Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রেলের কাজ আটকে বিক্ষোভ, কাউন্সিলরকে নিগ্রহ

অভিযোগ, তাঁকে জুতো, ঝাঁটা দেখিয়ে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় উঠে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের চিত্র।

রেল লাইন আটকে বিক্ষোভে গ্রামবাসীরা। —নিজস্ব চিত্র।

রেল লাইন আটকে বিক্ষোভে গ্রামবাসীরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সুতাহাটা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৮ ০১:১০
Share: Save:

গ্রামের রাস্তা দখল করে করা হচ্ছে রেললাইন সম্প্রসারণ! এই অভিযোগে সোমবার লাইন সম্প্রসারণের কাজ বন্ধ করলেন এলাকাবাসীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন হলদিয়া পুরসভার এক কাউন্সিলরের স্বামী। অভিযোগ, তাঁকে জুতো, ঝাঁটা দেখিয়ে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় উঠে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের চিত্র।

রেল এবং হলদিয়া পুরসভা সূত্রের খবর, তমলুক থেকে হলদিয়ার বাসুলিয়া পর্যন্ত রেলের ডবল লাইন রয়েছে। কিন্তু দূর্গাচক পর্যন্ত ডবল লাইন না থাকায় সম্প্রতি সমস্যা বাড়ছিল। বিশেষত, হলদিয়া এনার্জি লিমিটেড নামে এক বেসরকারি তাপ বিদ্যুৎ সংস্থার কাঁচা মাল নিয়ে যেতে অসুবিধে হত বলে জানা গিয়েছে। তাই বাসুলিয়া থেকে দুর্গাচক পর্যন্ত রেলের ডবল লাইন তৈরির কাজ শুরু হয়।

কিন্তু সোমবার ওই কাজে ঝামেলা দেখা যায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, হলদিয়ার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসুলিয়া রেল স্টেশনের কাছে যে ক্রসিং রয়েছে, সেখানে একটি রাস্তা ছিল। এ দিন সেই রাস্তা কেটে লাইনের পাতার কাজ করার সময় কর্মীদের বাধা দেন স্থানীয়েরা। আবু কালাম নামে সেখানকার এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘বহুদিন ধরে যে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করি, সেই রাস্তা দখল করে নেওয়া হচ্ছে। এতে আমরা যাতায়াত করতে গিয়ে দূর্ভোগে পড়ছি।’’

বিক্ষোভের খবর পেয়ে হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সেখানে যায় সুতাহাটা থানার পুলিশ এবং রেল ও প্রশাসনের আধিকারিকরা। তাঁদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। পরে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সর্বাণী মাঝির স্বামী তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর চন্দন মাঝি সেখানে যান। তাঁকে উত্তেজিত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। অভিযোগ, চন্দনকে জুতো, ঝাঁটা দেখানো হয়।

এ দিন স্থানীয়দের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শেখ লুতফর নামে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা। তাঁর অভিযোগ, ‘‘স্থানীয়দের সমস্যা না শুনেই গা জোয়ারি করতে চাইছিলেন কাউন্সিলরের স্বামী। তাই, তাঁর উপর রেগে যান স্থানীয়েরা। যা দেখে আমরাই পরিস্থিতি সামলাই।’’ নূর আলি নামে আরও এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘স্থানীয়দের অসুবিধে মাথায় না রেখে রেলের ঠিকাদারকে সুবিধে পাইয়ে দিতে চাইছেন এক তৃণমূল নেতা। তাই তাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন স্থানীয়েরা।’’

যদিও চন্দনের ব্যাখ্যা, ‘‘স্থানীয়দের দাবি মেনে ৩০০ মিটার দূরে বিকল্প রাস্তা বানানো হচ্ছে। তা সত্ত্বেও একাংশ বাগড়া দিতে চাইছে। তাই সমস্যা মেটানোর জন্য গিয়েছিলাম। তবে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা হয়নি।’’ এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে হলদিয়া এনার্জি লিমিটেডের এক আধিকারিক বিদুষ সেন বলেন, ‘‘রেলের ওই লাইন পাতা হলে কারখানার কয়লা পরিবহণে সুবিধে হবে। ঝামেলা এড়ানোর জন্য বহুবার স্থানীয়দের নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।’’

এ ব্যাপারে খড়্গপুর রেলের জন সংযোগ আধিকারিক কুলদীপ তিওয়ারি বলেন, ‘‘ওখানে লাইন সম্প্রসারণের কাজ হচ্ছে। জমি নিয়ে স্থানীয় লোকেদের ক্ষোভের কথা শুনেছি। কিন্তু ওই জমি রেলের। ফলে নিয়ম মতো ওদের সরে যেতেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Haldia Railway হলদিয়া
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE