—ফাইল চিত্র।
সকাল ৭টায় ভোট শুরু হওয়ার কথা। সাড়ে ৬টাতেই কেশপুর গার্লস হাইস্কুলের বুথে চলে এসেছিলেন হাজরা খাতুন। তখনও ভোটকর্মীরা সব কিছু ঠিকঠাক গুছিয়ে উঠতে পারেননি। এত সকাল-সকাল ভোটের লাইনে যে? মধ্য তিরিশের হাজরা বলেছিলেন, ‘‘ভোট দেওয়ার আনন্দই আলাদা। তাই আর দেরি করিনি।’’
পরিসংখ্যান বলছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের দুই লোকসভা কেন্দ্র মেদিনীপুর এবং ঘাটালে ভোটদানের হারে পুরুষদের থেকে মহিলারাই এগিয়ে। দুই কেন্দ্রে গড়ে ভোটদানের হার ৮৩.১০ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮২.২৪ শতাংশ আর মহিলাদের ভোটদানের হার গড়ে ৮৪.৬৫ শতাংশ। দেখা যাচ্ছে, ঘাটালে পুরুষদের তুলনায় ৫.২৪ শতাংশ বেশি মহিলা ভোট দিয়েছেন। মেদিনীপুরে পুরুষদের তুলনায় মাত্র ০.৪২ শতাংশ কম মহিলা ভোট দিয়েছেন। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ঘাটাল লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটি কেন্দ্রতেই গড় ভোটের হারের থেকে মহিলাদের ভোটের হার বেশি। মেদিনীপুরের ক্ষেত্রে এই বিধানসভা কেন্দ্রের সংখ্যাটা চার।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মহিলারা ভোটদানে এগিয়ে আনতে নানাভাবে সচেতন করা হয়েছে। সে সবেরই ফল এটা।’’ প্রথম প্রচার শুরু হয়েছিল মহিলাদের ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য। তাঁরা যাতে ভোট দেন, পরে সে জন্যও নানাভাবে উৎসাহ দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, স্কুল-কলেজ, হাটে-বাজারে শিবির করে ভোটার তালিকায় নাম তুলতে মহিলাদের সচেতন করা হয়েছিল। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের মতে, একটা সময় সমাজ ব্যবস্থার কারণে মহিলাদের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হতো। কিন্তু এখন সেই প্রতিবন্ধকতা অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা গিয়েছে। অভিভাবকেরা মেয়েদের শিক্ষা ও স্বাধীনতায় গুরুত্ব দিচ্ছেন। মহিলারা সচেতন হয়ে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। স্কুল শিক্ষিকা মাধবী আদকেরও বক্তব্য, ‘‘মহিলারা চারপাশ সম্পর্কে আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন হয়েছেন।’’ অনেকের মতে, এ ব্যাপারে সোশ্যাল মিডিয়ার অবদান অনস্বীকার্য।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকেদের আবার ব্যাখ্যা, এখন মহিলাদের আর্থ-সামাজিক মানোন্নয়নে অনেক প্রকল্প হয়েছে। যেমন রাজ্যের ‘কন্যাশ্রী’, ‘রূপশ্রী’ প্রকল্প রয়েছে, তেমনই কেন্দ্রের রয়েছে ‘উজ্জ্বলা’, ‘জীবিকা’ প্রকল্প। রাজনৈতিক দলগুলিও মহিলাদের ভোটদান নিশ্চিত করতে অনেক বেশি সক্রিয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির মতে, ‘‘জেলার ভোটপর্বে মহিলাদের যোগদানের হার চমকপ্রদ।’’ একই মত বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy