নাতনির সঙ্গে শিশির অধিকারী।
বয়স আশি ছুঁইছুঁই। তবে মানুষটার কাছে সেটা একটা সংখ্যা মাত্র। তাই এপ্রিলের গরমে লোকসভা ভোটের প্রচারে সদা ব্যস্ত তিনি। দলের কাঁথি কেন্দ্রের প্রার্থীর পাশাপাশি শাসকদল তৃণমূলের স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের অভিভাবকও এই প্রবীণ নেতা।
লোকসভা ভোটে ওই নেতা শিশির অধিকারীকে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করেছে তৃণমূল। গরমে সামান্য অসুস্থ বোধ করায় কয়েক দিন আগেই কলকাতায় চিকিৎসা করিয়েছেন বাড়ি ফিরেছেন। তবে পরিজনেরা জানাচ্ছেন, বাড়িতে বসিয়ে রাখার উপায় নেই তাঁকে। সাতসকালেই কাঁথির করকুলি মৌজার অধিকারী বাড়ি ‘শান্তি কুঞ্জে’ শুরু হয়ে যায় রান্নার তোড়জোড়। একান্নবর্তী পরিবারের রান্নার দায়িত্ব সামলান বাড়ির গৃহিণীরা। ঘুম থেকে উঠেই শিশিরবাবুর চান, এক কাপ চা আর বিস্কুট। খানিক বাদে আটার রুটি, তরকারি আর ডিমের সাদা অংশ দিয়ে প্রাতঃরাশ। তা শেষ হতে না হতেই বাড়িতে ভিড় জমান দলের নেতা-কর্মীরা।
শনিবার ‘শান্তি কুঞ্জে’ গিয়ে দেখা গেল, পটাশপুর, খেজুরি,ভগবানপুরের বেশ কয়েকজন দলীয় নেতাদের নিয়ে সাত সকালেই দফায় দফায় বৈঠক করছেন প্রার্থী। মধ্যাহ্নভোজে বসার আগে নিয়মিত রসুন খান শিশিরবাবু। এ দিও তার ব্যতিক্রম ছিল না। দুপুরে ১০০ গ্রাম ভাতের সঙ্গে ট্যাংরা আর ইলিশ মাছ। সঙ্গে একাধিক আনাজ তরকারী দিয়েই সারলেন দুপুরের আহার। শিশিরবাবু জানাচ্ছেন, পাতে কাবার যাই থাকুক না কেন, সঙ্গে বাটি ভর্তি টক দই থাকাটা আবশ্যিক।
খাওয়া-দাওয়া সেরে খানিকক্ষণ বিশ্রাম। তার পরে এ দিন বেরিয়ে পড়লেন শিশিরবাবু। গন্তব্য- রামনগর। সেখানের আরএসএ ময়দানে সভায় বক্তৃতা। তাতে উঠে এল দিঘা-সহ মন্দারমণি, তাজপুর এলাকার উন্নয়নের কথা। সন্ধ্যায় প্রার্থী হাজির হন পুরসভার দোতলায় নিজের অফিস ঘরে। সেখানে দলের কর্মীদের সঙ্গে আর এক প্রস্থ বৈঠক।
বয়সের ভার সয়েও কীভাবে শরীর ঠিক রাখেন? জবাবে শিশিরবাবু বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে বেরলেই মুড়ি, ছোলা ভাজা আর জলের বোতল রাখি। রাতে এক কাপ ভাত আর মাছের ঝোল দিয়ে খাই। খাওয়াদাওয়াটা ঠিক মতো করাটা আবশ্যক।’’
দীর্ঘদিন ধরে কাঁথির চেয়ারম্যান ছিলেন শিশির অধিকারী। পরে এগরা এবং কাঁথি বিধানসভা থেকে একাধিক বার বিধায়ক হন। এবারও লড়ছেন। তবে এই ‘লড়াই’টা কিছুটা হলেও কঠিন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। কারণ, গত দু’বছরে এলাকায় বিজেপির পালে কিছুটা হলেও হাওয়া লেগেছে। তাতে শঙ্কিত নন তৃণমূলের এই প্রবীণ প্রার্থী। নিজের ‘হ্যাট্রিকে’র ব্যাপারে আশাবাদী শিশিরবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘সারা বছর মানুষের সঙ্গে থাকি। মানুষের আশীর্বাদ আমিই পাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy