Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বাজিতে সায়ে স্বস্তি, প্রশ্নও

সময়সীমা বেঁধে আতসবাজি পোড়ানোয় অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। খুশি বাজি প্রস্তুতকারকেরা। খুশি সাধারণ মানুষও। বাজি প্রস্তুতকারকেরা মনে করছেন, এ বার ব্যবসা ভাল হবে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:১০
Share: Save:

সময়সীমা বেঁধে আতসবাজি পোড়ানোয় অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। খুশি বাজি প্রস্তুতকারকেরা। খুশি সাধারণ মানুষও। বাজি প্রস্তুতকারকেরা মনে করছেন, এ বার ব্যবসা ভাল হবে। অনেকে পুলিশি ধরপাকড়ের ভয়ে আতসবাজি কিনতেন না। তাঁরা এ বার বাজি কিনবেন। অন্যদিকে, সাধারণ মানুষের বক্তব্য, সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার ফলে সকলেরই সুবিধে হবে। বাজির শব্দে অন্তত গভীর রাতে আর সমস্যায় পড়তে হবে না।

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, দেওয়ালির আগে বাজি পোড়ানো যাবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত আতসবাজি পোড়ানো যাবে। পাশাপাশি, অনলাইনে আতসবাজি কেনাবেচার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, কম দূষণ ছড়ায়, শুধুমাত্র এমন বাজিই কেনাবেচা করা যাবে।

মেদিনীপুর গ্রামীণের ছেড়ুয়ায় প্রচুর বাজি তৈরি হয়। স্থানীয় বাজি ব্যবসায়ী হাবলু খানের কথায়, ‘‘মনে হচ্ছে এ বার ব্যবসা ভাল হবে। অনেকে বাজি কিনতে এখানে আসবেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অনেকে ভয়ে বাজি কিনতেন না। আশা করি, এ বার ওই ভয় থাকবে না।’’ আতসবাজির আড়ালে তো শব্দবাজির কারবারও চলে? হাবলুর দাবি, ‘‘আমরা নিষিদ্ধ বাজি তৈরি করি না। আতসবাজিই তৈরি করি।’’ একই দাবি মহদুল মণ্ডল, বাহার মণ্ডলের মতো বাজি প্রস্তুতকারকদের।

খুশি সাধারণ মানুষও। মেদিনীপুরের বাসিন্দা অরুণাভ ঘোষের কথায়, ‘‘সময় বেঁধে দেওয়ার ফলে ভালই হল। অন্তত নির্দিষ্ট সময়টুকু নিশ্চিন্তে আতসবাজি পোড়ানো যাবে। কেউ বাধা দেবে না!’’ জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘কোথাও বেআইনি বাজির কেনাবেচা হচ্ছে কি না তা দেখা হচ্ছে। কম দূষণ ছড়ায়, এমন আতসবাজি বিক্রিতে অসুবিধে নেই। বেআইনি শব্দবাজি বিক্রি হলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

সুপ্রিমকোর্টের রায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পড়েছে রেলশহরে। মিশ্র সংস্কৃতির শহর হওয়ায় প্রতিবছর খড়্গপুর শহরে দীপাবলি ও কালীপুজো উপলক্ষে বিপুল বাজি বিক্রি হয়। সন্ধ্যার পর থেকেই আতসবাজির রোশনাই চোখে পড়ে। সেই সঙ্গে দেদার ফাটে শব্দবাজিও। শহরজুড়ে অভিযান চালালেও শব্দবাজি নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। তবে এ বার বাজি নিয়ে নির্দেশিকা জারি হওয়ায় মনমরা হয়ে পড়েছিলেন আতসবাজি ব্যবসায়ীরা।

তবে এ দিন সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কিছুটা চাঙ্গা হয়ে গেটবাজারের আসতবাজি ডিলার বি ভাস্কর রাও বলেন, “এ বছর তো ভেবেছিলাম অন্য ব্যবসায় ঝুঁকতে হবে। তবে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কিছু তো বাজি বিক্রি হবে। যদিও সামান্য বাজি বিক্রিতে মুনাফা কতটা হয় সেটা সময় বলবে।” তবে দু’ঘণ্টা বাজি ফাটানোর রায়ের পরে শহরের ইন্দার প্রবীণ বাসিন্দা নিতাই দাসের প্রতিক্রিয়া, “সুপ্রিম কোর্ট আতসবাজি পোড়াতে দু’ঘণ্টা সময় দিয়েছে। সেই নিয়মকে সম্মান জানানো উচিত। অবশ্য কে কতটা সম্মান জানাবেন আর পুলিশ কতটা কার্যকর করতে পারবে
সেটাই প্রশ্ন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE