Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

খেলব হোলি রং দেব না!

মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের খড়্গপুর শহরে মিশ্র সংস্কৃতির বসবাস হওয়ায় দোল ও হোলি উৎসবে প্রতিবার উচ্ছ্বাসে ভাসে শহরবাসী।

ঘাটালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থীর দেওয়াল লিখনের প্রস্তুতি। —নিজস্ব চিত্র

ঘাটালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থীর দেওয়াল লিখনের প্রস্তুতি। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০৪:১০
Share: Save:

রাজনীতির রং তো বছরভর থাকে। একটা দিন না হয় শুধু রং থাকুক। চাইছেন অনেকই।

কিন্তু সামনেই যে রঙের সঙ্গে রঙের লড়াই। তার আগে রাজনীতির ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে কি রং খেলা সম্ভব? বিশেষ করে খড়্গপুরের মতো মিশ্র সংস্কৃতির শহরে। উঠে আসছে নানা মত। নির্বাচনের মুখে দোল উৎসবকে প্রচারে কাজে লাগাতে চাইছে রাজনৈতিক দলগুলি। কেউ চান সরাসরি আবার কারও ইচ্ছে ঘুরপথে জনসংযোগ বাড়ানো।

মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের খড়্গপুর শহরে মিশ্র সংস্কৃতির বসবাস হওয়ায় দোল ও হোলি উৎসবে প্রতিবার উচ্ছ্বাসে ভাসে শহরবাসী। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কর্মীরাও শহরবাসীকে আবির মাখিয়ে মিস্টিমুখ করানোর কর্মসূচি পালন করে। এ বারও নির্বাচনে সামনে রেখে বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট করে বসন্ত উৎসব পালনের প্রস্তুতি নিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। একাংশ রাজনৈতিক নেতা অবশ্য প্রকাশ্যে দোল উৎসবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের কথা স্বীকার করেনি। তবে জন সংযোগ বাড়াতে মানুষের সঙ্গে রঙের উৎসবে মিশে যাওয়ার কথা বলছেন।

দোলে জনসংযোগের সুযোগ থাকে ঠিকই তবে তা মাত্রা ছাড়ালে উঠতে পারে নানা প্রশ্ন। তাই ভোটের আগে সতর্ক পদক্ষেপ করতে চাইছে বাম, তৃণমূল, বিজেপি-সহ সমস্ত রাজনৈতিক দল। তৃণমূলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “দোলের মতো ধর্মীয় এই উৎসবের সঙ্গে রাজনীতিকে মেশাব না।” যদিও খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার অকপট। তিনি বলছেন, “মিশ্র সংস্কৃতির এই শহরে আমরা প্রতিবছর দোল উৎসব পালন করি। এ বারও বেশ কয়েকটি এলাকায় বসন্ত উৎসবের আয়োজন হয়েছে। দোল জন সংযোগের একটি বড় মাধ্যম। সামনে নির্বাচন থাকায় স্বাভাবিকভাবে কাজে লাগবে।” একই মত তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিরও। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে দোল বন্ধুত্ব স্থাপনের উৎসব। প্রতিবছর দোলে আমরা খড়্গপুর-সহ সারা জেলায় সহকর্মীদের নিয়ে পরিক্রমা করি। এটাই আমাদের রেওয়াজ। এ বারও তাই হবে। তবে এবছর নির্বাচন থাকায় নিশ্চয়ই বিশেষ মাত্রা পাবে। প্রতিবারের মতো এ বারও বাড়ি-বাড়ি গিয়ে রংয়ের উৎসবে মিশে যাব।”

তৃণমূলের জেলা সভাপতি বাড়ি-বাড়ি গিয়ে রঙের উৎসবে মিশে যাওয়ার কথা বললেও দলীয় প্রার্থী বলছেন অন্য কথা। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মানস ভুঁইয়ার কথায়, “এই বসন্ত উৎসবে রাজনীতির রং মিশিয়ে প্রচার করায় ব্যক্তিগতভাবে আমি বিরোধী। এই দুই দিন মানুষ ব্যক্তিগতভাবে দিনটি পালন করে। তাই ওই দুই দিন রাজনৈতিক কোনও কর্মসূচি আমি নেব না। রং মাখিয়ে ও মেখে কোনও প্রচার করব না।” অবশ্য তিনি এলাকায় ঘুরবেন বলেও জানিয়েছেন। সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব ভট্ট বলেছেন, “এই রঙয়ের উৎসবে আমরা মানুষের মধ্যে মিশে যাব। স্বাভাবিকভাবে রঙেয়ের উৎসব পালনের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারও চলবে।” আর বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের যুক্তি, “সামাজিক উৎসব হিসাবে দোলে আমাদের নেতা-কর্মীরা সকলেই নিজের এলাকায় এই দিনটি পালন করবে। কর্মীরা নিজেদের এলাকায় সুপরিচিত হওয়ায় এ বার নির্বাচনের মুখে দোল উৎসবে পরোক্ষে দলের প্রচারও হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE