Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

শব্দবাজির সুপ্রিম নির্দেশ জানেই না অনেকে

মেদিনীপুরের এক পুলিশ কর্তার কাছে জেলার এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানতে চেয়েছিলেন, নিষিদ্ধ শব্দবাজির রুখতে ঠিকঠাক অভিযান চলছে কি না। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই আধিকারিককে আশ্বস্ত করেছিলেন মেদিনীপুরের ওই পুলিশ কর্তা।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:২০
Share: Save:

সপ্তাহখানেক আগের কথা। মেদিনীপুরের এক পুলিশ কর্তার কাছে জেলার এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানতে চেয়েছিলেন, নিষিদ্ধ শব্দবাজির রুখতে ঠিকঠাক অভিযান চলছে কি না। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই আধিকারিককে আশ্বস্ত করেছিলেন মেদিনীপুরের ওই পুলিশ কর্তা। জানিয়েছিলেন, পুলিশ নজদারিতে শহরে এ বার সে ভাবে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ঢুকতে পারেনি।

কিন্তু সেই আশ্বাসের উল্টো ছবি সামনে এলে কালীপুজোর রাতে। মেদিনীপুর শহরের পুরনো পাড়াগুলিতে বাজির দাপট ছিল লক্ষ্যণীয়। বাজি ফেটেছে কোতোয়ালি থানা সংলগ্ন এলাকাতেও। যা প্রসঙ্গে থানার এক পুলিশ কর্মীর মন্তব্য, ‘‘ওটা এমন কিছু নয়! দু’চারটে পটকা ফেটেছে। তাতে কারও অসুবিধা হয়নি! হলে নিশ্চয় অভিযোগ আসত!’’

স্থানীয়দের অবশ্য অভিযোগ, রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বাজি ফাটানো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের তেমন প্রভাব দেখা যায়নি শহরে। মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত শব্দবাজি তো ফাটানো হয়েছেই, উপরন্তু বুধবার সকালেও ফেটেছে দেদার বাজি। মেদিনীপুরের এক বাসিন্দা সমর দাসের কথায়, ‘‘বুধবার ভোরের দিকে বৃষ্টি হল বলে বাঁচোয়া। না হলে মঙ্গল রাতে তো ঘুমোতেই পারছিলাম না! বাজির শব্দে কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছিল।’’

জেলা পুলিশের অবশ্য দাবি, গত কয়েকদিনে বাজি প্রস্তুতকারক এলাকায় দফায় দফায় অভিযান হয়েছে। ফলে এ বার বাজির দাপট তেমন ছিল না। জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ারও দাবি, ‘‘শব্দবাজির বিরুদ্ধে আগে থেকেই অভিযান হয়েছে।’’ জেলা পুলিশের অন্য এক কর্তার কথায়, ‘‘বাজি যে একেবারেই ফাটেনি তা বলছি না। তবে দাপট অনেক কমেছে। লাগাতার অভিযানের ফলেই দাপট কমেছে।’’

আবার, গোয়ালতোড়, গড়বেতা, চন্দ্রকোনা রোড-সহ সংলগ্ন এলাকাতে ডিজের দাপট নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও শব্দবাজির দাপট রোখা যায়নি বলে অভিযোগ। সে সব এলাকাতেও প্রশাসনের নজরদারি এড়িয়ে রাত ১০টার পরই ফেটেছে বাজি। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয়ে যায় বাজি ফাটানো। এবার অমাবস্যা তিথি রাতে পড়ায় অধিকাংশ পুজোই শেষ হয়েছে রাত ১০টার অনেক পরে। স্বভাবতই আদালতের বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের বহু পরেও বাজিও ফেটেছে হলে অভিযোগ।

আবার, শীর্ষ আদালত যে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়েছে, সে কথা জানতেনই না অনেকে। হুমগড়ের অমরেন্দ্র ঘোষ, নয়াবসতের দীপক মণ্ডলের কথায়, ‘‘রাত ১০টার পর বাজি ফাটানো নিষিদ্ধ বলে এই প্রথম শুনছি। এ নিয়ে আরও প্রচারের দরকার ছিল।’’ যদিও পুলিশের দাবি, ‘‘প্রচার করা হয়েছিল। পাশাপাশি, নজরদারিও ছিল। তাই বাজির দাপট কম।’’

শব্দবাজির দাপটের একই ছবি দেখা গিয়েছে খড়্গপুরে। অভিযোগ, শহরের সুভাষপল্লি, ভবানীপুর, সোনামুখী, তালবাগিচা, মালঞ্চ, খরিদা, কৌশল্যা, সাঁজোয়াল, নিমপুরা এলাকায় দেদার ফেটেছে চকোলেট বোমা, শটসে্‌র মতো নিষিদ্ধ শব্দবাজি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Environment Fire Crackers Supreme Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE