Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশকে মার, ধৃত ছয় বিজেপি কর্মী

ধৃতদের এ দিন মেদিনীপুর জেলা আদালতে তোলা হয়। বিচারক রঞ্জিত ও শুভাশিসকে তিনদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। বাকিদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৮ ০১:৩১
Share: Save:

প্রশাসন জানিয়েছিল, পার পাবে না কেউই। কারণ, হামলাকারীদের ছবি আছে পুলিশের কাছে। প্রধানমন্ত্রীর সভায় যেতে না পেরে পুলিশের উপর হামলার ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার হল ছ’জন বিজেপি কর্মী। মোট আটজন বিজেপি কর্মীর নামে পাঁচটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। তবে পুলিশ সূত্রের খবর, শুধু আটজন নয়। প্রায় কয়েকশো বিজেপি কর্মী ওই ঘটনায় যুক্ত বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে।

সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত খড়্গপুর গ্রামীণ থানার পুলিশ দফায় দফায় অভিযান চালায়। তাদের বাড়ি সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার হয় ওই ছ’জন। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের মধ্যে রঞ্জিত মাহার, শুভাশিস মাহাত, বিপ্লব পাত্র, শ্রীমন্ত বেরা ঝাড়গ্রাম জেলার বেলিয়াবেড়ার গোহালুরার বাসিন্দা। লক্ষ্মীকান্ত পাল ও কোচন মণ্ডল থাকে খড়্গপুরের সতকুঁইয়ে। ধৃতদের বিরুদ্ধে কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশকর্মীদের মারধর, গাড়ি ভাঙচুর-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ধৃতদের এ দিন মেদিনীপুর জেলা আদালতে তোলা হয়। বিচারক রঞ্জিত ও শুভাশিসকে তিনদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। বাকিদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে।

ধৃতেরা প্রত্যেকেই নিজেদের এলাকায় সক্রিয় বিজেপি কর্মী হিসাবে পরিচিত। স্থানীয় সূত্রের খবর, ধৃত শুভাশিস পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। নেতৃত্ব স্থানীয় না হলেও বিজেপির কর্মসূচিতে প্রায়ই দেখা যায় তাকে। বেলিয়াবেড়ার বাকি তিন ধৃতও এলাকায় বিজেপি কর্মী হিসাবেই পরিচিত। সতকুঁইয়ের বাসিন্দা ধৃত লক্ষ্মীকান্ত বড়কোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিআই সদস্য ছিলেন। এ বার তাঁর আসনটি মহিলা সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় প্রার্থী হয়নি বছর বাহান্নর লক্ষ্মীকান্ত। তবে বিজেপির হয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাজ করতে দেখা গিয়েছে তাকে। বড়কোলা গ্রাম পঞ্চায়েতটি এ বার বিজেপির দখলে গিয়েছে। লক্ষ্মীকান্তের ভাই মনোরঞ্জন বলেন, “আমার দাদা সকাল থেকে মেদিনীপুরে সভাস্থলে ছিল। কোনও ভিডিও ফুটেজে ওর ছবি দেখা যায়নি। পুলিশ তৃণমূলের কথায় চলছে। বিজেপির জয়ী প্রার্থী ভাঙাতে পারছে না তৃণমূল। তাই দাদা ও তপন মণ্ডল-সহ বিজেপি কর্মীদের ফাঁসানো হয়েছে।”

একই সুরে পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলা বিজেপির সভাপতি শমিত দাস বলেন, “পুলিশকে মারধরের ঘটনা নিন্দনীয়। কিন্তু পুলিশ যে ভাবে চলছে তাতে মনে হচ্ছে তৃণমূলের দারা পরিচালিত হচ্ছে।’’ বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীও পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাঁর কথায়, “পুলিশ যে চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঘটনার সঙ্গে ওরা কোনওভাবেই যুক্ত নয়। পুলিশকে মারধরের ঘটনা বাঞ্ছনীয় নয়। কিন্তু এই জনরোষ তৈরির পিছনে পুলিশ দায়ী।’’

মারধরের ঘটনায় গ্রেফতারের পর পুলিশের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলছে বিজেপি। এই প্রসঙ্গে খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “কোনও রাজনৈতিক কথার জবাব আমার কাছে নেই। তবে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কিছু ভিডিও ফুটেজ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্র ধরে আমরা কয়েকজনের নাম পেয়েছিলাম। তাদের মধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতার করা হবে।”

সোমবার মেদিনীপুরে নরেন্দ্র মোদীর সভায় যাওয়ার পথে খড়্গপুরের চৌরঙ্গি মোড়ে বিজেপির বেশ কয়েকটি বাস আটকায় পুলিশ। প্রায় আড়াই ঘন্টা অপেক্ষার পরে পুলিশের ওপর ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। সেই সময়েই রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয় ওসি-সহ পুলিশকর্মীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC Arrest Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE