Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নদী বাঁধে ধস, আতঙ্কে রাত জাগছে খেজুরির গ্রাম

যে অংশে নদীবাঁধ সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থায়, ঠিক তার সামনে মাটির ঘর সুবিমল সাহুর। তাঁর কথায়, ‘‘গত ৪ সেপ্টেম্বর বাড়ির সামনে বাঁধে ফাটল দেখেছিলাম। কিন্তু একদিন পর বেশ কিছুটা এলাকায় বাঁধ ধসে যায়।’’ 

এই বাঁধ ধসেই জল ঢুকছে গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

এই বাঁধ ধসেই জল ঢুকছে গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খেজুরি শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১১
Share: Save:

দিন কয়েক আগেই ফাটল দেখা গিয়েছিল। এবার খেজুরি-২ ব্লকের বোগা গ্রামে ধস নামল রসুলপুর নদীর বাঁধে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, জোয়ার এলেই ভাঙা বাঁধ টপকে জল ঢুকছে গ্রামে। গত কয়েক দিনে একাধিকবার চাষের জমি প্লাবিত হয়েছে। ভিটে হারানোর ভয়ে রাত জাগছে গোটা গ্রাম।

রসুলপুর নদীর গা ঘেঁষেই বোগা গ্রাম। ২০০ মিটারের বেশি এলাকাজুড়ে মাটির বাঁধ তলিয়ে গিয়েছে নদীগর্ভে। পঞ্চায়েতের লাগানো গাছ এবং বন দফতরের লাগানো ভেটিভার ঘাসও চলে গিয়েছে নদীতে। গ্রামে ৬৫-৭০টি পরিবারের বসবাস। প্রচুর ধান চাষের জমি এবং ভেড়ি রয়েছে। ওই সব জমি-ভেড়িতে জোয়ারের জল ঢুকে পড়ছে বলে দাবি।

যে অংশে নদীবাঁধ সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থায়, ঠিক তার সামনে মাটির ঘর সুবিমল সাহুর। তাঁর কথায়, ‘‘গত ৪ সেপ্টেম্বর বাড়ির সামনে বাঁধে ফাটল দেখেছিলাম। কিন্তু একদিন পর বেশ কিছুটা এলাকায় বাঁধ ধসে যায়।’’

স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধ ধসে যাওয়ার খবর পঞ্চায়েত এবং ব্লক প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হলেও বাঁধ মেরামতিতে কোনও তৎপরতা দেখা যায়নি। শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসীরাই ব্যক্তিগত উদ্যোগে অস্থায়ী বাঁধ দেন।

কিন্তু হঠাৎ বাঁধ ধসে যাচ্ছে কেন? স্থানীয়েরা জানান, বাঁধের অপর পাড়ে বাড়ছে ভেড়ি। তাতে বাড়ছে চর। ফলে নদীর স্রোত বাঁধে ধাক্কা মারায় মাটি আলগা হচ্ছে। আবার ঘন ঘন মাছ ধরার ট্রলার যাওয়ার ফলে নদীর জল পাড়ে প্রবল ধাক্কা মারছে। তাতেই এই অবস্থা।

স্থানীয় বাসিন্দা সন্ধ্যা মণ্ডল বলেন, ‘‘পেটুয়া থেকে রসুলপুর পর্যন্ত নদীপথে মাছ ধরার ট্রলার খুব জোরে যায়। তার ফলে জোয়ারের সময় শক্তিশালী ঢেউয়ের ধাক্কা লাগছে পাড়ে। ফলে মাটি ধুয়ে ক্ষতি হচ্ছে বাঁধের।’’ স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, গত কয়েক দশকে বাঁধের কোনও মেরামত করা হয়নি।

সংশ্লিষ্ট নিচ কসবা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রাণকৃষ্ণ দাস বাঁধ ধসে যাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘খুব অল্প সময়ে ওই এলাকায় নদীবাঁধ ধসে গিয়েছে। গ্রাম বরাবর নদীর বাঁধ মেরামতে একশো দিনের প্রকল্পে কাজ করতে চেয়ে একটি স্কিম ব্লক জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে।’’

সেচ দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (কাঁথি মহকুমা) স্বপনকুমার পণ্ডিত বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের কাছে বাঁধ সংস্কারের জন্য অর্থ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। টাকা বরাদ্দ হলেই আমরা কাজ শুরু করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rasulpur River Khejuri Dam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE