Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Jamaishasthi

জামাইষষ্ঠীর বাজার ফিকে

মেদিনীপুরের পেশায় শিক্ষক এক জামাইয়ের শ্বশুরবাড়ি ঝাড়গ্রামে। ইচ্ছে ছিল যানবাহন না চললেও বাইক নিয়েই পৌঁছে যাবেন শ্বশুরবাড়ি।

ইলিশের বাজার সে ভাবে জমল না। রাজাবাজারে। নিজস্ব চিত্র

ইলিশের বাজার সে ভাবে জমল না। রাজাবাজারে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২০ ০২:৩১
Share: Save:

পঞ্জিকা মতে আজ বৃহস্পতিবার, জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লা ষষ্ঠী। অর্থাৎ, প্রথা মতো জামাইষষ্ঠী। কিন্তু করোনা সতর্কতায় দেশ জুড়ে চলছে লকডাউন। তাই জামাইষষ্ঠীর আগের দিন বুধবার মেদিনীপুর, ঘাটাল, খড়্গপুর মহকুমার বড় বাজারগুলিতেও চোখে পড়ল না ভিড়। রাত পোহালেই যে জামাইষষ্ঠী, বোঝা দুষ্কর!

মেদিনীপুরের পেশায় শিক্ষক এক জামাইয়ের শ্বশুরবাড়ি ঝাড়গ্রামে। ইচ্ছে ছিল যানবাহন না চললেও বাইক নিয়েই পৌঁছে যাবেন শ্বশুরবাড়ি। কিন্তু প্রশাসনের যা কড়াকড়ি, তাই শেষ পর্যন্ত যাবেন কি না, স্থির করে উঠতে পারছেন না ওই শিক্ষক জামাই। তিনি বলেন, ‘‘যাওয়ার ইচ্ছে তো ছিল। আসলে জামাই ষষ্ঠীতে খাতিরটা স্পেশ্যাল হয়। কিন্তু বাইক নিয়ে অন্য জেলায় যদি ঝামেলায় পড়তে হয়, তাই যাব কি না ভাবছি।’’ আবার মেদিনীপুরেরই এক ব্যবসায়ী জামাইয়ের শ্বশুরবাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরে। তিনি বলেন, ‘‘যদি বাস-ট্রেন চললে করোনার মধ্যেও জামাই ষষ্ঠীতে শ্বশুরবাড়ি যাওয়া যেত। কিন্তু কিছুই চলছে না, যাব কী ভাবে সেটাই ভাবছি।’’

অন্য দিকে, মেদিনীপুর শহরেই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন এমন দম্পতিরা রান্না করে তা জামাইয়ের বাড়িতে দিয়ে আসবেন বলে ঠিক করেছেন। খড়্গপুরের খরিদার বাসিন্দা বিজন দত্তের মেয়ে-জামাই থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়। তিনি বলেন, ‘‘এই মাসেই মেয়ে-জামাইয়ের অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা ছিল। ওদের জন্য জামাকাপড়ও কিনে রেখেছিলাম। কিন্তু লকডাউনের জন্য যাওয়া হচ্ছে না। তাই জামাকাপড়গুলো জামাইয়ের বাড়িতেই দিয়ে আসব বলে ঠিক করেছি।’’ যানবাহন চলাচল না করায় রেলশহরের জামাই ও শ্বশুর-শাশুড়িদের এবার জামাই ষষ্ঠী কাটবে অনাড়ম্বরেই। চন্দ্রকোনা রোডের এক শাশুড়ি বলেন, ‘‘বাস, ট্রেন চলছে না বলে বাঁকুড়া থেকে মেয়ে-জামাই আসবে না জানিয়ে দিয়েছে। লকডাউন উঠলে সব স্বাভাবিক হলে ওরা আসবে। তখনই আপ্যায়ন করব।’’

মেদিনীপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মলয় রায় বলেন, ‘‘লকডাউন চলছে। তাই জামাই ষষ্ঠীর বাজার আগের মতো নেই। বিক্রিও হচ্ছে না। তবে তুলনায় মাছের বাজারে কিছুটা ভিড় ছিল এদিন। ভিড় নেই খড়্গপুরের বাজারেও। গোলবাজারের কাপড় ব্যবসায়ী টিঙ্কু ভৌমিক বলেন, ‘‘লকডাউন কিছুটা শিথিল হওয়ায় দোকান খুলেছি আমরা। কিন্তু অন্যবারের মতো এবার তো জামাই ষষ্ঠীর কেনাকাটা হচ্ছে না বললেই চলে।’’ বাজারে এবার ফলের দাম অবশ্য অন্য বছরের তুলনায় কম। আম বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। লিচুও বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। ফল বিক্রেতা সুধীর দে বলেন, ‘‘ফলের দাম এবার তুলনায় কম রয়েছে।’’ ঘাটালের এক মাংস বিক্রেতার কথায়, ‘‘জামাইষষ্ঠীর আগে দোকান থেকেই দেড় থেকে দু’কুইন্টাল মাংস বিক্রি হত। আগের থেকে বরাত পড়ত। এবার কিছুই নেই, কী যে হবে!’’ ঘাটালের এক মিষ্টি ব্যবসায়ী বলছিলেন, ‘‘জামাই ষষ্ঠীর স্পেশ্যাল মিষ্টি বানিয়েছি। কিন্তু খদ্দেরই তো নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jamaishasthi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE