ভোর হলেই এখানে প্রাতঃভ্রমণ করতে আসেন স্থানীয়রা। বিকেলে ভিড় জমে স্কুল পড়ুয়া খুদেদের ক্রিকেট শেখার। আর নির্বাচন এলেই এখানে সভার আয়োজন করেন বড়-ছোট সব রাজনৈতিক দল।
কোলাঘাট শহরে রূপনারায়ণ নদী তীরবর্তী এই ফাঁকা এলাকা কাঠচড়া ময়দান নামেই এলাকাবাসীর কাছে পরিচিত। কিন্তু সেই ফাঁকা ময়দান ক্রমশ বেদখল হয়ে সেখানে দোকানঘর গজিয়ে ওঠায় শহরের বাসিন্দাদের উদ্বেগ বেড়েছ । কোলাঘাট শহরের ঐতিহ্যবাহী এই কাঠচড়া ময়দানের বেদখল রুখতে শহরের বাসিন্দারা জোট বেঁধে আন্দোলনে নেমেছেন। ‘কাঠচড়া ময়দান বাঁচাও কমিটি’ গড়ে ওই ময়দান রক্ষার দাবি জানাতে এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার গণ কনভেনশনের আয়োজন করা হয়েছে। কমিটির তরফে দাবি করা হয়েছ , রেলদফতরের অধীনে থাকা ওই জায়গায় বেদখল রুখতে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যাতে শহরের একমাত্র ওই ময়দান খোলামেলা অবস্থায় থাকে।
রেল দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এককালে কাঠ, কয়লা ও পাটের ব্যবসার জন্য বিখ্যাত ছিল কোলাঘাট। কোলাঘাট স্টেশনের সংলগ্ন নদী তীরবর্তী ওই এলাকায় মালপত্র বোঝাই ওয়াগন যাতায়াত করার জন্য রেললাইন পাতা ছিল। নদীতীরবর্তী এলাকায় কাঠের ব্যবসা করার জন্য ব্যবহার করা হত। আর নদীবাঁধের ভিতরের দিকের এলাকায় পাট ও কয়লার ব্যবসার জন্য ব্যবহার করা হত। নদীতীরবর্তী চর এলাকায় ব্যবসার জন্য ব্যবসায়ীদের কাঠেরগুড়ি রাখার জন্য লিজ দেওয়া হত। কিন্তু পরবর্তী সেই ব্যবসার রমরমা কমার ফলে ওই এলাকায় রেলের লাইন তুলে দেওয়া হয়। আর কাঠের ব্যবসার জন্য নির্ধারিত ওই জায়গার অধিকাংশ ফাঁকা পড়ে থাকত সেখানে শহরের বাসিন্দারা খেলাধুলা করতে শুরু করে। সেজন্য এলাকার বাসিন্দাদের কাছে ওই এলাকা কাঠচড়া ময়দান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
কমিটির আহ্বায়ক অসীম দাসের অভিযোগ, ‘‘ময়দানের জায়গায় বেআইনিভাবে দখল করে দোকানঘর গড়ে তোলার ফলে ক্রমশ ওই ময়দান ছোট হচ্ছে।’’ কোলাঘাটের ফুটবল প্রশিক্ষক শুভব্রত নন্দী বলেন, ‘‘কোলাঘাট শহরের খেলাধুলার জন্য ভাল ময়দান নেই । আমরা তাই পাশের হাওড়া জেলার নাউপালায় গিয়ে ফুটবল প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। কাঠচড়া ময়দানটি ক্রিকেট প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার হয়। কিন্তু যেভাবে তা বেদখল হচ্ছে তাতে এই ময়দানের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’’
অভিযোগ স্বীকার করে রেল দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘রেলের ওইসব জায়গায় ব্যবসার এখন লিজ দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। জায়গা খালি করার জন্য আগের লিজ প্রাপকদের নোটিস দেওয়াও হয়েছিল। এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy