Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নেই ময়না তদন্তের বিশেষজ্ঞ, রেফার করা হচ্ছে দেহও

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা ছিল, ধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছে ওই নাবালিকাকে। ওই কিশোরীর দেহ খড়্গপুর হাসপাতালে ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছিল। পরদিন দুপুরে মর্গ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় দেহটি ময়না তদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যালে ‘রেফার’ করা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৭ ০১:২০
Share: Save:

সরকারি হাসপাতাল থেকে আশঙ্কাজনক রোগীকে প্রায়ই রেফার করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। অটোপ্সি সার্জন না থাকায় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য দেহও রেফার করা হচ্ছে অন্যত্র। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন মৃতের পরিজনেরা।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর ও ঘাটালের মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তের বিশেষজ্ঞ ‘অটোপ্সি সার্জন’ নেই। একমাত্র মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেন্সিক বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের উপর ১০টি ব্লকের মানুষ নির্ভরশীল। ফলে এই হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য আসা দেহের সংখ্যা অন্য হাসপাতালের তুলনায় বেশি। অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালেই অটোপ্সি সার্জন না থাকায় ভোগান্তির শিকার হন মৃতের পরিজনেরা।

গত ১৯ জুন সন্ধ্যায় খড়্গপুরে পড়শি এক যুবকের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় এক নাবালিকার দেহ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা ছিল, ধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছে ওই নাবালিকাকে। ওই কিশোরীর দেহ খড়্গপুর হাসপাতালে ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছিল। পরদিন দুপুরে মর্গ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় দেহটি ময়না তদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যালে ‘রেফার’ করা হচ্ছে।

একইভাবে, গত ১০ জুলাই খড়্গপুরে এক দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। প্রথমে ময়না তদন্তের জন্য দেহ দু’টি পাঠানো হয়েছিল খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গে। কিন্তু ময়না তদন্তের সময় দেহ দেখে চিকিৎসক জানিয়ে দেন, তাঁর পক্ষে ওই ময়না তদন্ত করা সম্ভব নয়। এর পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ফের গাড়ি ভাড়া করে দেহ দু’টি নিয়ে যান মেদিনীপুর মেডিক্যালের মর্গে। খড়্গপুরে বাসিন্দা উত্তম বাঁকুরা বলছিলেন, “যাদের আর্থিক ক্ষমতা নেই তাঁরা কী ভাবে গাড়ি ভাড়া করে দেহ নিয়ে মর্গে, মর্গে ঘুরবেন!’’

খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়না তদন্তের চাপ বেড়ে চললেও দীর্ঘদিন অটোপ্সি সার্জেন নেই। ২০১৪ সালে সোমনাথ মাইতি নামে এক বিশেষজ্ঞকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। ২০১৫ সালের অগস্টে তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে বদলি করে দেওয়া হয়। এখন হাসপাতালের অন্য বিভাগের চিকিৎসকেরা ময়না তদন্ত করছেন। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসার এমনকী আমাকেও ময়না তদন্ত করতে হয়। কিন্তু জটিল মৃতদেহের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ না থাকায় রেফার করা ছাড়া গতি নেই। আমরা ঊর্ধ্বতন মহলে সমস্যার কথা জানিয়েছি।” এ বিষয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “স্বাস্থ্য ভবনে বিষয়টি জানিয়েছি। বিশেষজ্ঞ না দেওয়া হলে কী করতে পারি। সমস্যার কথা জানলেও আমাদের কিছু করার নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE