চিল্কিগড়ে ডুলুং নদীর উপর কজওয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
গত পাঁচ বছরে সেতু পেয়েছে নয়াগ্রাম ও লালগড়। কিন্তু এখনও দুয়োরানি হয়ে রয়েছে জামবনির চিল্কিগড়। সমীক্ষা হয়েছে, কিন্তু এখনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি। ফলে, আসন্ন বর্ষায় অন্যান্য বারের মতো ভোগান্তি পোহাতে হবে জামবনি ব্লকের বাসিন্দাদের।
একটু ভারী বৃষ্টি হলেই দুশ্চিন্তা বাড়ে এলাকাবাসীর। চিল্কিগড়ের ডুলুং নদী ফুঁসে উঠলে একপ্রান্তে ব্লক-সদর গিধনির সঙ্গে অন্য প্রান্তে জামবনি থানার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সমস্যায় পড়েন দু’প্রান্তের ৮৬টি গ্রামের বাসিন্দারা। জামবনির বুক চিরে গিয়েছে ডুলুং। নাগাড়ে বৃষ্টি হলেই দৃশ্যত নিরীহ এই নদীই হয়ে ওঠে ভয়ঙ্কর। একের পর এক হড়পা বানে জামবনি-গিধনি যাওয়ার রাস্তায় চিল্কিগড় কজওয়ের উপর দিয়ে তুমুল বেগে বইতে থাকে জলরাশি। কজওয়ের একপ্রান্তে জামবনি থানা, অন্যপ্রান্তে ব্লকসদর গিধনির রাস্তা।
স্থানীয়দের বক্তব্য, নাগাড়ে বৃষ্টি হলেই কজওয়েটি হড়পা বানের জেরে ‘অবরুদ্ধ’ হয়ে যায়। তখন দুবড়া, জামবনি ও কেন্দডাংরি এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩৬টি গ্রামের সঙ্গে ব্লক-সদর গিধনির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জামবনির দিক থেকে কজওয়ের অপর প্রান্তে রয়েছে চিল্কিগড় গ্রামীণ হাসপাতাল। গিধনিতে রয়েছে ব্লকের প্রশাসনিক দফতর সমূহ। নিকটবর্তী রেল স্টেশনও রয়েছে গিধনিতে। ফলে নাগাড়ে বৃষ্টি হলে ৩৬টি গ্রামের বাসিন্দারা চরম সমস্যায় পড়েন। তেমনি কজওয়েতে জল উঠলে চিল্কিগড়, ধড়সা, গিধনি, পড়িহাটি ও লালবাঁধ গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫০টি গ্রামের সঙ্গে জামবনি থানার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ডুলুং নদীতে হড়পা বান এলে গিধনি প্রান্তের ওই ৫০টি গ্রামের বাসিন্দাদের অনেক ঘুরপথে জামবনি থানা ও মহকুমা সদর ঝাড়গ্রামে পৌঁছতে হয়। ওই সময় গিধনি প্রান্তের সঙ্কটাপন্ন রোগিদের ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে খুবই সমস্যা হয়।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহুবার প্রশাসনিক মহলে দরবার করেও কোনও কাজ হয় নি। ২০১১ সালে তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সেতুর দাবিতে কজওয়ের সামনে অবরোধ করেছিলেন এলাকাবাসী। তারপর সেতু তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সমীক্ষা করেছিল পূর্ত দফতর। আশ্বাস মিললেও চিল্কিগড়ে ডুলুং নদীর উপর সেতু তৈরির কাজ কিন্তু এখনও শুরু হয়নি। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সমীক্ষা হলেও এখনও প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সমীর ধল বলেন, “কজওয়েতে জল উঠলে দু’প্রান্তের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলেন, “সেতু তৈরির জন্য পূর্ত দফতর প্রয়োজনীয় সমীক্ষা করেছে। অর্থ বরাদ্দ হলে কাজ শুরু হবে।”
সম্প্রতি ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশি সংখ্যক মানুষের উপকার হয়, এমন প্রকল্পগুলি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রূপায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। চিল্কিগড়ে সেতু তৈরি হলে লাভবান হবেন লক্ষাধিক বাসিন্দা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy