Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কাঁথির জেলে কর্ণের টিআই প্যারেড, ধরা পড়েনি মুন্নারা

কাঁথি আদালত থেকে গত বৃহস্পতিবার কর্ণের সঙ্গেই চম্পট দিয়েছিল শেখ মুন্না ও সুরজিৎ গুড়িয়া ওরফে বিশ্বজিৎ। সে দিন কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ধরা পড়ে গিয়েছিল কর্ণ। কিন্তু বাকি দু’জন এখনও নিখোঁজ। পুলিশের দাবি, তাদের ধরতে তল্লাশি চলছে। জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “ওই দুই পলাতক দুষ্কৃতীকে ধরতে সব রকম চেষ্টা চলছে।’’

কাঁথি সংশোধনাগারে কড়া নিরাপত্তা। নিজস্ব চিত্র

কাঁথি সংশোধনাগারে কড়া নিরাপত্তা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৩৬
Share: Save:

দু’দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও অধরা কুখ্যাত দুষ্কৃতী কর্ণ বেরার দুই সঙ্গী।

কাঁথি আদালত থেকে গত বৃহস্পতিবার কর্ণের সঙ্গেই চম্পট দিয়েছিল শেখ মুন্না ও সুরজিৎ গুড়িয়া ওরফে বিশ্বজিৎ। সে দিন কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ধরা পড়ে গিয়েছিল কর্ণ। কিন্তু বাকি দু’জন এখনও নিখোঁজ। পুলিশের দাবি, তাদের ধরতে তল্লাশি চলছে। জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “ওই দুই পলাতক দুষ্কৃতীকে ধরতে সব রকম চেষ্টা চলছে।’’

এর মধ্যেই শনিবার কাঁথি সংশোধনাগারে কর্ণের টি আই প্যারেড হয়েছে। এক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এই শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সারেন নাসের আলি খান। পিছাবনির সুবর্ণদিঘির বাসিন্দা নাসেরের মোটরবাইকই ঘটনার দিন কর্ণ-বাহিনী বন্দুক দেখিয়ে কেড়ে নিয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই সময় স্ত্রী হাবিবা বিবিকে নিয়ে কাঁথির এক চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছিলেন নাসের। কাঁথি আদালত থেকে বোমা-গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালানোর সময় কর্ণ-বাহিনীর সামনে পড়ে যান তিনি।

এ দিন টিআই প্যারেডের জন্য কর্ণকে মেদিনীপুর জেল থেকে কড়া পাহারায় কাঁথি জেলে নিয়ে আসা হয়। এগরা পেরনোর পরে একটি মোটর সাইকেলে দুই আরোহী কর্ণের গাড়ির পিছু নিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। কাঁথির কাছাকাছি আসার পর পুলিশ সেই দুই বাইক আরোহীকে আটক করে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চালায়। তাদের বাইকটিও আটক করেছে পুলিশ। ওই দু’জন এগরার বাসিন্দা বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিন টিআই প্যারেডের পরে কাঁথি থেকে কর্ণকে মেদিনীপুর জেলে পাঠানোর সময়ও কড়া নিরাপত্তার আয়োজন ছিল।

এ দিকে, মুন্না ও সুরজিৎ ধরা না পড়ায় কাঁথিবাসী আতঙ্কে রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ব্যাঙ্ক ডাকাতি, পেট্রোল পাম্পে ডাকাতি, গুলি চালিয়ে খুন, ধর্ষণ, খড়গপুরে পুলিশের চোখে লঙ্কাগুঁড়ো ছুড়ে পালানো এবং সর্বোপরি গত বৃহস্পতিবার পুলিশকে বোমা-গুলিতে জখম করে কাঁথি আদালত থেকে পালানোর মতো ঘটনায় অভিযুক্ত মুন্না ওরফে শেখ সিরাজ। তার বাড়ি কাঁথিরই জালালখাঁবাড় গ্রামে। সেখানে থাকেন মুন্নার ভাই শেখ ফারাজ ও ভ্রাতৃবধূ সালমা বিবি। বাড়িতে অবশ্য নেই মুন্না। ফারাজের দাবি, “গত উনিশ বছর ধরে মুন্না বাড়িতে আসে না। তার সঙ্গে পরিবারের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ প্রতিবেশী রহিমা বিবি, শেখ আসেদরা জানালেন, মুন্নার বয়স যখন পনেরো, তখন তার মা নুন্নাহার বিবি অনটনের সংসারের কিছু রোজগারের আশায় মুন্নাকে পরিচিত একজনের সঙ্গে মুম্বই পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। প্রতিবেশীদের দাবি, সেখানেই অপরাধ জগতে হাতে খড়ি হয় মুন্নার।

কাঁথি আদালত থেকে পালানো কর্ণের আরেক সঙ্গী সুরজিৎ গুড়িয়ার বাড়ি ভূপতিনগরের জুখিয়া গ্রামে। এলাকায় বছর ছয়েক আগেও ফলের দোকান চালাত সুরজিৎ। তার প্রতিবেশীদের দাবি, তারপর সে হলদিয়া চলে যায়। সেখানে বিয়ে করে ফলের ব্যবসাই শুরু করে। অনুমান, হলদিয়ায় থাকাকালীনই সুরজিৎ অন্ধকার জগতে পা রাখে। বছর একত্রিশের সুরজিতের সঙ্গেও গ্রামের বাড়ির পরিজনদের কোনও সম্পর্ক নেই বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Karna Bera Arrest Contai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE