Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে কাটমানি পোস্টার

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নারায়ণগড়ের বাখরাবাদ পঞ্চায়েতের খালিনা বুথে আবাস যোজনার ২৪ জন উপভোক্তার কেউই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাননি বলে অভিযোগ।

সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নারায়ণগড় শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০২:০৭
Share: Save:

কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলে এ বার পোস্টার পড়ল বিজেপির দুই নেতার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে সেই পোস্টার দেখা যায় নারায়ণগড়ের বাখরাবাদে। তবে পোস্টার কারা দিয়েছেন সেটা লেখা নেই। বিজেপির দাবি, এটা তৃণমূলের চক্রান্ত। তৃণমূল বলছে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দলের জন্যই এই ঘটনা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নারায়ণগড়ের বাখরাবাদ পঞ্চায়েতের খালিনা বুথে আবাস যোজনার ২৪ জন উপভোক্তার কেউই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাননি বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েতের আগের বোর্ডের সময়ে ওই উপভোক্তাদের নাম পাঠানো হয়েছিল। তখন ওই বুথের পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন তৃণমূলের সুশান্ত ধল। তিনি অবশ্য ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়াননি। তবে যেহেতু এই আবাস যোজনার তালিকা তাঁর সময়ে পাঠানো হয়েছিল তাই উপভোক্তাদের একাংশ দ্বিতীয় কিস্তির টাকা চেয়ে লোকসভা নির্বাচনে ফলাফল বেরনোর পর তাঁর কাছে যান। তাঁকে হেনস্তা করেন বলেও অভিযোগ।

উপভোক্তারা তখন দাবি করেন, ওই প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যের গাফিলতিতেই তাদের বাড়ি সম্পূর্ণ হয়নি। যার জরিমানা স্বরূপ ২৪ জন উপভোক্তার সবাইকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে বলা হয় সুশান্তকে। বেলদা থানায় সব পক্ষকে ডেকে বৈঠক হয়। সেখানে জরিমানার টাকা দিতে সম্মত হন সুশান্ত। তাঁর দাবি, সিদ্ধান্ত মতো গত ১৬ জুন বিজেপির নারায়ণগড় মধ্য মণ্ডলের সভাপতি সুভাশিস মহাপাত্রের হাতে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা তুলে দেন তিনি। অভিযোগ, তারপর দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও উপভোক্তাদের কেউই কোনও টাকা পাননি। এ দিন সকালে যে পোস্টার দেখা যায় সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, সুভাশিস ও গৌরাঙ্গ সাউ নামে আরেক বিজেপি নেতা সুশান্তের থেকে আদায় করা তিন টাকা লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এ দিন সকালে বাখরাবাদ, খালিনা, জগৎপুর এলাকার কয়েকটি দোকানের সামনে এই পোস্টার সাঁটানো ছিল। পরে বিজেপি কর্মীরা সেই পোস্টার ছিঁড়ে দেয় বলে অভিযোগ। লিখিত সিদ্ধান্ত থেকে জানা গেছে, তপন প্রধান নামে এক বিজেপি কর্মী উপভোক্তাদের বাড়ির কাজ সম্পূর্ণ করে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। বলা হয়েছিল, শেষ কিস্তির টাকা ঢুকলেই উপভোক্তা পিছু ৫ হাজার ফেরত দেবেন তিনি। ইতিমধ্যেই কয়েকজন উপভোক্তা শেষ কিস্তির টাকা পেয়ে গেলেও তপন তাঁদের কোনও টাকা দেননি। তপনের অবশ্য দাবি, ‘‘অনেকের অ্যাকাউন্টেই এখনও টাকা আসেনি। তাই সেই টাকা ব্লক সভাপতির কাছ আছে।’’

বিজেপি মণ্ডল সভাপতি সুভাশিসের দাবি, ৩ লক্ষ নয়, ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা তাঁর কাছে আছে। উপভোক্তারাই টাকা নিতে আসেননি। পোস্টারে নাম থাকা আরেক বিজেপি নেতা গৌরাঙ্গ সাউয়ের দাবি, ‘‘এসব তৃণমূলের চক্রান্ত। আমরা মানুষকে টাকা ফেরাতে চাই। সময় মতো দেওয়া হবে।’’ সুশান্ত নামে ওই প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যের বক্তব্য, তিনি কোনও উপভোক্তার থেকে কাটমানি নেননি। শেষ কিস্তি টাকা ঢুকতে দেরি হওয়ার পিছনে তাঁর কোনও ভূমিকা না থাকলেও বিজেপি তাঁকে হেনস্তা করে। তিনি আত্মসম্মান বাঁচানোর জন্য টাকা দিতে সম্মত হয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narayangarh Cut Mone Bribe BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE