চলছে ম্যাজিক শো। নিজস্ব চিত্র।
হাটে কেনাকাটা করতে এসে চমকে গেলেন চমকাইতলার প্রৌঢ় আলাউল্লা খাঁন। আলাউল্লার মতো উদয় ঘোষ, মর্জিনা বিবিরাও অবাক চোখে তাকিয়ে থাকেন জোব্বা পরা জাদুকরের দিকে। বুধবার সকালে গড়বেতা-১ ব্লকের সন্ধিপুরের সোভাগড় হাটে তখন ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। ‘ছোট কামড়, বড় বিপদ’-এর বার্তা নিয়ে তখন হাটে ম্যাজিক কাঠি নিয়ে হাজির স্বাস্থ্য দফতরের জাদুকর বৈদ্যনাথ ঘোষ।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে এনসেফ্যালাইটিস রোধে বুধবার থেকে বয়স্কদের (১৬-৬৬ বছর) সবাইকে টিকা দেওয়ার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রথম পর্যায়ে সবং, পিংলা, গড়বেতা-১ ও কেশপুর এই চারটি ব্লকের ১৫১ টি টিকাকরণ কেন্দ্রে এই কর্মসূচি চলবে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের বয়স্কদের একাংশ এখনও টিকা নিতে ভয় পান। সচেতনতার অভাবও রয়েছে। ফলে, আমজনতাকে সচেতন করতে ম্যাজিককে হাতিয়ার করেছে স্বাস্থ্য দফতর। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “টিকা করণের পাশাপাশি, সাধারণ মানুষজনকে সচেতন করতে ম্যাজিক প্রদর্শনীরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভাল সাড়া পাওয়া গিয়েছে।’’
এ দিন সন্ধিপুরের হাটে জাদুকরের ছড়া, ‘মশাবাহিত রোগ, বাড়ায় দুর্ভোগ/ টিকা নিতে দলে দলে, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসুন সকলে।’ তারপর বৈদ্যনাথবাবু জানিয়ে দেন, এ দিন থেকে থেকে বিনামূল্যে চারটি ব্লকের বিভিন্ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র গুলিতে বয়স্কদের টিকা দেওয়া হচ্ছে! চমকাইতলার পেশায় চাষি আলাউল্লা জানালেন, টিকা নিতে তাঁর ভয় করে। জাদুকরের জবাব, “আপনি তো ঘরের কর্তা। অসুখের জেরে আপনার কোনও অঘটন ঘটলে তখন তো সংসারটা ভেসে যাবে।” এরপরই খালি ডিবে থেকে ম্যাজিক করে মশারি বের করে জাদুকর বলে ওঠেন, “টিকা তো নেবেন, সাথে মশারি টাঙিয়ে ঘুমোবেন/ এক জনের এই রোগ হলে/ অসুস্থ হতে পারে আরও সকলে।”
খালি কলসি ফের উপুড় করতেই ম্যাজিকের কৌশলে ঝর ঝর করে জল বেরোতে দেখে দর্শকদের প্রবল হাততালি। জাদুকর জানালেন, এভাবেই জমা জল নিয়মিত ফেলে দিতে হবে। নিয়মিত নর্দমা পরিষ্কার করতে হবে। দিনে রাতে মশারির মধ্যে ঘুমোতে হবে। শুয়োর, পাখি গৃহপালিত প্রাণীর খোঁয়াড় বাড়ি থেকে দূরে করতে হবে। জ্বর বা শারীরিক সমস্যা হলে দেরী না করে নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে। হাত-পা ঢাকা পোষাক পরতে হবে। জেলার ঝাড়গ্রাম মহকুমায় ম্যালেরিয়া-সহ মশাবাহিত রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy