Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সেতু নেই, খাটিয়ায় রোগী নিয়েই পারাপার

অসুস্থ কাউকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দরকার হলে গোবিন্দনগর থেকে সড়ক পথে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে যেতে পেরোতে হবে প্রায় ১৫ কিলোমিটার। অথচ নদী পেরোলেই তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ১ কিলোমিটারে।

ভোগান্তি: খাটিয়ায় করে চলছে রোগী পারাপার। নিজস্ব চিত্র

ভোগান্তি: খাটিয়ায় করে চলছে রোগী পারাপার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৮ ০২:০২
Share: Save:

পাঁশকুড়া ব্লকের গোবিন্দনগর গ্রাম। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কংসাবতী নদী লাগোয়া এই গ্রামে প্রায় ১২০০ সংখ্যালঘু পরিবারের বাস। দোকান-বাজার, স্কুল থাকলেও গ্রামে নেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তুলনায় নদীর ওপারে মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাটি তুলনায় যথেষ্ট উন্নত।

অসুস্থ কাউকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দরকার হলে গোবিন্দনগর থেকে সড়ক পথে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে যেতে পেরোতে হবে প্রায় ১৫ কিলোমিটার। অথচ নদী পেরোলেই তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ১ কিলোমিটারে। তার মধ্যেই রয়েছে পাতনদা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও একটি নার্সিংহোম। কিন্তু নদী পার হতে কোনও সেতু না থাকায় রোগী নিয়ে নাজেহাল হতে হয় বাসিন্দাদের। বাধ্য হয়ে তাঁরা নিজেরাই সমাধানের রাস্তা খুঁজে নিয়েছেন। এলাকা প্রায় প্রতি বাড়িতেই রয়েছে বাঁশের খাটিয়া। গ্রামে কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসার জন্য রোগীকে খাটিয়ায় চাপিয়ে কাঁধে নিয়েই নৌকায় নদী পরা করে হাজির হতে হয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কিন্তু সেখানেও পড়তে হয় বিপাকে। পুজোর পর থেকে গোটা শীতের মরসুম নদীতে জল কমে যাওয়ায় নৌকো চলে না। তখন খাটিয়া কাঁধে হাঁটুজল পেরিয়ে নদীর খাড়াই পাড় পেরিয়ে অনেক কষ্টে পৌঁছতে হয় মাইশোরায়।

গোবিন্দনগর গ্রামের বাসিন্দা শেখ আক্রম আলি বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে পাড়ার এক মহিলা শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় তাঁকে খাটিয়ায় করে নিয়ে ওপারে নার্সিংহোমে ভর্তি করি। এখানে একটা সেতু থাকলে অনেকের উপকার হবে।’’

মাইশোরার বাসিন্দা তথা পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কুরবান শাহ বলেন, ‘‘২০১১ সালে তৎকালীন সেচমন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়ার কাছে গোবিন্দনগরে সেতু তৈরির বিষয়ে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই আবেদনে কোনও সাড়া মেলেনি।’’ তিনি জানান, মাইশোরা এলাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশাপাশি রয়েছে একাধিক স্কুল, বাজার, একটি ডিগ্রি কলেজ, বি এড কলেজ ইত্যাদি। পাঁশকুড়ার মাইশোরা ও গোবিন্দনগরের মধ্যে কংসাবতী নদীর ওপর সেতু তৈরি হলে উপকৃত হবেন দুই পাড়ের বহু মানুষ। মাইশোরা থেকে সহজেই পৌঁছোনো যাবে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা, মেদিনীপুরে।

সেচ দফতরের পূর্ব মেদিনীপুর ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার রঘুনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নদীর ওপর বড় সেতু নির্মাণের বিষয়টি সেচ দফতরের হাতে থাকলেও এখনই কংসাবতীর উপরে বড় সেতু তৈরির কোনও পরিকল্পনা নেই। তবে ধীরে ধীরে প্রস্তাবিত প্রত্যেকটি সেতুই তৈরি করবে সেচ দফতর।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Patient Trampoline Bridge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE