Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
ডেবরা সুপার স্পেশ্যালিটি

লিফ্‌ট নেই, নাকাল রোগী

উন্নতমানের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে চন্দ্রকোনা টাউন থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে গড়ে উঠেছে ডেবরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। আপাতত ডেবরা গ্রামীণ হাসপাতালের বহির্বিভাগ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ভবনে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

দোতলার বহির্বিভাগে পৌঁছতে কষ্ট। হাসপাতালে ঢোকার মুখেই রোগীকে পরীক্ষা করছেন চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র

দোতলার বহির্বিভাগে পৌঁছতে কষ্ট। হাসপাতালে ঢোকার মুখেই রোগীকে পরীক্ষা করছেন চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র

দেবমাল্য বাগচী
ডেবরা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৭ ০১:১১
Share: Save:

অসুস্থ স্বামী গৌরাঙ্গ হালদারকে নিয়ে ডেবরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এসেছিলেন সুচিত্রা হালদার। বছর সত্তরের গৌরাঙ্গবাবুর শরীরের একাংশ অবশ হয়ে গিয়েছে। সুচিত্রাদেবী কিছুতেই ভেবে পাচ্ছিলেন না, কী ভাবে স্বামীকে দোতলায় নিয়ে যাবেন। কারণ, হাসপাতালের দো’তলায় বহির্বিভাগ। আর সেখানে পৌঁছতে লিফ্‌টের কোনও ব্যবস্থা নেই।

অগত্যা বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসকই নেমে এলেন নীচে। হাসপাতালের একতলার করিডরেই চলল গৌরাঙ্গবাবুর চিকিৎসা। সুচিত্রাদেবী বলছিলেন, “আমার স্বামী দীর্ঘদিন হাঁটাচলা করতে পারেন না। ওঁর স্নায়ুর সমস্যা রয়েছে। সকলের কথা ভেবে দ্রুত হাসপাতালে লিফ্‌ট চালু হওয়া প্রয়োজন।’’

উন্নতমানের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে চন্দ্রকোনা টাউন থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে গড়ে উঠেছে ডেবরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। আপাতত ডেবরা গ্রামীণ হাসপাতালের বহির্বিভাগ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ভবনে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। দোতলায় রয়েছে বহির্বিভাগ। লিফ্‌টের কাজ শুরু হলেও কবে তা চালু হবে ঠিক নেই। ফলে, সিঁড়ি ভেঙেই সেখানে যেতে হচ্ছে রোগীদের। সমস্যায় পড়ছেন প্রবীণ ও গুরুতর অসুস্থেরা।

রোগীদের একাংশের প্রশ্ন, সম্পূর্ণ পরিকাঠামো না গড়ে বহির্বিভাগ চালু করা হল কেন। আর যতদিন লিফ্‌ট চালু না হচ্ছে, ততদিন একতলায় কেন বহির্বিভাগ চালু করা হল না? ডেবরার এই হাসপাতালে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন দুলাল দাস। তিনি বলছিলেন, ‘‘কলকাতায় অস্ত্রোপচারের পরে স্ত্রীকে নিয়ে এখানে নিয়মিত আসতে হয়। সিঁড়ি ভেঙে স্ত্রীকে নিয়ে যেতে কী ভোগান্তি হয় বলে বোঝানো যাবে না। লিফ্‌ট চালু না করে দোতলায় বহির্বিভাগ করার কারণ কী বুঝতে পারছি না।” হাসপাতালের ফিজিওথেরাপিস্ট সোমনাথ পাত্রেরও বক্তব্য, “লিফ্‌ট না থাকায় সত্যিই রোগীদের সমস্যা হচ্ছে। আমরা যতটা সম্ভব নীচে গিয়ে পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু সব সময় তো তা সম্ভব নয়।”

শুধু লিফ্‌ট নয়, হাসপাতালে সুষ্ঠু পরিষেবা মিলছে না বলেও অভিযোগ। বালিচকের গোদাবাজারের বাসিন্দা মির্জা হাবিবুল রহমানের অভিযোগ, “গত ডিসেম্বরে আমার কোমরের হাড়ে সমস্যা হয়েছিল। এখানে দেখানোর পরে ‘রেফার’ করে দেওয়া হয়। এ ভাবে নাম-কা-ওয়াস্তে হাসপাতালে শুধু বহির্বিভাগ খুলে রেখে লাভ কী?” পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “ডেবরা হাসপাতালে এখনও কাজ চলছে। কিছু অসুবিধা হচ্ছে ঠিকই। তবে সমস্যা মিটে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Super Speciality Hospital Debra lift
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE