অচৈতন্য: আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করছে পুলিশ। শনিবার তমলুকের কাছে মথুরী গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
ছেলেধরা সন্দেহে গণপ্রহারে মালদহে সম্প্রতি এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। সেই ঘটনার ছায়া তমলুকেও!
শনিবার সকালে তমলুক থানার ধলহরা এলাকার মথুরী গ্রামে এক যুবককে ছেলেধরা সন্দেহে প্রবল মারধর করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই যুবক আপাতত তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, তমলুক শহর থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে মথুরী গ্রামের উত্তর পাড়ায় এদিন সকালে সাইকেল যাচ্ছিলেন এক যুবক। অভিযোগ, তিনি একটি বাড়ির সামনে খেলা করা এক শিশুকে সাইকেলে তোলার চেষ্টা করেন। এরপরেই স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে ধরে ফেলেন এবং স্থানীয় ক্লাব ঘরে আটকে রাখেন। পরে গ্রামবাসীদেরই একাংশ ওই যুবককে বাইরে এনে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। ঘটনার পরেই গ্রামে যায় তমলুকের এসডিপিও, ওসি-সহ পুলিশবাহিনী। তারা জানিয়েছে, সাইকেল আরোহী ওই যুবকের পরিচয় জানার জন্য চেষ্টা হচ্ছে। আপাতত তাঁকে জেলা হাসপাতালের সিসিইউ’য়ে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের হোগলা গ্রামে দুই ব্যক্তিকে আটকে রেখেছিলেন গ্রামের বাসিন্দারা। তমলুক থানার পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেছিল। পুলিশ জানায়, হিন্দিভাষী ওই দুই ব্যক্তি গ্রামে ভিক্ষা করতে গিয়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন তাঁদের ছেলেধরা সন্দেহে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে আটকে রেখেছিলেন। পুলিশ জানায়, স্রেফ সন্দেহের বশেই তাঁরা ওই দু’জনকে আটকে রেখেছিলেন। পুলিশকে কোনও অভিযোগও জানাননি।
পুলিশের দাবি, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ঘটনার ছবি দেওয়ায় গোটা এলাকায় ছেলেধরার গুজব ছড়িয়েছে। ফলে বহিরাগত লোকজন দেখলেই ছেলেধরা সন্দেহে আটকে রাখার ঘটনা বাড়ছে। আর শুধু সন্দেহের বশেই এটা করা হচ্ছে। গুজবের জেরেই কাঁথির মারিশদা এলাকাতেও কয়েকদিন আগে ছেলেধরা সন্দেহে তিন মহিলাকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল।
তমলুকের হোগলা এবং মথুরী, দু’টি গ্রামেই হাইস্কুল রয়েছে। এলাকায় শিক্ষার হারও যথেষ্ট ভাল। তা সত্ত্বেও তমলুক শহর লাগোয়া ওই এলাকায় শনিবারের ঘটনায় বিস্মিত পুলিশ। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে তদন্ত করা হচ্ছে। তবে পুলিশের বক্তব্য, হোগলার ঘটনার পরে যে গুজব ছড়িয়েছে, তার মোকাবিলায় স্থানীয় বাসিন্দাদের বোঝানো হয়েছিল। এলাকার বাসিন্দাদের সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে। তবে স্থানীয়দের মধ্যে গুজবের রেশ যে কাটেনি, হোগলা গ্রাম থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মথুরী গ্রামের ঘটনা তার প্রমাণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy