মমতার স্নেহধন্য হিসেবেই পরিচয় প্রার্থীর। নিজস্ব চিত্র
গত বিধানসভা নির্বাচনে মমতা নিজেই আবেদন করেছিল, প্রতি আসনে তাঁকে দেখেই ভোট দিন। লোকসভা ভোটে গোষ্ঠী কোন্দল এড়াতে, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহধন্য’ প্রার্থীকে জেতানোর আবেদন রেখে দেওয়াল লিখছেন ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ও তাঁর অনুগামীরা।
ঝাড়গ্রাম জেলার বেলিয়াবেড়া ব্লক এলাকায় তৃণমূল প্রার্থী বিরবাহা সরেনের সমর্থনে প্রচার চালাচ্ছেন গোপীবল্লভপুর-২ (বেলিয়াবেড়া) ব্লক তৃণমূলের সভাপতি টিঙ্কু পাল ও তাঁর অনুগামীরা। দেওয়ালে লেখা হচ্ছে ‘ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহধন্য প্রার্থী বিরবাহা সরেনকে’ জোড়াফুল প্রতীকে ভোট দিন। পাশেই লেখা থাকছে,‘প্রচারে-টিঙ্কু পাল, ব্লক সভাপতি’। তৃণমূল অন্দরের খবর, মাস দেড়েক আগে কালীপদ সুরকে ব্লক সভাপতি থেকে সরিয়ে টিঙ্কু পালকে নতুন ব্লক সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার পর থেকেই দলের অন্দরে দু’গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষোভের চোরাস্রোত বইছে। এলাকার বুথগুলিতে তৃণমূল প্রার্থীর লিড থাকবে কি-না তা নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামকে সামনে রেখে শুরু করেছে প্রচার।
ব্লক সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পরে চলতি মাসের গোড়ায় একটি সাংগঠনিক সভা ডেকেছিলেন টিঙ্কু। ওই সভায় প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তথা বেলিয়াবেড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কালীপদ ও তাঁর গোষ্ঠীর কেউই যাননি। ২০১৫ সালে বেলিয়াবেড়া ব্লক তৃণমূলের তৎকালীন সভাপতি স্বপন পাত্রকে সরিয়ে কালীপদকে ব্লক সভাপতির দায়িত্ব দেন নেত্রী মমতা। ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে জিতে জেলা পরিষদ সদস্য হয়েছেন স্বপন। কালীপদ এ বার ভোটে জিতে হয়েছেন বেলিয়াবেড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি। কালীপদ গোষ্ঠীর সঙ্গে স্বপন গোষ্ঠীর আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক। স্বপন হলেন দলের জেলা চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদার অনুগামী। কালীপদ হলেন জেলায় সুকুমার বিরোধী গোষ্ঠীর লোক। দলের অন্দরের গুঞ্জন, সুকুমারের সুপারিশেই স্বপন-ঘনিষ্ঠ টিঙ্কু ব্লক সভাপতি হন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ঝাড়গ্রামে কোর কমিটির বৈঠকে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় দুই গোষ্ঠীকেই ধমক দিয়ে একযোগে কাজ করার নির্দেশ দেন। তারপরও গোষ্ঠী কোন্দল থামেনি।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ব্লক সভাপতি টিঙ্কু পাল বলেন, ‘‘আমাদের নেত্রী দলের প্রার্থী ঠিক করেছেন। তাই দলের জেলা নেতৃত্বের নির্দেশে দেওয়াল লিখনে নেত্রীর ‘স্নেহধন্য প্রার্থী’ লেখা হচ্ছে। আমি সবাইকে নিয়ে চলতে চাই।’’ কালীপদ সুর বলেন, ‘‘আমি নাকি বিজেপি-র সঙ্গে যোগাযোগ করছি বলে মনগড়া অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তবে আমি দলের একনিষ্ঠ তৃণমূলের কর্মী।’’ ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘ভোটের সময় মান-অভিমানের সময় নয়। দু’পক্ষকে আলোচনায় ডেকে সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হচ্ছি। প্রার্থীকে জেতাতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy