নাচিন্দা থেকে মারিশদার পথে শিল্লিবাড়ির কাছে। নিজস্ব চিত্র।
পথ যেন পথিকের বন্ধু নয়। বরং দিঘা যাওয়ার রাস্তা ১১৬ বি জাতীয় সড়ক পর্যটক-পথিকের যেন শত্রু। সৈকতে যাওয়ার সময় পর্যটকের ছোটখাটো মালভূমি পার হওয়ারও অভিজ্ঞতা হতে পারে।
লকডাউন শিথিল হতেই বাঙালি ফিরেছে পুরনো ছন্দে। রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও সপ্তাহান্তে বাসে, গাড়িতে দিঘা এবং মন্দারমণি আসছেন বহু পর্যটক। শুরু হয়েছে পুজোর ভিড়। এই সময় দিঘা যাওয়ার রাস্তা ১১৬ বি জাতীয় সড়ক যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পর্যটকদের কাছে।
নন্দকুমার থেকে দিঘা পর্যন্ত ১১৬ বি জাতীয় সড়কের অবস্থা খুবই করুণ। চণ্ডীপুর থেকে বাজকুল পর্যন্ত একাধিক জায়গায় জাতীয় সড়কে বড় বড় গর্ত। বৃষ্টিতে জল জমে যা কার্যত পুকুরের চেহারা নেয়। হেঁড়িয়া পর্যন্ত রাস্তা মোটামুটি ভাল। কিন্তু কৃষ্ণনগর থেকে কালিনগর সেতুতে ওঠার আগে এক কিলোমিটারের সামান্য বেশি রাস্তা চলাচলের একেবারে অযোগ্য। ইড়িঞ্চি সেতুর কাছে সামান্য কিছুটা অংশে মেরামত হয়েছে। কিন্তু নাচিন্দা ঢোকার সামান্য আগে প্রায় দু কিলোমিটার রাস্তা ভাঙাচোরা। একদিক বন্ধ রেখে আর এক দিকে গাড়ি চলাচল করছে। হামেশাই ছোটখাট দুর্ঘটনায় জখম হচ্ছেন অনেকে।
পিছাবনী সেতুতে ওঠার আগে থেকেই রাস্তা একেবারে বেহাল। খানাখন্দময় রাস্তা। মন্দারমণি যাওয়ার আগে চাউলখোলা থেকে দিঘা পর্যন্ত গোটা রাস্তার নখ-দাঁত বেরিয়ে পড়েছে। বৃষ্টিতে যেমন জলকাদার, তেমনই রোদ উঠলে ধুলোর যন্ত্রণা। রামনগরে ঢোকার মুখে গাড়িতে কাচ বন্ধ করে বসেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতের বাসিন্দা বিভাস বণিক। বললেন, ‘‘কাঁথি থেকে রামনগর ঢুকতেই প্রায় এক ঘণ্টা লেগে গিয়েছে। যা রাস্তা তাতে গাড়ির চাকা, যন্ত্রাংশ সব মনে হয় আলগা হয়ে যাবে।’’ পর্যটকদের মতো জাতীয় সড়কের এমন দশায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়েরাও। রামনগরের বাসিন্দা সুদীপ দাস বলেন, ‘‘ভিভিআইপিরা দিঘা আসার আগে কেবল তাপ্পি দেওয়া হয়। ফলে কিছুদিন পরে ফের চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায় রাস্তা। একে কেউ জাতীয় সড়ক বলবে!’’
যে অংশে চলা দায়
চণ্ডীপুর থেকে বাজকুল
কৃষ্ণনগর থেকে কালিনগর সেতু
খড়িপুকুরিয়া থেকে শিল্লিবাড়ি
মন্দারমণি যাওয়ার পথে চাউলখোলার মুখ থেকে
রামনগর
রামনগর থেকে দিঘায় প্রবেশের তোরণ
সংস্কার চলছে: ইড়িঞ্চি সেতুর কাছে, নাচিন্দা মন্দিরের কাছে এবং রামনগর রাও স্কুলের সামনে।
শুধু পর্যটক নয়, প্রতিদিন দিঘা মোহনা থেকে মাছভর্তি শতাধিক লরি যাতায়াত করে বিভিন্ন জায়গায় যায়। সেই সব গাড়ির চালকরাও অসন্তুষ্ট। শেষবার জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজের গতি প্রকৃতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। সেই সময়ে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে নন্দকুমার থেকে দিঘা পর্যন্ত পুরো জাতীয় সড়কের কাজ শেষ করা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
রাস্তা খারাপ প্রসঙ্গে কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘১১৬বি জাতীয় সড়কের কাজ শুরু করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গোটা রাস্তার সংস্কারও তারাই করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy