সঙ্কীর্ণ ফুটব্রিজ। দু’টি ট্রেন একসঙ্গে চলে এলেই মালপত্র নিয়ে ফুটব্রিজে ওঠা দায়। প্রায়ই হাতছাড়া হচ্ছে ট্রেন। এই ছবি বিশ্বমানের স্টেশনের তকমাধারী খড়্গপুর রেল স্টেশনের।
বহুদিন ধরেই আরেকটি ফুটব্রিজের দাবি করছেন যাত্রীরা। প্রায় আড়াই বছর আগে ১২টি প্ল্যাটফর্ম বিশিষ্ট এই স্টেশনে দ্বিতীয় ফুটব্রিজ করার কথা ঘোষণা করেছিল রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখনও সেই কাজ বিন্দুমাত্র এগোয়নি। আজ, সোমবার খড়্গপুর রেল ডিভিশনের উন্নয়নমূলক কাজ সংক্রান্ত বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে রেল সূত্রে খবর। খড়্গপুরের সিনিয়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার কুলদীপ তিওয়ারি বলেন, “ফুটব্রিজ হওয়ার আগে জমি নির্ধারণে সমস্যা থাকায় এখনও নকশা তৈরি করা যায়নি। আমরা দ্রুত নকশা তৈরি করে দ্বিতীয় ফুটব্রিজের কাজ শুরু করব। এই নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে।”
সমস্যা বহুদিনের। তবে পুজোর সময়ে সমস্যা চরমে পৌঁছেছে। প্রতিদিন সকাল-বিকেলে ফুটব্রিজের ওপরে ভিড়ের জটে ট্রেন হাতছাড়া হচ্ছে বহু যাত্রীর। সবচেয়ে সমস্যায় পড়ছেন মহিলা যাত্রীরা। এতেই বাড়ছে ক্ষোভ। প্রশ্ন উঠছে, দ্বিতীয় ফুটব্রিজের কথা ঘোষণা করেও কেন গড়িমসি করছেন রেল কর্তৃপক্ষ। মেদিনীপুর-খড়্গপুর-হাওড়া ডেইলি প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জয় দত্ত বলেন, “গত ১২অক্টোবর একসঙ্গে তিনটি ট্রেন স্টেশনে চলে আসায় মানুষ এগোতে পারছিল না। অনেকেই সে দিন ট্রেন ধরতে পারেনি। বিপজ্জনক পরিস্থিতি। দ্বিতীয় ফুটব্রিজের কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েও সুফল পাইনি।”
ব্রিটিশ জমানায় বিংশ শতকের গোড়ায় এই স্টেশনের মালগুদাম দিক থেকে স্টেশনের ২নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছতে একটি ফুটব্রিজ ছিল। তবে ফুটব্রিজের হাল ক্রমে বেহাল হতে শুরু করায় ১৯৭৬ সাল নাগাদ স্টেশনের বোগদা থেকে মালগুদাম যেতে পুরনো ফুটব্রিজের পশ্চিমাংশে নতুন ফুটব্রিজ গড়া হয়। ৪০বছরের পুরনো ফুটব্রিজ যাত্রীদের চলাফেরায় রীতিমতো এখন কাঁপে। বেনাপুরের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক জ্যোতিন্দ্রনাথ দাস বলেন, “প্রতিদিন যে কী দুর্বিসহ অবস্থা বলে বোঝানো যাবে না। ভিড়ে ঠাসা ফুটব্রিজে চলা যায়না। তার ওপরে যখন অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে ফুটব্রিজ কাঁপে তখন আরও ভয় লাগে। এত বড় স্টেশনে এমন অবস্থা কেন হবে!”
রেল সূত্রের খবর, এই ফুটব্রিজের সঙ্গে এখন উন্নত পরিকাঠামোর লিফট, এস্কেলেটর সংযুক্ত থাকায় এখন ফুটব্রিজ ভেঙে নতুন করে গড়া কার্যত অসম্ভব। তাই দ্বিতীয় একটি ফুটব্রিজ গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপর পেরিয়ে গিয়েছে আড়াই বছর। রেল বৈঠকে কি কোনও দিশা মিলবে? আশায় রেলযাত্রীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy