Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বাড়ির সামনেই হেনস্থার মুখে তৃণমূল বিধায়ক

বিধানসভা অধিবেশনে যোগ দিতে যাওয়ার পথে সোমবার হেনস্থার মুখে পড়লেন ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই।

বিক্ষোভের মুখে ঘাটালের বিধায়ক। নিজস্ব চিত্র

বিক্ষোভের মুখে ঘাটালের বিধায়ক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০১:২১
Share: Save:

বিধানসভা অধিবেশনে যোগ দিতে যাওয়ার পথে সোমবার হেনস্থার মুখে পড়লেন ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই।

শুধু হেনস্থাই নয়। বিধায়কের বাড়ির পাশের বুথের বাসিন্দাদের একাংশ দু’দফায় পথ অবরোধও করলেন। একবার বিধায়ক সভায় যোগ দিতে চলে যাওয়ার আগে। আরেকবার বিধায়কের বাড়িতে উন্নয়ন বৈঠকে যোগ দিয়ে ফেরার পর। এ দিন সকালে গোলমালের সূত্রপাত সেখানেই। বিধায়ক থাকেন ব্লকের মোহনপুর পঞ্চায়েতের মূলগ্রামে। সেখানেই বাড়ি তাঁর। খোদ বিধায়কের অঞ্চলে নাকি যথেষ্ট উন্নয়ন হয়নি— দীর্ঘদিন ধরে উঠছিল এমন অভিযোগ। শিমুলিয়া বুথ নিয়েই অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। এ দিন শিমুলিয়া সংসদের পঞ্চায়েত সদস্য শেখ আব্দুস সালাম সহ জনা চল্লিশেক তৃণমূল কর্মী এলাকার রাস্তা-পানীয় জল সহ সাবির্ক উন্নয়নের দাবি-দাওয়া নিয়ে বিধায়কের বাড়ি গিয়েছিলেন। অভিযোগ, শিমুলিয়া গ্রামে কিছুই উন্নয়ন হয়নি, আলোচনায় একথা শোনার পরই আব্দুস ও তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে বিধায়ক ঘনিষ্ঠদের তর্কাতর্কি শুরু হয়। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য শেখ আব্দুসের অভিযোগ, “তর্কাতর্কির সময় আচমকাই বিধায়কের এক আত্মীয় সন্তোষ দেয়াশি-সহ অন্যরা মারধর শুরু করে। তখনই আমরা গ্রামে ফিরে আসি।” বিধায়কের অনুগামীদের হেনস্থার প্রতিবাদে শিমুলিয়া-দেয়াশি পাড়া রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছয়। একসময় পরিস্থিতি থিতিয়ে যায়।

মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সন্তোষ। তিনি বলেন, ‘‘ওরা গালিগালাজ করছিল। পরিবেশ নষ্ট করছিল। প্রতিবাদ করেছি। মারধর করা হয়নি।’’ আর বিধায়ক বলছেন, ‘‘সকলেই আমাদের দলের কর্মী। একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে মিটিয় দেব।” মারধর প্রসঙ্গে শঙ্করের মন্তব্য, “আলোচনার সময় কথা কাটাকাটি হয়েছিল। মারধর কেন হবে। এমনটা কখনও আমার বাড়িতে হয়নি।”

অবরোধ মিটে যাওয়ার পর শিমুলিয়া-দেয়াশি পাড়া রাস্তা দিয়েই অধিবেশনে যোগ দিতে বিধানসভায় যাচ্ছিলেন শঙ্কর। পুলিশি ঘেরাটোপে বিধায়ককে ওই রাস্তা পার করিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ এলাকার লোকজনদের সঙ্গে কথা বলতে গাড়ি থেকে নামেন বিধায়ক। অভিযোগ, তখনই ফের উত্তেজনা ছড়ায়। উন্নয়নে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে বিধায়ককে ঘিরে ধরেন দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। জড়ো হন গ্রামবাসীরাও। বিধায়ককে লক্ষ করে গ্রামের কেউ কেউ গালিগালাজ-কটূক্তিও করেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিধায়ক এলাকা ছাড়েন। এরপরই ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়ক অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। সপ্তাহের প্রথম দিনে মূল সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ। আধঘণ্টা পর ঘাটাল থানার ওসি দেবাংশু ভৌমিক পুলিশ বাহিনী নিয়ে গিয়ে অবরোধ তুলে দেন।

শিমুলিয়ার গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, উন্নয়ন নিয়ে পক্ষপাতিত্বের জেরে এলাকাটি পিছিয়ে পড়ছে। শিমুলিয়া-দেয়াশি পাড়া এবং মির্জানগর ও খাঁ পাড়ার রাস্তার হাল খুবই খারাপ। টাকা বরাদ্দের পরেও কাজ শুরু হয়নি। পানীয় জলের বন্দোবস্ত করা হয়নি। এ ব্যাপারে ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সমিতির সহ-সভাপতি দিলীপ মাঝি বলেন, “উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনও পক্ষপাতিত্ব হয়নি। সমস্যা থাকলে তা মিটিয়ে ফেলা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE