Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
TMC

অপসারিত বিধায়ক, শুভেন্দু-অনুগামীও

দাঁতন-১, চন্দ্রকোনা-২, মোহনপুর, গড়বেতা-৩ এবং মেদিনীপুর সদর—এই পাঁচটি ব্লকের সভাপতি অপসারিত হয়েছেন।

তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠক। নিজস্ব চিত্র

তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:৫৯
Share: Save:

২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচন। তাকে সামনে রেখেই পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের কয়েকটি ব্লক এবং শহরস্তরের সাংগঠনিক কাঠামোয় রদবদল হল। অপসারিত হয়েছেন পাঁচটি ব্লকের সভাপতি, তিনটি শহর সংগঠনের সভাপতি। এর মধ্যে যেমন দুই বিধায়ক রয়েছেন, তেমনই শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বলে পরিচিত এক নেতাও রয়েছেন। অপসারিতদের অবশ্য অন্যত্র ‘পুনর্বাসন’ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার দলের নতুন জেলা কমিটিও ঘোষিত হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলছেন, ‘‘আমাদের দলে সবাই যোগ্য মানুষ ছিলেন। বৃহত্তর কাজের স্বার্থে দল কাউকে কাউকে পরিবর্তন করেছে। এটা কিন্তু কারও শাস্তি নয়।’’

দাঁতন-১, চন্দ্রকোনা-২, মোহনপুর, গড়বেতা-৩ এবং মেদিনীপুর সদর—এই পাঁচটি ব্লকের সভাপতি অপসারিত হয়েছেন। দাঁতন-১ এর সভাপতি ছিলেন বিক্রম প্রধান। তিনি দাঁতনের বিধায়কও। চন্দ্রকোনা ২-এর সভাপতি ছায়া দোলুইও চন্দ্রকোনার বিধায়ক। দু’জনকেই অপসারিত করা হয়েছে। দাঁতন ১-এর নতুন সভাপতি হয়েছেন প্রতুল দাস। চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের নতুন সভাপতি হয়েছেন জগজিৎ সরকার। অজিত মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিধায়কেরা আর ব্লক সভাপতি থাকবেন না।’’

মোহনপুরের সভাপতি ছিলেন প্রদীপ পাত্র। প্রদীপ শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বলেই পরিচিত। তাঁকে সরিয়ে এখানে নতুন সভাপতি করা হয়েছে মানিক মাইতিকে। নিমাই বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরিয়ে গড়বেতা- ৩ এর সভাপতি করা হয়েছে রাজীব ঘোষকে। দিলীপ দে-কে সরিয়ে মেদিনীপুর সদর ব্লকের সভাপতি করা হয়েছে মুকুল সামন্তকে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘নিমাই বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করছিলেন। ওঁর আশির উপরে বয়স। উনি নিজেই সরে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। ওঁকে জেলার সহ- সভাপতি করা হয়েছে।’’ শহরগুলির মধ্যে ক্ষীরপাইয়ের নতুন সভাপতি হয়েছেন বীরেশ্বর পাহাড়ি, রামজীবনপুরের সুজিত পাঁজা, চন্দ্রকোনার প্রদীপ সাঁতরা। খড়্গপুর শহরের নতুন সভাপতি কে হবেন, সে নিয়ে অবশ্য এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি দল। খড়্গপুরে শহর সভাপতি ছিলেন রবিশঙ্কর পাণ্ডে। তাঁকে জেলার সহ-সভাপতি করা হয়েছে।

এ দিন দলের নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করেন অজিত। সঙ্গে ছিলেন সাংসদ মানস ভুঁইয়া, দলের জেলা চেয়ারম্যান দীনেন রায়, দলের বিধায়কেরা। জেলার সহ-সভাপতি হয়েছেন ২১ জন। জেলার সাধারণ সম্পাদক ২৭ জন, সম্পাদক হয়েছেন ৩০ জন। জেলা কমিটির সদস্য রয়েছেন ৩৭ জন। অজিত মানছেন, ‘‘জেলা কমিটি একটু বড়ই রয়েছে।’’

তৃণমূলের এক সূত্র মানছে, রদবদলে দলের পরামর্শদাতা তথা ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (পিকে) টিমের পরামর্শের ছাপ স্পষ্ট। প্রবীণ-নবীন এবং নতুন-পুরনোর ভারসাম্য রক্ষার নীতিতে বিশ্বাসী টিম পিকে। উপদলীয় কার্যকলাপ ঠেকাতেই কোনও একটি গোষ্ঠীর একচ্ছত্র প্রভাব টিম পিকে-র পছন্দ নয়। সেই মতো সব গোষ্ঠীকে ‘তুষ্ট’ করতে কিছু ব্লক এবং শহরে সহ-সভাপতির পদও সৃষ্টি করতে হয়েছে। যেমন কেশপুরে ব্লক সভাপতি থেকে গিয়েছেন উত্তম ত্রিপাঠী। অথচ, ব্লক সভাপতি পদে দুর্লভ ঘোষকে চেয়েছিলেন বিধায়ক শিউলি সাহার অনুগামীরা। দুর্লভকে ব্লকের সহ-সভাপতি করা হয়েছে।

অপসারিতদের অনুগামীদের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভের আশঙ্কা রয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত অবশ্য বলছেন, ‘‘আমাদের দলের সহকর্মীদের এটাই বিশেষত্ব যে, সবাই সব জায়গায় কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে। একুশের লক্ষ্যে সব সহকর্মীরা মন দিয়ে কাজ করবে বলে দিদির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’ তিনি শুনিয়ে রাখছেন, ‘‘আমরা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। প্রয়োজনে জেলা কমিটিতে নতুন কিছু নামের অন্তর্ভুক্তি হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Paschim Midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE