Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
বদলির ‘শাস্তি’ শিক্ষিকাকে

ভুয়ো ছাত্রে চাল-টাকা ‘আত্মসাৎ’

চম্পা কর্মকার নামে ওই শিক্ষিকা ১৯৯৩ সালে চন্দ্রকোনা শহরের অতসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই স্কুলে মিড-ডে মিল এবং ছাত্র-ছাত্রীদের পোশাক বিলির ক্ষেত্রে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। 

চম্পা কর্মকার। নিজস্ব চিত্র

চম্পা কর্মকার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
চন্দ্রকোনা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৮ ০১:৩৩
Share: Save:

দুর্নীতির অভিযোগেই বদলি হতে হয়েছিল। নতুন স্কুলে যোগ দেওয়ার পরেও সেই শিক্ষিকা আবার কাঠগড়া। এ বার অভিযোগ মিড-ডে মিলের চাল ও টাকার হিসাবে গরমিলের। আর তার জেরে দ্বিতীয় বার বদলির খাঁড়া নেমেছে ওই শিক্ষিকার ওপর। তদন্তও শুরু করেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতর।

চম্পা কর্মকার নামে ওই শিক্ষিকা ১৯৯৩ সালে চন্দ্রকোনা শহরের অতসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই স্কুলে মিড-ডে মিল এবং ছাত্র-ছাত্রীদের পোশাক বিলির ক্ষেত্রে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।

বরাদ্দ টাকা নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পরিবর্তে তিনি নিজের অ্যাকাউন্টে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার তদন্তের পরে বছর খানেক আগে চম্পাকে চন্দ্রকোনারই মহেশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়েছিল। সেখানেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে সংশ্লিষ্ট স্কুল শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।

ঠিক কেমন অভিযোগ?

চন্দ্রকোনা-২ অবর বিদ্যালয় দফতর এবং ওই ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, মহেশপুর স্কুলে দিনের পর দিন ভুয়ো ছাত্র সংখ্যা দেখিয়ে বাড়তি চাল ও টাকা নিচ্ছিলেন ওই শিক্ষিকা এবং সেই টাকা এবং চাল বিক্রির টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন বলে অভিযোগ। মাস তিনেক আগে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক এবং স্থানীয়েরা বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনেন।

চম্পাকে স্কুলে যেতে নিষেধ করে ব্লকের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে হাজিরা দিতে নির্দেশ দেন কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে ওই শিক্ষিকাকে স্থানীয় ঘোষকিরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্লকের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সৌমেন দে। চন্দ্রকোনা ২-এর বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়িও জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

নিয়মানুযায়ী, মিড-ডে মিলের যাবতীয় তথ্য প্রতি মাসে সংশ্লিষ্ট ব্লক অফিসে জমা দিতে হয়। ছাত্র সংখ্যার অনুপাতে বরাদ্দ হয় চাল। ব্লক অফিসে জমা পড়ার পর সেই সব তথ্য খতিয়ে দেখে বরাদ্দ হয় চাল ও টাকা। এই প্রকল্প ব্লক অফিস থেকেই দেখভাল করা হয়। মহেশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বললেন, “স্কুলে যা ছাত্র সংখ্যা তার থেকে প্রায় একশো ছাত্র বেশি দেখিয়ে ওই শিক্ষিকা চাল এবং টাকা আত্মসাৎ করতেন।” একই সুরে স্থানীয় ভগবন্তপুর-২ পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান ইসমাইল খানের বক্তব্য, “ওই শিক্ষিকা স্কুলের নির্দিষ্ট ছাত্রের থেকে বেশি ছাত্র দেখিয়ে মিড-ডে মিলের চাল এবং টাকা তুলছিলেন। তাছাড়া স্কুলে সময়ে আসতেন না, ঠিকঠাক ক্লাসও করতেন না।”

যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কী বলছেন?

পক্ষান্তরে অভিযোগ স্বীকার করে চম্পার বলছেন, “আমি চাল চুরি করিনি বললে কি রেহাই পাব? বিডিও সাহেব তো তদন্ত করছেন।” পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি নারায়ণ সাঁতরা জানিয়েছেন, বিডিও এবং এসআই-য়ের তদন্ত রিপোর্ট হাতে এলেই ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Teacher Student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE