মনোরম: ঝাউবনের জঙ্গল (বাঁ দিকে)। কংক্রিটে বাঁধানো সৈকতের একাংশ। —নিজস্ব চিত্র।
বঙ্গোপসাগরের শান্ত ঢেউ। সৈকতের কিছু অংশ কংক্রিটে বাঁধানো। পাশে ঝাউগাছের সারি। তার গা ঘেঁষেই রিসর্ট। নিরিবিলি এলাকায় শুধু মাছ ধরার নৌকার আনাগোনা। ছবির মতো সাজানো এই জায়গার নাম বাঁকিপুট।
ইদানীং দিঘা-মন্দারমণিতে সারা বছরই পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে শঙ্করপুর, তাজপুরও। তাই এখন সে সব ছেড়ে একটু নিরিবিলি এলাকা খুঁজছেন বহু পর্যটকই। সেই ঠিকানাই হয়ে উঠেছে বাঁকিপুট। বান্ধবীর সঙ্গে সেখানে বেড়াতে এসেছেন বেহালার অমিত রায়। তাঁর কথায়, “দিঘা, মন্দারমণি বহু বার গিয়েছি। কিন্তু এখানে না এলে সৈকতে ঝাঁকে ঝাঁকে লাল কাঁকড়ার দেখার অভিজ্ঞতা হতো না।” এই সৈকতের বড় আকর্ষণ হল লাল কাঁকড়া। পর্যটকদের দাপাদাপিতে দিঘা, মন্দারমণিতে যারা প্রায় বিলুপ্ত।
বাঁকিপুটের কাছেই রয়েছে বগুড়ান জলপাই গ্রাম। সেখানকার সমুদ্র উপকূলও বেড়ানোর পক্ষে বেশ মনোরম। সম্প্রতি সেখানে পর্যটকদের জন্য কয়েকটি কটেজও তৈরি হয়েছে। বাঁকিপুটের অন্য দিকে রয়েছে হরিপুর। সেখানকার মৎস্যজীবীদের কর্মকাণ্ড রীতিমতো দেখার বিষয়। বাঁকিপুটের কাছে রয়েছে দারিয়াপুর। কর্মসূত্রে এক সময়ে এই এলাকাতেই থাকতেন সাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর স্মৃতি ছড়িয়ে রয়েছে এই এলাকায়। সংলগ্ন রসুলপুর নদীর পাড়েই অবস্থিত মুসলমানদেরদের ধর্মস্থান হিজলি শরিফ। সেখানে রয়েছে বৃহৎ মৎস্যবন্দর পেটুয়াঘাট।
এই সব মিলিয়ে সমুদ্রসৈকত আর মনোরম প্রাকৃতিক শোভা ছাড়াও বাঁকিপুটে নানা বৈচিত্র্যপূর্ণ অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে পারবেন পর্যটকেরা।
বাঁকিপুট যাওয়ার রাস্তাও সোজা। হাওড়া বা ধর্মতলা থেকে দিঘাগামী বাসে চড়ে কাঁথিতে নেমে আর একটি বাস বা ট্রেকার ধরে মাত্র ৩০ মিনিট গেলেই পৌঁছনো যায় বাঁকিপুট। হাওড়া থেকে ট্রেনে করে কাঁথি গিয়ে স্টেশনে নেমেও একই পথে যাওয়া যায় বাঁকিপুট।
এখানে রয়েছে দু’টি বেসরকারি রিসর্ট। এই সমস্ত রিসার্টগুলির বুকিং সেন্টার কলকাতাতেও রয়েছে।
এ ভাবেই শীতের মরসুমে দিঘা-শঙ্করপুর-তাজপুর-মন্দারমণিকে টেক্কা দিতে তৈরি হচ্ছে বাঁকিপুট!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy