Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলের সামনেই ছাত্রীদের কুকথা, শ্রীঘরে ঠাঁই তিন ‘রোমিও’-র

ফলে নিত্য দিনের মতো স্কুলের মেয়েদের উত্ত্যক্ত করতে গিয়ে তাদের ঠাঁই হল শ্রীঘরে!  

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৮ ০০:৩৪
Share: Save:

সাদা পোশাকে হাজির ছিল পুলিশ। বুঝতে পারেনি ‘রোমিও’রা। ফলে নিত্য দিনের মতো স্কুলের মেয়েদের উত্ত্যক্ত করতে গিয়ে তাদের ঠাঁই হল শ্রীঘরে!

স্থানীয় সূত্রের খবর, শিল্প শহর হলদিয়ায় রিফাইনারি আবাসন থেকে রাম গোপালচক হাইস্কুল ইভটিজিংয়ের ঘটনা বাড়ছিল। অভিযোগ, স্কুলে যাওয়া এবং ছুটির সময় ওই এলাকায় ‘রোমিও’দের দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল স্কুলের ছাত্রীরা। শহর থেকে কিছুটা ফাঁকা জায়গায় ওই স্কুল হওয়ায় এ ধরনের ঘটনায় ছাত্রীরা ভয়ও পাচ্ছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘রোজ স্কুল যাওয়া-আসার সময় কয়েকজন ছেলে পিছু নিত। মোবাইল নম্বর চাইত। নানা রকম কটূক্তি করত।’’

ওই ব্যাপারে ছাত্রীদের একাংশ স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানায়। পুরসভা-সহ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সমস্যা সমাধানের আর্জি জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ। এর পরেই স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। ওই এলাকায় পুলিশি নজরদারি শুরু হয়।

শনিবার সকালে রাম গোপালচক হাইস্কুলের সামনে কয়েক জন স্কুল ছাত্রীকে কটূক্তি করে কয়েক জন যুবক। সেখানে যে পুলিশ রয়েছে, তা তারা বুঝতেও পারেনি। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, দু’টি মোটরবাইকে চেপে মোট ছ’জন যুবক ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করছিল। পুলিশ ও স্থানীয়েরা ধাওয়া করলে তিন জন বাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। তবে বাকি তিনজন পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায়।

হলদিয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে ওই যুবকদের আটক করা হয়েছিল। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতেরা হল, ফিরোজ খান, আশরফ খান এবং দীপক ডাকুয়া। ফিরোজ ও আশরফ হলদিয়ার বিষ্ণুরাম চকের বাসিন্দা। দীপকের বাড়ি খেজুরি থানার দক্ষিণ শ্যামপুরে। সে হলদিয়ায় আত্মীয়ের বাড়িতে ঘুরতে এসেছিল।

রাম গোপালচক হাইস্কুল যে এলাকায় রয়েছে, সেখানের স্থানীয় কাউন্সিলর সঞ্জয় কুমার দোলাই বলেন, ‘‘ফাঁকা জায়গায় স্কুল হওয়ায় নিরাপত্তা জনিত কিছুটা সমস্যা রয়েছে। বেশ কিছু দিন ধরে ছেলেদের দাপাদাপি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাই পুলিশকে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছিল।’’ এ ব্যাপারে রাম গোপালচক হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়ন্তকুমার শাসমল বলেন, ‘‘স্কুলের পড়ুয়ারা যাতে নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনকে বলেছিলাম। এ দিন পুলিশের ভূমিকায় আমরা খুশি।’’

হলদিয়াতে ইভটিজিংয়ের ঘটনা নতুন নয়। বছর দুয়েক আগে মহিষাদলের সিনেমা হল মোড়ের কাছে এমন ইভটিজারদের দৌরাত্ম্যে প্রাণ হারিয়েছিল এক ছাত্রী। হলদিয়া শহরের অন্য সব স্কুল চত্বরেও ‘রোমিও’দের উৎপাত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই সব স্কুলের সামনে পুলিশ মোতায়েন থাকলে ভাল হয় বলে মনে করছেন ছাত্রী এবং অভিভাবকদের একাংশ। বাড় বাসুদেবপুরের এক অভিভাবক কল্পনা মিশ্রের কথায়, ‘‘পুলিশ না থাকলেও স্কুল শুরু ও ছুটির সময় সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করলে ভাল হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Molestation Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE