কাঁথির রাস্তায় মিছিল ঘিরে পুলিশি নিরাপত্তা। নিজস্ব চিত্র
পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে, ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে গত বছর শেষ হয়েছিল রামনবমীর মিছিল। এ বছর অবশ্য তেমন কোনও দৃশ্য চোখে পড়েনি। তবে এবারও মিছিল ঘিরে বিতর্ক পিছু ছাড়ল না। অভিযোগ, প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়াই কাঁথিতে মিছিল করলেন এক সমিতির সদস্যেরা।
শনিবার কাঁথি শহরে শ্রীরামনবমী উৎসব সমিতির পরিচালনায় ওই মিছিল হয়। এলাকায় ওই সমিতি বিজেপি প্রভাবিত বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়দের একাংশ। গত বছর মিছিল ঘিরে কাঁথির আউটডোর মোড়ে পুলিশের সঙ্গে উদ্যোক্তাদের ধস্তাধস্তি হয়েছিল। বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সেবার ওই মিছিল স্কুল বাজার পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। পুলিশ জানাচ্ছে, এবার ওই মিছিলের কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। তা-ও মিছিল হওয়ায় বাড়তি সতর্ক ছিল পুলিশ প্রশাসন।
এ দিন সারা কাঁথি শহরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আউটডোর মোড়ে পুলিশের নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মতো। ওই মোড়ে টোল গেট বসানো হয়। নামানো হয় কমব্যাট ফোর্স। ছিল পুলিশের সশস্ত্র বাহিনী। মোড়ে ছিল ত্রিস্তর নিরাপত্তা বলয়। একদম প্রথমে ছিল কমব্যাট ফোর্স। তারপর ছিল পুলিশের সশস্ত্র বাহিনী। একে বারে শেষস্তরে ছিল সিভিক ভলেন্টিয়ারেরা। এছাড়াও সারা শহর টহলদারি পুলিশের ব্যবস্থা করা হয়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ দিনের মিছিলে ছিল ধামসা মাদল, রনপা, কাঠি নৃত্য, রামের মূর্তি- সহ ট্যাবলো। কাঁথি-মেচেদা বাইপাসে মিছিল শেষে হয়। সমিতির দাবি, রবিবার শহরের আঠিলাগড়িতে রাম পুজো এবং যজ্ঞ হবে। রামনবমীর মিছিলে অবশ্য অস্ত্র নিয়ে আস্ফালেনর কোনও দৃশ্য এ দিন চোখে পড়েনি। তবে মিছিলে বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতাকে দেখা দিয়েছে। ছিলেন বিজেপি’র সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন মাইতি। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, “এ দিনের মিছিল সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। রামকে ভালোবাসেন এমন রাম ভক্তরা এই মিছিল করছেন। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। আমরা প্রতি বছর এই মিছিলে আসি। আর মিছিলের অনুমতি ছিল কি না, সেটা সমিতি বলতে পারবে। আমি রামভক্ত হিসাবে গিয়েছিলাম।’’
অনুমতি ছাড়া মিছিল করা প্রসঙ্গে শ্রীরামনবমী উৎসব সমিতির সাধারণ সম্পাদক ননীগোপাল বেরা বলেন, “আমরা ১৪ এপ্রিল মিছিল করার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষে জানানো হয়, ওই দিন কাঁথিতে রামনবমীর আরও একটি বড় মিছিল হবে। অশান্তি এড়াতে একই দিনে দুই পক্ষকে মিছিল করতে দেওয়া হবে না। তারপর আমরা ১৩ এপ্রিল মিছিলের জন্য ফের আবেদন করি। কিন্তু প্রশাসন লিখিত অনুমতি দেয়নি। তবে মৌখিক অনুমতি দিয়েছিল।’’
কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সৈয়দ মহম্মদ মামদোদুল হাসান বলেন, “গত বছর ওই সমিতির লোকেরা মিছিল নিয়ে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি করেছিলেন। কয়েকজন পুলিশ আহতও হন। তাই এবার তাদের মিছিলের অনুমতি দেওয়া হয়নি। প্রশাসনিক অনুমতির তোয়াক্কা না করে এ দিন মিছিল করার জন্য পুলিশ উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে।’’
অন্য দিকে, এ দিন কাঁথি লোকসবা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস সামন্তকে নিয়ে রামনবমীর মিছিল করার কথা ছিল ভগবানপুরে। সেই মতো দলের কর্মী-সমর্থকেরা সেখানে হাজিও হয়েছিলেন। কিন্তু দলের রাজ্য কমিটির আহ্বানে শুক্রবার রাতেই কলকাতা যেতে হয় দেবাশিসকে। ফলে প্রার্থীর অনুপস্থিতিতে রামনবমীর মিছিলের বদলে দলীয় ভোট প্রচার হয় মহম্মদপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মোবারকপুরে। এ দিনের পরিবর্তে আজ, রবিবার ভগবানপুরে রামনবমীর মিছিল হবে বলে জানিয়েছেন ভগবানপুর মণ্ডল সভাপতি দেবব্রত কর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy