Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

রাজনৈতিক সংঘর্ষ, ভাঙচুর পুলিশের গাড়ি

স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত খেজুরি-১ ব্লকের বীরবন্দর অঞ্চলের কণ্ঠীবাড়ির কাছে কাখুরিয়া গ্রামে। তৃণমূলের দাবি, স্থানীয় বিজেপি নেতা সনৎ মাইতির নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন বিজেপি সমর্থক এ দিন তাদের দলীয় নেতা বিশ্বজিৎ বেরার বাড়িতে বিজেপি’র পতাকা লাগাতে যায়।

কণ্ঠীবাড়িতে তৃণমূলের কার্যালয়। নিজস্ব চিত্র

কণ্ঠীবাড়িতে তৃণমূলের কার্যালয়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খেজুরি শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৯ ০০:২৮
Share: Save:

ভোট শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু উত্তেজনার পারদ নামছে না খেজুরি বিধানসভা এলাকায়। শুক্রবারই খেজুরির কুঞ্জপুর এলাকায় বিজেপি’র লাড্ডু বিতরণের মঞ্চ ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আর শনিবার দুই-পক্ষই জড়াল হাতাহাতিতে। ভাঙচুর হল তৃণমূলের দলীয় কর্যালয়। বাদ পড়েনি পুলিশের গাড়িও। দু’দলেরই দাবি, আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত খেজুরি-১ ব্লকের বীরবন্দর অঞ্চলের কণ্ঠীবাড়ির কাছে কাখুরিয়া গ্রামে। তৃণমূলের দাবি, স্থানীয় বিজেপি নেতা সনৎ মাইতির নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন বিজেপি সমর্থক এ দিন তাদের দলীয় নেতা বিশ্বজিৎ বেরার বাড়িতে বিজেপি’র পতাকা লাগাতে যায়। বিশ্বজিতের পরিজন তাতে বাধা দেন। এতে দু’পক্ষের বচসা বাধে। তখন বিজেপি সমর্থকেরা ওই তৃণমূল নেতার বাড়িতে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে গ্রামের অন্য তৃণমূল কর্মীরা ছুটে আসেন। অভিযোগ, তাঁরা সনৎকে ধরে গণধোলাই দেন। তাঁরা সনৎকে খেজুরি থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন। তারপর তৃণমূলের সমর্থকেরা যান কণ্ঠীবাড়িতে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে।

এ দিকে, সনৎকে মারধরের খবর পেয়ে বিজেপি’র প্রায় হাজার দেড়েক সমর্থক কাখুরিয়া গ্রাম থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে বালিপুকুর মোড়ে জমায়েত করেন। ততক্ষণে ঘটনাস্থলে চলে এসেছে খেজুরি থানার পুলিশ। বিজেপি সমর্থকরা তখন কণ্ঠীবাড়ির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। ক্ষিপ্ত বিজেপি সমর্থকেরা পুলিশের দু’টি গাড়ির কাঁচ ভাঙচুর করেন এবং একটি গাড়ি পাশের নয়ানজুলিতে ফেলে দেন বলে অভিযোগ। তারপর পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বিজেপি সমর্থকেরা কণ্ঠীবাড়িতে তৃণমূলের কার্যলয়ে যান। অভিযোগ, সেই অফিসেও ভাঙচুর করা হয়। শুধু তাই নয়, তৃণমূল সমর্থকরা এলাকার বিভিন্ন দোকানে লুকিয়ে রয়েছে— এই অভিযোগে পাশের সাত-আটটি দোকানেও বিজেপি কর্মীরা ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে, ঘটনাস্থলে যায় কমব্যাট ফোর্স। তারা দু’পক্ষকে হটিয়ে দেয়।

তৃণমূলের দাবি, বিজেপি সমর্থকেরা শেখ আবেদ, খুরশেদ বেগ এবং শেখ সাত্তার বেগ নামে তাদের তিন সমর্থককে মারধর করেছে। এদের মধ্যে সাত্তারের মাথা ফেটেছে। আহতদের কামারদা হাসপাতলে ভর্তি হয়েছে করা হয়েছে বলে তৃণমূলের দাবি। খেজুরিতে তৃণমূলের বিধায়ক রঞ্জিত মণ্ডল বলেন, “বিজেপি সমর্থকরা তৃণমূলের বিশ্বজিৎ বেরার বাড়িতে গিয়ে আগুন লাগানোর চেষ্টা করাতে এই পরিস্থিতির হয়েছে। আমরা খেজুরিকে কোনও ভাবেই অশান্ত করতে দেব না।’’

বিজেপি’র অবশ্য দাবি, তৃণমূল তাঁদের কর্মী সনৎকে মারধর করেছে। বিজেপি’র খেজুরির-১ মণ্ডল সভাপতি সুমন দাস বলেন, “আমাদের কর্মীদেরই তৃণমূল মারধর করেছে। আমাদের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত সনৎকে তমলুক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসলে খেজুরিতে বিজেপির ভোট বেড়েছে। তাই এমন হামলা করেছে তৃণমূল।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি তপন মাইতি বলেন, “তৃণমূল আমাদের কর্মী সমর্থকদের মারধর করেছে। এভাবে মিথ্যা অভিযোগ এবং মারধর করলে আমরা ছেড়ে কথা বলব না।’’

খেজুরির ঘটনা প্রসঙ্গে কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সৈয়দ মহাম্মদ মামদোদুল হাসান বলেন, “পুলিশের দুটি গাড়ি ভেঙেছে। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kanthibari Khejuri Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE