Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ছিনতাইয়ের গল্প ফেঁদে ধৃত ম্যানেজার

পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘আমরা তিন দিনের মধ্যে এই ছিনতাইয়ের কিনারা করলাম। দু’জনকে গ্রেফতার করে টাকা উদ্ধার করেছি। আমিনুল ও সিরাজ গোটা পরিকল্পনা করেছিল।’’

ধৃত দু’জনকে খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় আনা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

ধৃত দু’জনকে খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় আনা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:১০
Share: Save:

পরিবহণ সংস্থার ম্যানেজারের থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ের কিনারা করল পুলিশ। ওই ম্যানেজারকে জেরা করেই উদ্ধার হল টাকা। গ্রেফতার করা হল ওই ম্যানেজার ও তাঁর এক বন্ধুকে। চলন্ত বাইক থেকে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ঘিরে গোড়া থেকেই সন্দেহ বাড়ছিল পুলিশের। শেষমেশ শনিবার খড়্গপুর গ্রামীণ থানার পুলিশ বীরভূমের মহম্মদবাজার থেকে ৯ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে নিয়ে আসে। গ্রেফতার করা হয় কলকাতার ওই পরিবহণ সংস্থার ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম ও তাঁর বন্ধু শেখ আব্বাসকে। দু’জনেরই বাড়ি বীরভূমের মহম্মদবাজারের ডিঙাপাড়ে। শুক্রবার রাতেই আমিনুলকে নিয়ে আব্বাসের বাড়িতে হানা দিয়েছিল পুলিশ।

পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘আমরা তিন দিনের মধ্যে এই ছিনতাইয়ের কিনারা করলাম। দু’জনকে গ্রেফতার করে টাকা উদ্ধার করেছি। আমিনুল ও সিরাজ গোটা পরিকল্পনা করেছিল।’’ দ্রুত ঘটনা কিনারার জন্য তদন্তকারী দলের জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করেছে জেলা পুলিশ। পুলিশের এক সূত্রে খবর, তদন্তকারী দলের চারজনকে ৩০ হাজার টাকা পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে। পুলিশ সুপারও মানছেন, ‘‘তদন্তকারী দলকে পুরস্কৃত করা হবে।’’

গত ১৮ ডিসেম্বর বিকেলে খড়্গপুর গ্রামীণের রূপনারায়ণপুরের কাছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে ১০ লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠে। কলকাতার পরিবহণ সংস্থার মালিক অভিষেক জিন্দল গ্রামীণ থানায় অভিযোগে জানান, সংস্থার খড়্গপুরের সাদাতপুরে একটি অফিস রয়েছে। সেই অফিসে শ্রমিক, খালাসিদের বেতনের জন্য বেলদায় তাঁর পরিচিতের থেকে বাইকে টাকা নিয়ে আসছিল সংস্থার ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম। বাইক চালাচ্ছিলেন আরেক কর্মী শেখ সিরাজ। রূপনারায়ণপুরের কাছে এসে আমিনুল দাবি করেন, তাঁর হাতে থাকা ১০ লক্ষ টাকার ব্যাগ ছিনতাই করে পালাচ্ছে অন্য এক বাইক আরোহী। হাতে থেকে যায় ব্যাগের স্ট্র্যাপ। ম্যানেজারের নামে লিখিত অভিযোগ না করলেও সন্দেহ প্রকাশ করেন মালিক অভিষেক।

পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রামীণ থানার ওসি আসিফ সানির নেতৃত্বে শুরু হয় তদন্ত। সন্দেহ হয় তদন্তকারীদেরও। কারণ চলন্ত বাইক থেকে ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার সময় স্ট্র্যাপ ছিড়ে থাকলে বাইক দুর্ঘটনা হওয়ার কথা। গত দু’দিন ধরে জেরা করা হয় সিরাজ ও আমিনুলকে। সিরাজ জানান, ছিনতাই হতে তিনি দেখেনি। মাঝপথে আমিনুল কয়েকবার বাইক দাঁড় করাতে বলেন। তখনই ছিনতাইয়ের কথা জানান।

আমিনুলের কথায় অসঙ্গতি পায় পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেরার মুখে ভেঙে পড়েন আমিনূল। জানা যায়, দিন কয়েক আগে বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। তখনই বন্ধু শেখ আব্বাস তাঁকে এই ছিনতাইয়ের পরিকল্পনার কথা বলেন। সেই মতো ঘটনার দিন অন্য বাইকে থাকা আব্বাসকে টাকার ব্যাগ দিয়ে দেন আমিনুল। এ কথা জানার পরে আর দেরি করেনি পুলিশ। শুক্রবার রাতেই বীরভূমে পৌঁছয় পুলিশ। শেখ আব্বাসের বাড়িতে হানা দিয়ে উদ্ধার হয় ছিনতাইয়ের টাকা। পরিবহণ সংস্থার মালিক অভিষেক জিন্দল বলেন, “ভাবতে পারছি না আমিনুল এই কাণ্ড করেছে। দিন কয়েক আগে বাইক কেনার জন্য ওকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police Transport Agency
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE