রের আধিকারিক সুমন কর্মকার। প্রতি বছর মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকে অনেক উচ্চ মেধা সম্পন্ন শিক্ষার্থী উঠে আসছেন। তাঁদের সেই মেধাকে তুলে ধরতে এই উদ্যোগ বলে জানান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘এই বিভাগে কোনও শিক্ষার্থী যে কোনও বিষয় নিয়ে মডেল তৈরি করতে পারেন। যেগুলি আমাদের বিজ্ঞান কেন্দ্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। সেখানে কেউ চাইলে রোবট, অ্যাস্ট্রোনমি, মেকানিকস প্রভৃতি বিষয়ে কাজ করতে পারে।’’ স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের আবিষ্কারমুখী করতে এই উদ্যোগ বলে জানান তিনি।
বর্তমানে বিজ্ঞান কেন্দ্রের বাগানকে আরও সুন্দর করে সাজানোর পরিকল্পনা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। কারণ পর্যটকরা যাতে বিজ্ঞান কেন্দ্রের শো দেখার পর পরিবার নিয়ে নিরিবিলিতে কিছুটা সময় কাটাতে পারেন সে দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। পর্যটকদের জন্য কেন্দ্রের মধ্যেই একটি ক্যান্টিন তৈরির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। তবে বিজ্ঞান কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, কেন্দ্রের অন্যতম সমস্যা পার্কিং। যে সমস্ত পর্যটক গাড়ি নিয়ে আসেন, তাঁদের ক্ষেত্রে পার্কিং নিয়ে সমস্যা হয়। কারণ বিজ্ঞান কেন্দ্রের সামনে গাড়ি রাখার ফলে যানজট তৈরি হয়। বিজ্ঞান কেন্দ্রের পাশে বা কাছাকাছি প্রশাসন পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করলে পর্যটকদের সুবিধা হয়। যানজটের সমস্যাও মেটে।
এ ব্যাপারে এলাকার বিধায়ক এবং দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের পরিচালন কমিটির সদস্য অখিল গিরি বলেন, ‘‘সমস্যাটি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে। পর্যটকদের যাতে অসুবিধা না হয় তা দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy