Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জল নিতে এসে দুর্গন্ধে নাকে রুমাল

তাঁদের আরও অভিযোগ, শৌচাগারটি আগে থেকেই ওখানে ছিল। অথচ ঠিক তার পাশেই ওয়াটার এটিএম তৈরি হওয়াতেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে।

শৌচাগারের পাশেই সেই ওয়াটার এটিএম। —নিজস্ব চিত্র।

শৌচাগারের পাশেই সেই ওয়াটার এটিএম। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মহিষাদল শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৪১
Share: Save:

স্থানীয় মানুষের পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে তৈরি হয়েছিল ওয়াটার এটিএম। অথচ সেখানে জল নিতে যাওয়াই এখন দুর্বিষহ হয়ে দাঁড়িয়েছে এলাকার মানুষের। আর এর কারণ হল, একটি শৌচাগার। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পানীয় জল নিতে এলে শৌচাগার থেকে বের হওয়া দুর্গন্ধের জেরে অতিষ্ঠ হতে হয়। তাঁদের আরও অভিযোগ, শৌচাগারটি আগে থেকেই ওখানে ছিল। অথচ ঠিক তার পাশেই ওয়াটার এটিএম তৈরি হওয়াতেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে।

ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়া-নন্দকুমার রাজ্য সড়কের ধারে মহিষাদলে পুরনো বাসস্ট্যান্ডের অদূরে রবীন্দ্র পাঠাগারের কাছে একটি ‘ওয়াটার এটিএম’ মেশিন বসানো হয়েছিল। পঞ্চায়েত সমিতির তরফে স্থানীয় একজনকে এটিএম পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এটিএম মেশিনের ধার ঘেঁষেই রয়েছে সুলভ শৌচালয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই শৌচাগারের দরজা সর্বক্ষণ খোলা থাকে। ভিতরের অবস্থা এতটাই নোংরা যে দুর্গন্ধে টেঁকা দায়। ওয়াটার এটিএম মেশিন দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী বলেন, ‘‘মল-মূত্রের দুর্গন্ধে সারাদিন এখানে দাঁড়িয়ে থাকা খুব কষ্টদায়ক। বহুবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি এলাকা পরিষ্কার রাখার জন্য। কিন্তু কোনও পরিবর্তন হয়নি।’’

একই অভিযোগ, পথচারী থেকে ওয়াটার এটিএমে পানীয় জল নিতে আসা লোকজনেরও। স্থানীয় কিসমত নাইকুন্ডি গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে আসা বাদল মাঝি নামে এক ব্যক্তির দাবি, ‘‘ছেলে জল খাবে বলে আনতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওখানে এমন দুর্গন্ধ যে ছেলেটা জল খাওয়ার আগেই বমি করে ফেলে।’’ মহিষাদল রাজ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘এলাকায় ওটাই একমাত্র ওয়াটার এটিএম মেশিন। রোজ কলেজ যাওয়ার আগে যখন জল আনতে যাই, তখন নাকে ও মুখে ওড়না বেঁধে যেতে হয়।’’

প্রসঙ্গত, মহিষাদল বাসস্ট্যান্ড ও সংলগ্ন জনবহুল এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জল পরিষেবা দেওয়ার জন্য একটি এটিএম বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ব্লক প্রশাসন। সেইমত রবীন্দ্র পাঠাগারের কাছে বসানো হয়েছিল ওই ওয়াটার এটিএম। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওয়াটার এটিএমের পাশে যে শৌচাগার রয়েছে তা অত্যন্ত অপরিছন্ন। প্রচুর লোকজন সেটি ব্যবহার করলেও সেখানে ফিনাইল, ব্লিচিং কিছুই দেওয়া হয় না। ফলে এটিএমে জল আনতে গিয়ে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হওয়ার জোগাড়। তাঁদের প্রশ্ন, কোনও ভাবনা থেকে শৌচাগারের পাশে ওয়াটার এটিএম তৈরি হল!

শৌচাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুভাষ মাঝিরও প্রশ্ন, ‘‘ভেন্টিলেটর দিয়ে শৌচাগারের দুর্গন্ধ বেরোবে। এটা জানা থাকলেও কেন তার পাশে পানীয় জল প্রকল্প বসানো হল।’’

এ বিষয়ে মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সহ সভাপতি তিলক চক্রবর্তীর যুক্তি, ‘‘শৌচাগারের পাশে ওয়াটার এটিএম হওয়ার সময় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে কোনওরকম আপত্তি আসেনি। এখনও এই নিয়ে কেউ কোনও অভিযোগ করেননি। তবে মানুষের সমস্যার কথা ভেবে খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mahishadal Water ATM মহিষাদল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE