Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নয়াগ্রাম হাসপাতালে ল্যাপ্রোস্কোপি

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পর পর দু’জন রোগীর ল্যাপ্রোস্কোপি হয় নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিপি হাসপাতালে। প্রথমে ল্যাপারোস্কোপির মাধ্যমে এক মহিলার গলব্লাডার স্টোন বার করা হয়। পরে অ্যাপেনডিক্স বাদ দেওয়া হয় আরও এক কিশোরের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াগ্রাম শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৮ ০২:১০
Share: Save:

সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালগুলিতে পরিকাঠামোর খামতি ও পরিষেবা নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। তার মধ্যেই ব্যতিক্রমী নজির গড়ল ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। ওডিশা সীমানাবর্তী নয়াগ্রাম ব্লকের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এই প্রথমবার ল্যাপ্রোস্কোপি পরিষেবা চালু হল।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পর পর দু’জন রোগীর ল্যাপ্রোস্কোপি হয় নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিপি হাসপাতালে। প্রথমে ল্যাপারোস্কোপির মাধ্যমে এক মহিলার গলব্লাডার স্টোন বার করা হয়। পরে অ্যাপেনডিক্স বাদ দেওয়া হয় আরও এক কিশোরের।

ঝাড়গ্রাম জেলায় এতদিন কেবলমাত্র ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ল্যাপ্রোস্কোপি করা হতো। এবার নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটিতেও এই পরিষেবা দেওয়া শুরু হল। নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার কৌশিক দাস জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথমে ল্যাপ্রোস্কোপিক কোলেসিস্টেকটমি করে মৌটুসি মহাপাত্র নামে বছর সাঁইত্রিশের এক মহিলার গল ব্লাডার স্টোন বার করা হয়। মৌটুসির অস্ত্রোপচার করেছেন হাসপাতালের শল্যচিকিত্সক রমেশচন্দ্র মুর্মু। অ্যানাস্থেটিস্ট ছিলেন শুভঙ্কর সামন্ত। সাহায্যকারী দুই নার্স ছিলেন সীমা সামন্ত ও মণীষা কর।

নয়াগ্রামের বাঁশকুঠি গ্রামের মৌটুসিদেবী দীর্ঘদিন পেটের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছিলেন। মাস খানেক আগে নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ইউএসজি করান তিনি। পরীক্ষায় ধরা পড়ে, মৌটুসিদেবীর গলব্লাডারে ৯ মিলিমিটার স্টোন রয়েছে। মাসখানেক ধরে ওষুধ খাওয়ার পরে মৌটুসিদেবীর ‘ল্যাপ্রোস্কোপিক কোলেসিস্টেকটমি’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের শল্যচিকিত্সক রমেশচন্দ্র মুর্মুর নেতৃত্বে ‘ল্যাপ্রোস্কোপি অ্যাপেন্ডিসেকটমি’ করে কার্তিক টুডু নামে বছর আঠেরোর এক তরুণের অ্যাপেনডিক্স বাদ দেওয়া হয়েছে। কার্তিকের বাড়ি নয়াগ্রামের সরিপুরা গ্রামে। কার্তিকের বাবা নবকুমারবাবু বলেন, ‘‘এই ধরনের পরিষেবা যে এখানে পাওয়া যাবে তা আগে ভাবাই যেত না। আমাদের মতো মানুষদের খুবই উপকার হয়েছে।’’ কৌশিকবাবুর কথায়, “দরিদ্র এলাকার রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছি। হাসপাতালের সমস্ত চিকিত্সক, নার্স ও কর্মীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলে এমন পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী বেলদা, দাঁতন, কেশিয়াড়ি থেকে প্রচুর রোগী এখানে আসেন। এছাড়াও লাগোয়া ওড়িশা থেকেও প্রতিদিন প্রচুর রোগী নয়াগ্রামে আসেন।”

নয়াগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকাগুলি থেকে ঝাড়গ্রাম জেলা সদরের দূরত্ব ৮০-৯০ কিলোমিটার। সেই কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা খুবই সমস্যায় পড়তেন।

এলাকায় নার্সিংহোমও নেই। ফলে মেদিনীপুর কিংবা ওডিশার নার্সিংহোমে ল্যাপ্রোস্কোপি করাতে গেলে প্রচুর টাকা খরচ হতো। ঝাড়গ্রামের সিএমওএইচ অশ্বিনী মাঝি বলেন, “নয়াগ্রামে ল্যাপ্রোস্কোপি পরিষেবা চালু হওয়ায় প্রত্যন্ত এলাকার গরিব মানুষজন ভীষণই উপকৃত হবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE