এমন শাড়িতেই মজেছেন ক্রেতারা। — নিজস্ব চিত্র।
বদলেছে সময়। পাল্টে গিয়েছে পুজোর ফ্যাশনও। পুজোর সময় সকলের থেকে একটু আলাদা সাজতে কে না চায়! সকলের থেকে আলাদা সেরা শাড়ির খোঁজেই এ বার অনেকের ঝোঁক বুটিকের দিকে। কলকাতার সীমা ছাড়িয়ে মফস্সলেও এখন বাজার ধরছে বুটিক। মেদিনীপুর শহরে সায়ন্তী মণ্ডলের নিজের বুটিক রয়েছে। তাঁর কথায়, “অনেক নতুন ক্রেতা আসছেন। নতুন প্রজন্মের মধ্যে পোশাক নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে। শহরের মেয়েদের মধ্যে বুটিকের পোশাক নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।” সায়ন্তী বলছেন, “আসলে পুজোর সময় সকলেই চান, তিনি যে শাড়িটা পরবেন, সেটা যেন অন্যদের থেকে একটু আলাদা হয়। শাড়িতে যেন নতুনত্ব থাকে। যা ভিড়ের মধ্যেও অন্যদের নজর কাড়বে। নতুন নতুন কালেকশন থাকছে। ফলে, সহজেই বাজার ধরতে পারছে বুটিক।”
দেড়- তিন হাজারের মধ্যেই মিলছে ভাল ভাল শাড়ি। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, বেশি চলছে মঙ্গলগিরি, মধুবনি সিল্ক, মাধবীলতা প্রভৃতি। বেশির ভাগ ক্রেতারই পছন্দ হাল্কা রঙের শাড়ি। শাড়ির পাড়ে- আঁচলে নানা চেক্সও চলছে। বছরের অন্য সময় স্কার্ট, কুর্তা কিংবা জিন্স- টপের মতো পোশাক তো রয়েছেই। তবে পুজোর ক’টা দিন শাড়ি না- হলে চলে না! তাঁত, বালুচরী, তসরের মতো শাড়ি তো রয়েছেই। তবে পুজোর ‘ফ্যাশন ট্রেন্ড’টা আলাদা! মেদিনীপুরের শাড়ি বিক্রেতা গৌতম দাসের কথায়, “একটু অন্য রকম কাজ থাকলেই হল। এই সময় সাধারণ থেকে অতি- সাধারণ শাড়িও ‘ফ্যাশন ট্রেন্ড’- এর নামে নতুন আঙ্গিক পেয়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ কম দামের কাপড়ের সঙ্গে শুধু মিশে থাকছে সিল্ক বা ঘিচা নামের বিশেষ ধরনের সুতো। তাতেই ক্রেতাদের কাছে শাড়ি অন্য মাত্রা পেয়ে যাচ্ছে।” পুজোর কোন দিন কি পরবেন, তা অনেকেরই আগে থেকে ঠিক করা হয়ে যায়। সেই মতোই চলে কেনাকাটা। কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। হাল- ফ্যাশনের শাড়ির খোঁজে বাজারে ভিড় জমাচ্ছেন আঠেরো থেকে আটত্রিশ- সকলেই। একটা সময় কম বয়সী মেয়েরাই একটু বেশি ফ্যাশন সচেতন ছিলেন। এখন অবশ্য ছবিটা বদলে গিয়েছে। একটু অন্য রকম শাড়ির খোঁজ করছেন মায়েরাও।
মেদিনীপুরের গৃহবধূ বর্ণালী পালের কথায়, “বছরের অন্য সময় আর পুজোর সময় দু’টো এক হল! সময় পাল্টেছে। সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই হবে!” আসলে পুজো মানেই যেন স্পেশাল কিছু। সাজগোজ করে একের পর এক মণ্ডপে ঘুরে বেড়ানো। নানা সাজের প্রতিমা, আলোকসজ্জা দেখা। সঙ্গে নিজেকেও নতুন ভাবে চেনানো। পোশাকে যদি আধুনিকতার ছাপ না থাকে, নতুনত্বের ছোঁয়া না- থাকে, তাহলে অন্যের নজর কাড়া যাবে
কি করে!
শাড়ি বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, প্রতি বছরই নতুন ধরনের শাড়ি চান ক্রেতারা। এ বারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। প্রায় সকলেই নতুন কি এসেছে, তার খোঁজ করছেন। তাঁতের সঙ্গে সিল্ক বা তসরের সুতো মিশিয়ে হ্যান্ডলুমের বিভিন্ন শাড়ির চাহিদাও রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। বুটিকের ক্ষেত্রে চাহিদা রয়েছে পাটলি পাল্লু, মঙ্গলঘট, মাইসোরি সিল্ক প্রভৃতিরও। ব্রোকেডের সঙ্গে ঘিচা স্টিচের উপর এমব্রয়ডারি বা ব্রোকেডের সঙ্গে সাউথ সিল্কের উপর স্টোন ওয়ার্কেরও চাহিদা রয়েছে। পাশাপাশি, গতানুগতিক শাড়ির উপর হাল্কা সুতোর কাজ থাকলে সেই শাড়িও আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। অনেকের ঝোঁক আবার পশ্চিমী ধাঁচের পোশাকের দিকেও। শাড়ির ব্যাপারে বরাবরই একটু খুঁতখুঁতে অনামিকা দাস। মেদিনীপুরের বাসিন্দা অনামিকার কথায়, “পুজোর সময় কি শাড়ি পরব, ঠিক করেই নিয়েছি। পুজোর দিনগুলোয় সকালে হাল্কা রঙের শাড়ি পরব। রাতে সিল্ক পরব। সিল্কের শাড়ির রংটা একটু
জমকালো হবে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy