Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
শুভেন্দুর বার্তাতেও কাটেনি জট, পঞ্চায়েতে ব্যাহত কাজকর্ম

তিন মাস অনিয়মিত প্রধান   

গত অগস্ট থেকে বীরবন্দর গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান সন্তোষ চৌহান নিয়মিত পঞ্চায়েত অফিসে যান না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দাবি, এর ফলে জন্ম- মৃত্যুর শংসাপত্র নেওয়া বা অন্য কোনও পরিষেবা পেতে আমজনতার ভোগান্তি হচ্ছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খেজুরি শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৫৮
Share: Save:

কখনও রাজনৈতিক অশান্তি। আবার কখনও অসুস্থতা। নানা কারণে প্রধানের অনুপস্থিতিতে গত তিন মাস ধরে খেজুরি-১ ব্লকের বীরবন্দর গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বাভাবিক কাজকর্ম বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ‘নির্দেশে’র পরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি বলে অভিযোগ।

গত অগস্ট থেকে বীরবন্দর গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান সন্তোষ চৌহান নিয়মিত পঞ্চায়েত অফিসে যান না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দাবি, এর ফলে জন্ম- মৃত্যুর শংসাপত্র নেওয়া বা অন্য কোনও পরিষেবা পেতে আমজনতার ভোগান্তি হচ্ছে। গত মাসে বুলবুল ঘূর্ণিঝড়ের পর ত্রাণ বিলি নিয়েও এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে অসন্তোষ চরমে পৌঁছেছিল বলে অভিযোগ। শেষে বাসিন্দাদের একাংশ বিডিও’র অফিস থেকে ত্রাণ বিলি করার দাবি জানিয়েছিলেন।

স্থানীয় সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটের পর থেকে বীরবন্দর এলাকায় গেরুয়া শিবির জমি শক্ত করেছে। গত অগস্ট থেকে বিজেপি এবং তৃণমূলের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, ওই সময় থেকেই বিজেপির লোকে পঞ্চায়েত প্রধানকে দফতরে ঢুকতে বহুবার বাধা দিয়েছে। ওই সব সমস্যাগুলির ব্যপারে গত ২৪ নভেম্বর খেজুরি কলেজে দলীয় সভায় গিয়ে সরব হয়েছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী। গ্রাম প্রধানকে পঞ্চায়েত দফতরে গিয়ে কাজে যোগ দিতে বাধা দেওয়ার জন্য গেরুয়া শিবিরকে ‘সতর্ক’ করে দিয়েছিল শুভেন্দু। পাশাপাশি, ওই পঞ্চায়েতকে সচল করার জন্য আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই সময় বেঁধে দেওয়ার পরেও বেশ কয়েকদিন দফতরে যাননি পঞ্চায়েত প্রধান। তবে শুক্রবার তিনি কার্যালয়ে হাজির হন। ওই দিন সাধারণ সভা ছিল। শুভেন্দুর ‘নির্দেশে’র এত দিন পরে দফতরে এলেন? জবাবে গ্রাম প্রধান সন্তোষের বক্তব্য, ‘‘গত অক্টোবর থেকে অসুস্থ। তাই চিকিৎসকের পরামর্শে ছুটিতে রয়েছি। তবে অগস্ট থেকে বারবার বিজেপির লোকেরা দফতরে এসে কাজ করতে বাধা দিত।’’

বিজেপি’র বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে খেজুরির বিজেপি নেতা অনুপ ভক্তা বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭টি বুথে বিজেপি প্রার্থী বেশি ভোট পেয়েছিলেন। তাই শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের মদতে গ্রাম প্রধান দফতরে যেতেন না। বাধার অভিযোগ মিথ্যা। তবে বিধানসভার উপ নির্বাচনে তিন কেন্দ্রে শাসকদল জয় পাওয়ার পর উনি শুক্রবার দফতরে এসেছিলেন বলে শুনেছি।’’

এ দিকে, সন্তোষ জানিয়েছেন, তিনি আরও কয়েকদিন নিয়মিত দফতরে আসতে পারবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘আগামী ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চিকিৎসক বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাই তারপর থেকেই আমি পঞ্চায়েত অফিসে যাব।’’ অথচ স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডলের দাবি, ‘‘গত শুক্রবার থেকে প্রধান দফতরে যাচ্ছেন। আর কোনও অসুবিধে হবে না।’’

দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম প্রধান অনুপস্থিত থাকায় এলাকার উন্নয়নও বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। প্রধানের পরিবর্তে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম কীভাবে চলত? এ প্রসঙ্গে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জয়দেব দাস বলেন, ‘‘এলাকার উন্নয়ন বা কোনও জরুরি কাগজে সইয়ের দরকার হলে প্রধানের বাড়িতে দফতরের কর্মীরা যেতেন। প্রশাসনিক কাজকর্ম সে রকম বিঘ্নিত হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Khejuri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE