Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Construction

কাজ শেষের আগেই টাকা ঠিকাদারকে

কাজ শেষের আগেই টাকা দিয়ে দেওয়ার কথা মেনে নিয়েছেন ঘাটাল পুরসভার  প্রশাসক বিভাস ঘোষ।

এই রাস্তার কাজ ঘিরেই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

এই রাস্তার কাজ ঘিরেই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২০ ০৫:৩৩
Share: Save:

কাজ শেষ হওয়ার আগেই ঠিকাদারকে পুরো টাকা মিটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ঘাটাল পুরসভার বিরুদ্ধে।

একটি সার্কিট বাঁধ সংস্কারের কাজ নিয়েই ওই অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার মেদিনীপুরে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ সাংবাদিক সম্মেলনে এই বিষয়টি তুলে সরব হন। তারপরেই শোরগোল পড়ে ঘাটাল শহরে। তবে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ বা পুর দফতরে এই নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। শুক্রবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, ‘‘কোনও কাজই হল না অথচ পুরো টাকা ঠিকাদারকে পাইয়ে দেওয়া হল। জনগণের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। শুধু দুর্নীতি নয়,এটা অপরাধ।” শনিবার এই ঘটনার বিহিত চেয়ে শহরে পোস্টার সাঁটিয়েছে সিপিএম-ও।

কাজ শেষের আগেই টাকা দিয়ে দেওয়ার কথা মেনে নিয়েছেন ঘাটাল পুরসভার প্রশাসক বিভাস ঘোষ। তবে তাঁর দাবি, “কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে একশো শতাংশ শেষ হয়নি। কিন্তু পুরো টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে।” টাকা পাওয়ার কথা মেনেছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কানাই সামন্তও। তিনি বলেন, “আমার অ্যাকাউন্টে টাকা এসেছে। তবে বাকি কাজ চলছে।”

এমনটা কেন হল? পুর প্রশাসক বিভাসের দাবি, অর্থবর্ষের শেষে টাকা এসেছিল। খরচ না হলে সেই টাকা ফেরত চলে যেত। তাই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ঘাটাল পুরসভা সূত্রে খবর, পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ময়রাপুকুর থেকে সিংহপুর পর্যন্ত টানা ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সার্কিট বাঁধ রয়েছে। ব্রিটিশ আমলের ওই বাঁধ বিভিন্ন বন্যায় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ২০১৬ সালে তৃণমূল পরিচালিত ঘাটাল পুরসভা ওই বাঁধ সংস্কার ও বাঁধের উপর মোরাম রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেয়। কাজের জন্য মোট খরচ ধরা হয় ৩ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা। ২০১৮ সালে সেই কাজের প্রশাসনিক অনুমতি হাতে পায় পুরসভা। টাকা বরাদ্দ হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে।

নিয়ম অনুযায়ী, টাকা বরাদ্দের পরেই কাজ শুরু হওয়ার কথা। এ ক্ষেত্রে সেই নিয়মও মানা হয়নি বলে অভিযোগ। কারণ পুরসভা সূত্রে খবর, টাকা বরাদ্দের আগেই ওই বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। যা বেআইনি। ওই সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি এই প্রকল্পের টাকা হাতে পায় পুরসভা। অর্ধেক কাজ তার আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। টাকা পাওয়ার পরে আগে হয়ে যাওয়া কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে ১ কোটি ৮৬ লক্ষ দেয় পুরসভা। ওই প্রকল্পে মোট বরাদ্দের বাকি ১ কোটি ১৭ লক্ষ পুরসভার অ্যাকাউন্টে জমা ছিল। কাজ পুরো শেষ হওয়ার আগে সেই টাকাও মিটিয়ে দেয় পুর কর্তৃপক্ষ।

এই ঘটনা জানাজানি হতে অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল । ঘাটাল শহর তৃণমূল সভাপতি অরুণ মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রকল্পের কাজ নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। তবে টাকা দেওয়া নিয়ম মেনে করা হয়নি। পদ্ধতিগত ভুল রয়েছে। কেন এমনটা হল, দল খোঁজ নেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Construction BJP Midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE