রাত পোহালেই লক্ষ্মীপুজো। মেদিনীপুর শহরে ফলের দোকানে বিকিকিনি। নিজস্ব চিত্র
রাত পোহালেই কোজাগরী পূর্ণিমা। ঘরে ঘরে লক্ষ্মীর আরাধনা। শুরু হয়েছে পুজোর প্রস্তুতি। আর বাজারে গিয়েই আম বাঙালি টের পাচ্ছেন ধনদাত্রীর আরাধনায় হাত পুড়তে বাধ্য!
সোমবার দুপুরে মেদিনীপুর শহরের এলআইসি মোড়ে ফল কিনতে এসেছিলেন গোপা জানা। ফলের দাম শুনে তাঁর চোখ কপালে ওঠে। তাঁর কথায়, ‘‘এক পিস নারকেলের দামই যদি ৩০-৩৫ টাকা হয় তাহলে তো সমস্যা। পুজোর বাকি বাজার করব কী করে!’’
ঝাড়গ্রাম শহরেও ফলের বাজার আগুন। সাধারণ মাপের নারকেল বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা প্রতি পিস। আখ প্রতি পিস ১০ টাকা, শাঁখালু ও রাঙালু ৬০-৮০ টাকা কিলো দরে বিকোচ্ছে, পুজোর চাঁপা কলা ৪০ টাকা ডজন। লক্ষ্মীপুজোর খিচুড়ি ভোগের সঙ্গে পাঁচমিশালি আনাজের তরকারি দেওয়ার প্রথা রয়েছে। কিন্তু আনাজের দামও চড়া। বাঁধাকপি ৩০ টাকা কেজি, ফুলকপি প্রতি পিস ২৫ টাকা, টোম্যাটো কেজি ৩০ টাকা।
শুধু ঝাড়গ্রাম শহরের জুবিলি মার্কেট নয়, গিধনি, জামবনি, লালগড়, বেলপাহাড়ি, নয়াগ্রাম, রোহিণী, গোপীবল্লভপুর, বেলিয়াবেড়া-সহ জেলার সর্বত্রই ফল ও আনাজের দাম চড়চড়িয়ে বেড়েছে। আরও দাম বাড়ার আশঙ্কায় অনেকে রবি ও সোমবার আগাম বাজার সেরে রেখেছেন। ঝাড়গ্রাম শহরের বাসিন্দা পেশায় স্কুল শিক্ষিকা সুতপা চক্রবর্তী বলেন, “ফল ও আনাজ বাজারে আগুন দাম। হাতই দেওয়া যাচ্ছে না। এবার নমো নমো করে পুজো সারব। রবিবার বাজার করে নিয়েছি।”
মেদিনীপুরের ফল ব্যবসায়ী রণজিৎ বিশ্বাসের কথায়, ‘‘পুজোর সময় ফলের দাম খানিক বাড়েই। আসলে এই সময় চাহিদা থাকে তো তাই। আমাদেরও বেশি দামে ফল আনতে হয়।’’ একমত সুদেব দাস, দীপক দাসের মতো ফল ব্যবসায়ীদের। ঝাড়গ্রাম জেলায় আনাজের বেশ কিছুটা ঝাড়খণ্ড রাজ্যে রফতানি করা হয়। পুজোর মরসুমে দাম তাই আরও বড়ে যায়।
খড়্গপুরেও কোজাগরী লক্ষ্মী আরাধনার আয়োজনে বাজারে গিয়ে হাত পুড়ছে মধ্যবিত্তের। সোমবার থেকেই খড়্গপুরের গোলবাজার, খরিদা, ইন্দা, কৌশল্যা, তালবাগিচা বাজারে চড়া দামে বিকিয়েছে আনাজ ও ফল। আজ, মঙ্গলবার শেষবেলার বাজারে দর আরও চড়বে বলে আশঙ্কা। এ দিনই সকালে লক্ষ্মী পুজোর বাজার সেরেছেন ইন্দার বাসিন্দা অন্তরা আচার্য। তিনি বলেন, “প্রতিবছরের মতো এ বারও লক্ষ্মী পুজোর বাজার আগুন। বিশেষ করে ফলের বাজারে তো হাত দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু পুজোর বাজার তো আর কাটছাঁট করা যায় না। তাই দাম বেশি হলেও নিতে হল।”
লক্ষ্মীলাভের আশায় যাঁরা পুজোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের নাকাল দশা প্রতিমা কিনতে গিয়েও। ছাঁচের ছোট প্রতিমার দাম ৭০-৮০ টাকা, মাঝারি মাপের প্রতিমা বিকোচ্ছে ১৩০-১৫০ টাকায়। আর খানিক বড় মাপের লক্ষ্মী প্রতিমার দাম ২০০ টাকার আশপাশে। এখন অনেকেই ছাঁচের প্রতিমা কিনে নিয়ে গিয়ে পুজো করেন। মেদিনীপুরের বেশ কয়েকটি এলাকায় প্রতিমা বিক্রি হচ্ছে। সেখানে ভিড়ও জমছে। খানিক দরদাম করেই প্রতিমা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy