Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ফের জালে বোমা কারখানার মালিক

ছ’বছর আগে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল দু’জনের। গ্রেফতার হয়েছিল ওই কারখানার মালিক। কয়েকমাস জেলে থাকার পরে জামিনে মুক্তি পেয়েছিল। তবে এলাকায় বোমা-বারুদের কারবার বন্ধ হয়নি

নিস্ক্রিয় করা হচ্ছে উদ্ধার করা বোমা। ছবি: বিশ্বসিন্ধু দে

নিস্ক্রিয় করা হচ্ছে উদ্ধার করা বোমা। ছবি: বিশ্বসিন্ধু দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলদা শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯ ০০:১২
Share: Save:

ছ’বছর আগে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল দু’জনের। গ্রেফতার হয়েছিল ওই কারখানার মালিক। কয়েকমাস জেলে থাকার পরে জামিনে মুক্তি পেয়েছিল। তবে এলাকায় বোমা-বারুদের কারবার বন্ধ হয়নি। ছ’বছরে পুলিশি সক্রিয়তা সেভাবে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের বিস্ফোরণের ঘটনায় সক্রিয় হল পুলিশ। ফের গ্রেফতার হল ওই বেআইনি বাজি কারখানার মালিক।

সোমবার রাতেই বেলদা থানার খাকুড়দার গাঙ্গুড়িয়াতে দেবব্রত খাঁকারির বাড়ি যায় সিআইডির বম্ব স্কোয়াড। রবিবার সন্ধ্যায় ওই তৃণমূল কর্মীর বাড়িতেই হয়েছিল বিস্ফোরণ। ঘটনার রাতেই দেবব্রতকে গ্রেফতার করলেও বোমা না বাজি তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। বিস্ফোরণ স্থল খতিয়ে দেখে নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডি। সঙ্গে ঘটনার মূল জায়গা তথা দোতলা বাড়ির একটি কক্ষ থেকে একটি তাজা বোমা সংগ্রহ করে সিআইডির বম্ব স্কোয়াড। মঙ্গলবার ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে শ্যামপুরার কাছে বোমাটিকে নিষ্ক্রিয় করা হয়। পুলিশের অনুমান বোমা বিস্ফোরণের ফলেই এই ঘটনা। অবশ্য বোমা কোথা থেকে এল, কী উদ্দেশ্যে মজুত করা হয়েছিল তার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বেলদার এই খাকুড়দা সংলগ্ন গুড়দলা, বড়মোহনপুর, গাঙ্গুড়িয়া-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় বেআইনি বাজি কারবার দীর্ঘদিনের। এলাকাবাসীর দাবি, প্রতি বছর দীপাবলির আগে এলাকায় নামমাত্র তল্লাশি চালায় পুলিশ। তবে লোকসভা নির্বাচনের মুখে গাঙ্গুড়িয়া বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ এলাকা জুড়ে তল্লাশি চালায়। বড়মোহনপুরের একটি অবৈধ বাজি তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দা লোচন দাস অধিকারীর বাড়িতে অভিযানে ৪০ কিলোগ্রাম বারুদ ও ১৫ কিলোগ্রাম সালফার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অবৈধভাবে বিস্ফোরক রাখার অপরাধে লোচন দাস অধিকারীকে রাতেই গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে ২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর এই লোচনের কারখানাতেই বিস্ফোরণ ঘটেছিল। মৃত্যু হয়েছিল হৃষিকেশ দাস অধিকারী (১৯) ও আনন্দ পাড়ি (২৬) নামে স্থানীয় গুড়দলার দুই শ্রমিকের। তার পরে এলাকাবাসীর চাপে গ্রেফতার হয়েছিল লোচন। কিন্তু কয়েকমাস যেতেই জামিনে মুক্তি পেয়েছিল বোমা বাঁধার কাজে পটু লোচন। গত ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকেই চলছিল তাঁর কারবার। লোচনের এক পড়শির কথায়, “আমাদের এলাকার ছোট-ছোট নেতাদের প্রশ্রয়েই লোচন এই কারবার চালায়। হয়তো গাঙ্গুড়িয়ার বিস্ফোরণ না হলে লোচন গ্রেফতার হত না।” যদিও বড়মোহনপুর এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত বলাই পাত্র বলেন, “এলাকায় বেআইনি বাজির কারবার প্রায় বন্ধ। কিন্তু লোচন নিজে ঝুঁকি নিয়ে এসব করে। আমরা কেউ এমন কাজকে সমর্থন করি না। প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal Bomb Factory Belda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE