Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

দোলের রঙে ভোট রাঙাতে মাঠে সব দলই

দলীয় সূত্রে খবর,  দোলের দিন প্রচারে রঙ দিতে ঘরে বসে থাকবেন না দুই প্রার্থী। বসন্ত উৎসবের দিনে রঙ খেলায় মেতে উঠবেন তাঁরা।

স্বাগত-বসন্ত: কোলাঘাট রাধামাধব মন্দিরের উদ্যোগে শুরু হয়েছে দোল উৎসব। চলবে সাত দিন ধরে। মঙ্গলবার ছিল উৎসবের তৃতীয় দিন। এদিন রূপনারায়ণ নদের গৌরাঙ্গ ঘাটে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সঙ্গীত, নৃত্য পরিবেশন করে এলাকার খুদে শিল্পীরা। ছবি: দিগন্ত মান্না

স্বাগত-বসন্ত: কোলাঘাট রাধামাধব মন্দিরের উদ্যোগে শুরু হয়েছে দোল উৎসব। চলবে সাত দিন ধরে। মঙ্গলবার ছিল উৎসবের তৃতীয় দিন। এদিন রূপনারায়ণ নদের গৌরাঙ্গ ঘাটে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সঙ্গীত, নৃত্য পরিবেশন করে এলাকার খুদে শিল্পীরা। ছবি: দিগন্ত মান্না

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া ও তমলুক শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০৪:৩২
Share: Save:

লাল পলাশ, শিমুলে সেজেছে চার দিক। ফাগুন হাওয়ায় ভর করে এসে গিয়েছে দোল উৎসব। গৃহবাসীর জন্য দরজা খুলতে বাকি মাত্র এক দিন। দোল উৎসব নিয়ে যখন মেতে ওঠার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত আপামর বাঙালি, তখন ঘরে বসতে থাকতে রাজি নন ওঁরাও। ওঁরা মানে রাজনীতির ময়দানে খেলোয়াড়রা।

প্রার্থী ঘোষণা থেকে প্রচার, ইতিমধ্যে দুই কাজেই বিরোধী বিজেপি, বাম ও কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে দিয়েছে তৃণমূল। জেলা জুড়েই দেওয়াল লিখন থেকে সভা শুরু করে দিয়েছে শাসক দলের প্রার্থী থেকে নেতা-কর্মীরা। প্রচারে বাকিদের কতটা পিছনে ফেলা যায়, সেটাই এখন লক্ষ্য শাসক দলের প্রার্থীদের। তাই দোল উৎসবকে কাজে লাগিয়ে প্রচারের পাল্লা আরও ভারী করতে কোমর বেঁধেছেন তৃণমূল প্রাথীরা।

জেলার দুই লোকসভা কেন্দ্র তমলুক আর কাঁথিতে তৃণমূলের প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারী ও শিশির অধিকারী। দলীয় সূত্রে খবর, দোলের দিন প্রচারে রঙ দিতে ঘরে বসে থাকবেন না দুই প্রার্থী। বসন্ত উৎসবের দিনে রঙ খেলায় মেতে উঠবেন তাঁরা। সবুজ আবির মেখে কর্মী- সমর্থকদের পাশাপাশি নিজের নিজের কেন্দ্রের ভোটারদের সঙ্গে জন সংযোগ সারবেন। এমনটাই জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব সূত্রে জানা গিয়েছে। দিব্যেন্দুবাবু বলেন, ‘‘ওই দিন মহিষাদলে একাধিক অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ রয়েছে। তা ছাড়া, হলদিয়া এবং তমলুকেও কর্মীদের সঙ্গে দোল উৎসবে শামিল হতে চাই। উৎসবের আবহে কর্মীদের সঙ্গে ভোট সংক্রান্ত আলোচনা সেরে নিতে চাই। জন সংযোগের বিষয়টিও ফেলনা নয়।’’

জেলার অপর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী টানা দুবারের সাংসদ শিশির অধিকারীও দোলে বাড়িতে বসে থাকতে নারাজ। জানালেন, সকালে বাড়িতেই দলের অনেক কর্মী এসে আবির দিয়ে যান। বেলা বাড়লে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে মিলিত হন। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। তাঁর দাবি, ‘‘৩৬৫ দিনই সবার সঙ্গে থাকি। কর্মীদের সঙ্গে দোল পালনের পাশাপাশি জেলার সামগ্রিক পরিস্থিতির দিকেও নজর থাকবে।’’

পিছিয়ে থাকতে রাজি নয় বিরোধীরাও। মঙ্গলবারই বিকেলে কাঁথি ও তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করে বামেরা। কাঁথিতে বামপ্রার্থী পরিতোষ পট্টনায়েকের বাড়ি খেজুরির লাখিতে। বলেন, ‘‘বাড়িতে থাকলে ক্লাবের বন্ধুদের সঙ্গে রঙ খেলতাম। এ বার কাঁথিতে দলের কর্মীদের সঙ্গে রঙ খেলার ইচ্ছা রয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে জনসংযোগের কাজটাও সেরে নেওয়া যাবে।’’ তমলুকের বাম প্রার্থী ইব্রাহিম মোল্লা তিনবছর ধরে পূর্ব পাঁশকুড়ার বিধায়ক হিসেবে দোলের দিন রঙ খেলেন নিজের বিধানসভা এলাকায়। তাঁর কথায়, ‘‘এবারও হোলির দিন, কোলাঘাট শহর-সহ এলাকার মানুষের সঙ্গে দোল উৎসব পালন করব। রং খেলা, জনসংযোগ দুটোই চলবে।’’

এখনও কে প্রার্থী হবেন তা নিশ্চিত করা না গেলেও বিজেপি এবং কংগ্রেস প্রচারে দোল উৎসবকে কাজে লাগাতে পিছপা নয়। কংগ্রেসের এআইসিসি নেতা পার্থ বটব্যাল বলেন, ‘‘প্রার্থী কে হবে, এখনও হাই কমান্ড জানায়নি। তবে ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত থেকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দোল উৎসব পালন করি।’’ বিজেপি সরাসরি দোল উৎসব নিয়ে শাসক জল কর্তৃত্ব কায়েম করতে চাইছে বলে অভিযোগ তুলেছে। দলের জেলা সভাপতি (তমলুক) প্রদীপ কুমার দাস বলেন, ‘‘সর্বস্তরে ওরা বিভেদের রাজনীতি করছে। তার উপর এখনও আমাদের প্রার্থী ঠিক হয়নি। তাই কর্মীদের সাধ্যমত সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে দোল উৎসব পালনের মাধ্যমে জন সংযোগ রাখতে বার্তা দেওয়া হয়েছে।’’

মোটের উপর বসন্ত উৎসবে প্রচারের সুযোগ নিতে রাজনৈতিক দলগুলি সূচাগ্র জমি ছাড়তে নারাজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE