ফাইল চিত্র।
ঝাড়গ্রাম-গিধনির মাঝে রেলের লেভেল ক্রসিংয়ের এক গেটম্যানকে মারধরের অভিযোগ উঠল করল অজ্ঞাতপরিচয় তিন যুবকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার এই ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে রেল প্রশাসনের অন্দরে। আগামিকাল, শুক্রবার সিপিআই (মাওবাদী) সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস। তার আগে ওই গেটম্যানকে কারা, কী উদ্দেশ্যে মারধর করল তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ।
জখম ওই রেলকর্মীকে খড়্গপুর রেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করানো হয়েছে। রেলের সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (পিডব্লিউআই-ঝাড়গ্রাম) পাতিরাম ঝাড়গ্রাম জিআরপি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। রেল সূত্রে খবর, ঝাড়গ্রাম ও গিধনি স্টেশনের মাঝে হলুদবনি লেভেল ক্রসিংয়ে গেটম্যানের দায়িত্বে ছিলেন পিডব্লিউআই-ঝাড়গ্রাম শাখার ট্র্যাক মেন্টেনার বিদেশ সর্দার। ঘটনাস্থল ঝাড়গ্রাম থেকে রেলপথে ১৩ কিলোমিটার। একেবারে নির্জন এলাকা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের বাসিন্দা বিদেশের মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে বুধবার ভোর ৬ টা পর্যন্ত ডিউটি ছিল। ঘটনার পরে তিনি রেল-কর্তাদের যে জবানবন্দি দিয়েছেন, তাতে তিনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সওয়া ৭টা নাগাদ সাইকেলে চেপে লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে আসে তিন অজ্ঞাতপরিচয় যুবক। তারা বন্ধ রেলগেটটি খুলে দিতে বলে।
বিদেশ ওই যুবকদের জানান, ট্রেন চলে যাওয়ার পরেই গেট খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু হিন্দিভাষী ও সাঁওতালি ভাষী ওই যুবকরা অকথ্য গালিগালাজ করে তাঁকে (বিদেশকে) মারধর করতে থাকে বলে অভিযোগ। তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। তলপেটে লাথি মারা হয়। অনুরোধেও কাজ হয়নি। মারের চোটে সংজ্ঞা হারান বিদেশ।
তাঁর দাবি, আধঘণ্টা পরে জ্ঞান ফেরার পরে তিনি অন্য একটি রেলগেটে কর্তব্যরত রেলকর্মী জনার্দন রাও-কে ফোন করে প্রথমে ঘটনাটি জানান। খবর পেয়ে স্থানীয় রেলকর্মীরা বিদেশকে উদ্ধার করে খড়্গপুর রেল হাসপাতালে নিয়ে যান। ঝাড়গ্রাম জিআরপি থানার এক অফিসার বলেন, “ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কী উদ্দেশ্যে কেন ওই গেটম্যানকে মারধর করা হয়েছে এখনও স্পষ্ট নয়। সম্ভাব্য সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খড়্গপুর রেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা গেল, বিদেশের চোখেমুখে একরাশ উদ্বেগ। বললেন, ‘‘গেট না খোলায় ওই যুবকরা রেল গেটের কেবিন ঘরে চড়াও হয়ে আমার মাথায় ঘুসি ও তলপেটে লাথি মারতে থাকে। কারও সঙ্গে আমার শত্রুতা নেই। মারধরের কারণটাই বুঝতে পারলাম না।” দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “ওই গেট ম্যানের উপর হামলার ঘটনাটিকে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিনই রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশক্রমে প্রত্যন্ত ও নির্জন এলাকার গেট ম্যানদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
দক্ষিণপূর্ব রেলের টাটা-খড়্গপুর শাখার রেলপথটির বিস্তীর্ণ এলাকা একসময় (২০০৯-২০১০) মাওবাদী প্রভাবিত ছিল। গিধনির পরেই ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সীমানা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy