আসবেন প্রধানমন্ত্রী। রবিবার চলছে কপ্টার নামার মহড়া। নিজস্ব চিত্র
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই প্রথম আসছেন। শিল্প ও বন্দর শহর হলদিয়া তৈরি। হেলিপ্যাড মাঠে রবিবার ছিল শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। মাঠে তিনটি কৃত্রিম হ্যাঙার তৈরি করা হয়েছে। বিজেপির কর্মকর্তাদের দাবি, হ্যাঙারের মধ্যে ৭৫ হাজার মানুষ বসতে পারবেন। এ ছাড়া হলদিয়ার হেলিপ্যাড ময়দানে দুই লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হবে বলে বিজেপি নেতাদের দাবি।
রবিবার প্রস্তুতি দেখতে হলদিয়ায় এসেছিলেন রাজ্যে বিজেপির সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও রাজ্য নেতা বিশ্বপ্রিয় মজুমদার। রাজ্যে এসে শাসক দলকে প্রধানমন্ত্রীর আক্রমণের আগেই এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে কৈলাস মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড় ফণীতে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি জানতে প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিক বার ফোন করেছিলেন। তিনি ওড়িশারও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর ফোনের জবাব দেননি। কার্যত বাধ্য হয়ে রাজ্যের রাজ্যপালের কাছ থেকে ঝড় সংক্রান্ত খোঁজখবর নেন প্রধানমন্ত্রী।’’
হলদিয়ার হেলিপ্যাড মাঠের পরিচিতি রয়েছে হলদিয়া উৎসবের মাঠ হিসেবেও। এই মাঠ হলদিয়ার ব্রিগেড হিসেবেও দেখা হয়। বিজেপি নেতাদের দাবি মোদীর সভায় মাঠ ছাপিয়ে যাবে ভিড়। রবিবার বিকেল থেকেই সভায় লোকজনের আসা শুরু হয়েছে। কৈলাসের দাবি, রবিরার সন্ধের মধ্যেই দশ হাজার মানুষ হলদিয়ায় পৌঁছে গিয়েছে। সভায় কয়েক হাজার গাড়ির জন্য বিশেষ পার্কিং জোন করা হচ্ছে। এর আগে মেদিনীপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভায় মণ্ডপ ভেঙে পড়েছিল। সে কথা মাথায় রেখে এ বার বাড়তি সতর্ক বিজেপির নেতারা। এবার ৪৮ ফুট দীর্ঘ এবং ২৪ ফুট চওড়া মূল মঞ্চ বানানো হয়েছে। জার্মেনিয়াম হ্যাঙার দিয়ে ঝোলানো হয়েছে পুরো ছাউনি। সভামঞ্চে একসঙ্গে ৪০ জন নেতা-নেত্রীর বসার ব্যবস্থা থাকলেও শেষ পর্যন্ত কতজন মঞ্চে ওঠার সুযোগ পাবেন সে ব্যাপারে এখনও কোনও নির্দেশ এসে পৌঁছয়নি বলে দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সভা ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় ঘিরে ফেলা হয়েছে গোটা শিল্পাঞ্চল এলাকা। রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি রবিবার সকাল থেকে শিল্পশহরের বিভিন্ন এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা টহল দিতে শুরু করে। সভামঞ্চ এবং হেলিপ্যাড ময়দানে বারবার তল্লাশি চালান প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসপিজি। এ দিন বায়ুসেনার তরফে বিশেষ কপ্টার হেলিপ্যাডে মহড়া দেয়। জেলা বিজেপি সূত্রে জানানো হয়, সোমবার ঝাড়গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর আরও একটি সভা রয়েছে। সেখানে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায় প্রমুখ উপস্থিত থাকবেন।
বিজেপির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি (তমলুক সংগঠন) প্রদীপ কুমার দাস বলেন, ‘‘ছোট বড় মিলিয়ে দু’ হাজার যানবাহনে চেপে সাধারণ মানুষ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে আসবেন। রবিবার বিকেল থেকেই তমলুক, ময়না, পাঁশকুড়া, খেজুরি, কাথি, দিঘা, এগরা থেকে প্রচুর মানুষ হলদিয়ায় পৌঁছেছেন। দলের তরফে হেলিপ্যাড ময়দানের পাশেই তাঁদের রাত্রিবাসের বন্দোবস্ত হয়েছে। খিচুড়ি খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী আসছেন। তাই তাকে বিশেষ উপহার দেওয়ার কথা ভেবেছেন হলদিয়া বন্দরের শ্রমিক নেতারা। বন্দরে বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের নেতা প্রদীপ বিজলি বলেন, ‘‘মোদীজিকে আমরা রুপোর জাহাজ উপহার দেব। হলদিয়া বন্দর শহর। তাই প্রধানমন্ত্রীকে জাহাজ উপহার দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে।’’ শুধু জাহাজ নয়, প্রধানমন্ত্রীর জন্য হলদিয়ার একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি দোকান থেকে অর্ডার দিয়ে আনানো হচ্ছে রসগোল্লা ও সিঙারা। স্থানীয় বিজেপি নেতাদের দাবি, রসগোল্লা প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের। তাই তাঁরা সেই আয়োজনও রাখছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy