Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ঝাড়গ্রামের ঝুমার আছে টোটো কোম্পানি

আর কিছু জুটল না। কতজন তো কতরকম কাজ করে। মেয়ে হয়ে টোটো চালাবে! 

ঝুমা পাত্র।

ঝুমা পাত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৫৯
Share: Save:

আর কিছু জুটল না। কতজন তো কতরকম কাজ করে। মেয়ে হয়ে টোটো চালাবে!

এমনই নানা মন্তব্য শুনতে হয়েছিল ঝাড়গ্রামের ঝুমা পাত্রকে। কিন্তু কারও কথায় কান দিলে কি পেট চলবে! তাই সব কটূক্তি উপেক্ষা করে নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন ঝুমা। এখন আরও এক-দু’জন মহিলা ঝুমাকে দেখে টোটো চালকের পেশায় এসেছেন।

ঝাড়গ্রাম শহরের বাছুরডোবায় ঝুমার বাপের বাড়ি। বছর কুড়ি আগে বাঁকুড়ার বক্সী এলাকায় ঝুমার বিয়ে দেন তাঁর অভিভাবকরা। কয়েক বছরের মধ্যে পর পর দু’টি কন্যা সন্তান হওয়ায় ঝুমাদেবীর উপর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা চরম অত্যাচার শুরু করেন বলে অভিযোগ। ঝাড়গ্রামে আলাদা বাড়ি ভাড়া নিয়ে শুরু হয় তাঁর লড়াই। স্বামীও এসে থাকেন তাঁর সঙ্গে। মুড়ি ভেজে বাড়ি বাড়ি বিক্রি শুরু করেন তিনি। অভিযোগ, কিছুদিন পর গায়ে কেরোসিন ঢেলে তাঁকে পুড়িয়ে মারারও চেষ্টা করেন স্বামী। আইনি লড়াই শুরু করেন ঝুমা। কয়েক বছর ধরে কদমকাননে অ্যাসবেসটসের ছাউনি দেওয়া মাটির বাড়ি তৈরি করে বসবাস করছেন তিনি। বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের বহড়াগোড়ায়। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে স্বামীকে গত বছর একটি টোটো কিনে দিয়েছিলেন। কিন্তু রোজগারের একটা টাকাও স্বামী দিচ্ছিলেন না। বাধ্য হয়ে গত বছর নভেম্বরে টোটো নিয়ে নিজেই রাস্তায় নামেন ঝুমা। গরুর পরিচর্যা সেরে সকালে টোটো নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। বিকেলে বাড়ি গিয়ে এক মুঠো ভাত খেয়ে ফের টোটো নিয়ে রাস্তায়। ফিরতে ফিরতে রাত ৯টা। টোটো চালিয়েই ব্যাঙ্ক ঋণ শোধ করছেন।

স্বামী ফিরে গিয়েছেন। দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ছোট মেয়ের সঙ্গে থাকেন ঝুমা। তিনি বলছেন, ‘‘অসহায় মেয়েদের এই পেশায় নিয়ে
আসতে চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Woman Toto Driver Jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE