Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

প্রায় প্রতিদিন রোগী নিখোঁজ

সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “অন্য হাসপাতালের মতো আমাদের এখানেও রোগী নিখোঁজ হয়ে যায়।  প্রায় প্রতিদিনই নিখোঁজ রোগীর বিষয়টি পুলিশে জানাই।’’

খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের গেটে কোনও নিরাপত্তা রক্ষী চোখে পড়েনি। বুধবার। ছবি:দেবরাজ ঘোষ

খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের গেটে কোনও নিরাপত্তা রক্ষী চোখে পড়েনি। বুধবার। ছবি:দেবরাজ ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০০:২৭
Share: Save:

হাসপাতাল চত্বর থেকে রোগীর পচাগলা দেহ উদ্ধার। তাতেই নড়েচড়ে বসেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনাতে সামনে এসেছে হাসপাতাল থেকে রোগী নিখোঁজের প্রবণতা।

মঙ্গলবারই এই হাসপাতাল চত্বর থেকে এক রোগীর পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। তার হাতে ছিল স্যালাইনের চ্যানেল। তবে মৃত ব্যক্তির দেহ শনাক্ত না হওয়ায় তিনি এই খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন কি না, তা নিয়ে ধন্দে পড়েছে পুলিশ। তবে এই ঘটনার পরেই মাথাচাড়া দিয়েছে হাসপাতাল থেকে রোগী নিখোঁজের ঘটনা। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, দিনে গড়ে ১-২জন রোগী নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছেন। সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “অন্য হাসপাতালের মতো আমাদের এখানেও রোগী নিখোঁজ হয়ে যায়। প্রায় প্রতিদিনই নিখোঁজ রোগীর বিষয়টি পুলিশে জানাই।’’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে এত বড় হাসপাতালে ২৪ ঘন্টার জন্য নিযুক্ত রয়েছেন বেসরকারি সংস্থার ৮জন নিরাপত্তারক্ষী। তাঁদের মধ্যে ২ জন রাত পাহারায় থাকেন। বাকি ৬ জন নিরাপত্তারক্ষী দিয়ে দিনের বেলায় হাসপাতালের নজরদারি চালাতে হয়। কিন্তু হাসপাতালের প্রবেশ পথ রয়েছে পাঁচটি। নিরাপত্তারক্ষীর অভাব থাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ড তাই নজরদারির বাইরে থাকে। আবার অনেক সময় নিরাপত্তারক্ষীদের কেউ অনুপস্থিত থাকায় সমস্যা আরও বাড়ে। সুপার বলেন, ‘‘রোগী পালানোর পিছনে অন্যতম কারণ নিরাপত্তারক্ষীর অভাব।’’ রোগী নিখোঁজের ক্ষেত্রে ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্সদের ভূমিকা নিয়েও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও মেডিসিন বিভাগে এক নার্স বলেন, “আমাদের ওয়ার্ডে রোগীর চাপ সামলাতে গিয়েই হিমশিম খেতে হয়। তার পরে নিরাপত্তারক্ষীর কাজও করতে হবে!”

হাসপাতাল কর্মীদের দাবি, মূলত তিন ধরনের রোগী ভর্তি হয়। প্রথমত, রোগীকে তাঁদের পরিজনেরা নিয়ে এসে হাসপাতালে ভর্তি করান। সুস্থ হলে এসব রোগী বাড়ি ফিরে যান। আরেক ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে কোনও তৃতীয় ব্যক্তি ভর্তি করিয়ে দিয়ে চলে যান। আবার কিছু রোগীর পরিজন ভর্তি করে দিয়ে যান তার পরে আর আসেন না। হাসপাতাল সূত্রের খবর, শেষ দুই ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রেই নিখোঁজ হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকতে গিয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে রোগী নিজেই বাইরে বেরিয়ে চলে যায়।

স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, নিখোঁজ রোগীদের তালিকা তৈরি করতে হবে। ইতিমধ্যেই হাসপাতালের সুপারকে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, “কর্মীদের নিখোঁজ রোগীদের তালিকা তৈরি করার সঙ্গে নার্সদেরও নজর দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তারক্ষী বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kharagpur Missing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE