Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বৃষ্টিতে নষ্ট বোরো ধানের চাষ, সঙ্কট

যখন মাঠের পাকা ধান ঘরে তোলার সময়, তখনই বাধ সেধেছে প্রকৃতি। বৃষ্টির জলে নষ্ট হয়ে বোরো চাষ। পশ্চিম মেদিনীপুরে এ বার প্রায় ১ লক্ষ ৯১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। কৃষি দফতরের এক সূত্রে খবর, এর মধ্যে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমির চাষ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাহায্য দাঁড়ানোর চেষ্টা চলছে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৫ ০০:০১
Share: Save:

যখন মাঠের পাকা ধান ঘরে তোলার সময়, তখনই বাধ সেধেছে প্রকৃতি। বৃষ্টির জলে নষ্ট হয়ে বোরো চাষ। পশ্চিম মেদিনীপুরে এ বার প্রায় ১ লক্ষ ৯১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। কৃষি দফতরের এক সূত্রে খবর, এর মধ্যে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমির চাষ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাহায্য দাঁড়ানোর চেষ্টা চলছে।”

সাধারণত, এপ্রিলের মাঝামাঝি ধান কেটে গোলায় মজুত করা হয়। এ বার সেই সময়ই দফায় দফায় বৃষ্টিতে খেতে জল জমে ফসল নষ্ট হয়েছে। জেলায় এ বার সব থেকে বেশি বোরো চাষ হয়েছিল ডেবরায়, প্রায় ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে। সবংয়ে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার হেক্টর, নারায়ণগড়ে প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার হেক্টর, পিংলায় প্রায় সাড়ে ১১ হাজার হেক্টর, খড়্গপুর-২ ব্লকে প্রায় ১২ হাজার হেক্টর, দাঁতন-২ ব্লকে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার হেক্টর, কেশপুরে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “ক্ষয়ক্ষতির হিসেব চলছে। বিভিন্ন ব্লক থেকে চূড়ান্ত রিপোর্ট আসতে শুরু করেছে। কিছু ব্লকে ৩০ শতাংশের বেশি ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলেও খবর।”

৩৩ শতাংশের বেশি ফসলের ক্ষতি হলে সংশ্লিষ্ট এলাকা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে বলে ঘোষণা করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ক্ষতিপূরণ পান। এপ্রিলের গোড়ার শিলাবৃষ্টিতে নারায়ণগড়, দাঁতন-১ এবং কেশিয়াড়ি ব্লকের ২০৭টি মৌজা বিপর্যস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। ফেব্রুয়ারির শিলাবৃষ্টিতেও গড়বেতা-১ এবং গড়বেতা-৩ এই দু’টি ব্লকের ২৩৪টি মৌজায় ফসলের ক্ষতি হয়েছিল। গড়বেতা-১ ব্লকের ৭১টিও গড়বেতা ৩-এর ১৬৩টি মৌজা মৌজা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

কৃষি দফতর সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজার ফর্ম ছাপিয়ে ব্লকে ব্লকে পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা তা পূরণ করে কৃষি দফতরে জমা দেবেন। জানাবেন কত পরিমাণ জমির ফসল বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। জেলায় এ বার ‘রেকর্ড’ পরিমাণ জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। এর আগে সব থেকে বেশি জমিতে বোরো চাষ হয় ২০০৯ সালে, প্রায় ১ লক্ষ ৫৩ হাজার হেক্টরে। এ বার তা ছাপিয়ে গিয়েছিল। জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিকের আক্ষেপ, “বৃষ্টিতে ক্ষতি না হলে হেক্টর পিছু গড় ফলন যদি ৪০ কুইন্টাল হত, তাহলে অন্তত ৭ লক্ষ ৬৪ হাজার মেট্রিন টন ধান উত্‌পাদন হত।” কেশপুরের চাষি স্বপন বেরা, শালবনির চাষি তপন দাসেদের চিন্তা, “কী করে ঋণ শোধ করব, তাই বুঝে উঠতে পারছি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE