Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

হোম থেকে ঘরে দত্তক সন্তান, আবেদন এ বার অনলাইনেই

আগে একদিন থেকে ছ’বছরের শিশুদেরই শুধুমাত্র অনলাইনে দত্তক নেওয়া যেত। এ বার ছয় থেকে আঠারো বছর বয়সী ছেলেমেয়েদেরও দত্তক নেওয়া যাবে অনলাইনে আবেদন করেই।

সৌমেশ্বর মণ্ডল
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

আগে একদিন থেকে ছ’বছরের শিশুদেরই শুধুমাত্র অনলাইনে দত্তক নেওয়া যেত। এ বার ছয় থেকে আঠারো বছর বয়সী ছেলেমেয়েদেরও দত্তক নেওয়া যাবে অনলাইনে আবেদন করেই।

একদিন থেকে ছ’বছরের অনাথ শিশুদের থাকার জন্য সরকারি হোম স্পেশ্যালাইজড অ্যাডপশন এজেন্সি (সা) নামে পরিচিত। কারও বয়স ছ’বছরের বেশি হলে তাদের হোমে পাঠানো হয়। আঠারো বয়স পর্যন্ত হোমে রাখা হয়। এই হোমের পোশাকি নাম ‘চাইল্ড কেয়ার ইনস্টিটিউট’ (সিসিআই)। আগে শুধুমাত্র ‘সা’ হোম থেকে কেউ কোনও ছেলেমেয়েকে দত্তক নিতে চাইলে অনলাইনে আবেদন করতে পারতেন।

‘সিসিআই’ হোম থেকে কোনও বাচ্চাকে দত্তক নিতে হলে অফলাইনে আবেদনপত্র জমা দিতে হত। এ বার দু’ধরনের হোম থেকেই ছেলেমেয়েদের দত্তক নেওয়া যাবে অনলাইনেই। ‘সা’ ও ‘সিসিআই’-কে সংযুক্ত করাতেই (সা-সিসিআই লিঙ্কেজ) এই সুফল মিলবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর।

প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, নতুন পদ্ধতিতে অনলাইনে আবেদন করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর শহরের সরকারি বিদ্যাসাগর বালিকা ভবন হোম থেকে প্রথম ন’বছরের একটি মেয়েকে দত্তক নিয়েছেন হুগলির শ্রীরামপুরের মাহেশের বাসিন্দা দীপঙ্কর চক্রবর্তী।

অন্য কেউ অনলাইনে আবেদন করেও এ ভাবে ঝাড়়গ্রামের মানিকপাড়ার সরকারি অনুমোদিত বেসরকারি ‘সা’ হোম থেকেও বাচ্চা দত্তক নিতে পারেন। বাচ্চা দত্তক নেওয়া যেতে পারে অন্য জেলার যে কোনও হোম থেকেই।

অনলাইনে বাচ্চা দত্তক নেওয়ার পদ্ধতি কী?

ইন্টারনেটে প্রথমে নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের ‘সেন্ট্রাল অ্যাডপশন রিসোর্স অথরিটি’-র সাইটে লগ ইন করতে হবে। সাইটের ‘চাইল্ড অ্যাডপশন রিসোর্স ইনফর্মেশন অ্যান্ড গাইডেন্স সিস্টেম’ (ক্যারিঙ্গস্‌) পোর্টালে স্বামী-স্ত্রীর নাম নথিভুক্ত করতে হবে।

ছেলে না মেয়ে দত্তক নিতে চান, কোন হোম থেকে বাচ্চা দত্তক নিতে চান, দিতে হবে সে সব তথ্যও। নাম নথিভূক্তির পর অন লাইনে লগ ইন করে পরের ধাপগুলিু অনুসরণ করতে হবে।

কোন বাচ্চা দত্তক নেবেন তা ঠিক করে জানালে সংশ্লিষ্ট হোমের আধিকারিকেরা দত্তক নিতে ইচ্ছুক দম্পতির বাড়িতে যাবেন। সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। পাড়ার লোকেদের সঙ্গে কথা বলে ওই দম্পতির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে ‘ডিস্ট্রিক্ট প্লেসমেন্ট কমিটি’-র কাছে জমা দেবেন তাঁরা।

কমিটি হোমের আধিকারিকের দেওয়া তথ্য ও দত্তক নিতে ইচ্ছুক দম্পতির দেওয়া তথ্য খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন। কমিটির অনুমোদন মিললে ‘প্রি অ্যাডপশন ফস্টার কেয়ার’ প্রক্রিয়া শুরু হবে। এই সময় দত্তক নেওয়া বাচ্চাটি ওই দম্পতির কাছে থাকতে শুরু করে। ১০ দিনের মধ্যে জেলা আদালতে দত্তক নেওয়ার সমস্ত নথিপত্র জমা দিতে হয়। এরপর আদালতে শুনানি হয়। বিচারক দত্তক নেওয়ার শংসাপত্র দিলে এটি আইনত স্বীকৃতি পায়।

মাহেশের বাসিন্দা দীপঙ্কর চক্রবর্তী ও সবিতা চক্রবর্তী পেশায় সঙ্গীত শিল্পী। মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বালিকা ভবন হোমের আবাসিক পূর্ণিমাকে দত্তক নেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর হোম থেকে ‘প্রি অ্যাডপশন ফস্টার কেয়ার’-এ পূর্ণিমাকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সন্দীপ দাস বলেন, ‘‘সা-সি সি আই লিঙ্কেজ-এর মাধ্যমে জেলায় এই প্রথম কোন শিশুকে দত্তক নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Adoption Online
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE