Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শিশু অপহরণের হুমকি-পোস্টার স্কুলে

স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার সকালে মির্জাপুর আত্যয়িক প্রাথমিক স্কুলের দেওয়ালে হাতে লেখা একটি পোস্টার দেখতে পান স্থানীয়েরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৯ ০১:৩১
Share: Save:

ছেলেধরা গুজবে গত এক বছরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এবার স্কুলের দেওয়ালে একটি বেনামি পোস্টার ঘিরে তমলুকের হিজলবেড়িয়া সংলগ্ন মির্জাপুর গ্রামে ফিরেছে ছেলেধরার পুরনো আতঙ্ক।

স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার সকালে মির্জাপুর আত্যয়িক প্রাথমিক স্কুলের দেওয়ালে হাতে লেখা একটি পোস্টার দেখতে পান স্থানীয়েরা। ওই পোস্টারে লেখা, ‘আমরা এই গ্রাম থেকে স্কুলের বাচ্চাকে তুলে ১ মাসের মধ্যে বাইরে পাচার করব। গ্রামবাসীবৃন্দ মনে রাখ। ব্যাঙ্গালোরে আর মহারাষ্ট্রে নিয়ে যাব। কিডনির দরকার’। এই সঙ্গে পোস্টারে ২২টি মোবাইল ফোন নম্বর দেওয়া রয়েছে। এর মধ্যে ২১টি নম্বর ইংরেজিতে লেখা। আর একটি নম্বর বাংলায় লেখা।

স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার পতাকা উত্তোলনের পরেই স্কুল ছুটি হয়ে যায়। সে দিন কোনও পোস্টার ছিল না। এ দিন স্কুলের সামনে যেখানে দোল উপলক্ষে মেলা বসে, সেখানেই ওই হাতে লেখা পোস্টারটি দেখতে পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে বিষয়টিকে রসিকতা বলে মনে করা হলেও, আগাম সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছে স্কুলের তরফে। তারা বিষয়টি ব্লকের প্রাথমিক শিক্ষা চক্র অফিস এবং বিডিও’র কাছে লিখিতভাবে জানান।

এলাকায় পোস্টারের কথা চাউর হতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অভিভাবকেরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘বাচ্চাদের অপহরণ করে তাদের কিডনি বিক্রি করে দেওয়া হবে বলে স্কুলের দেয়ালে পোস্টার পড়েছে। তাই এদিন বাচ্চাকে স্কুলে ছেড়ে দিয়ে এসেছি। ছুটির সময়ও নিতে এসেছি।’’

প্রধান শিক্ষক সৌমিত্র পট্টনায়ক বলেন, ‘‘চলাকালীন বাচ্চাদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা আরও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করব। পাশাপাশি, স্কুল ছুটি এবং শুরুর আগে বাচ্চাদের যাতায়াতের সময় অভিভাবকদের সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছি।’’

কিন্তু, পোস্টারে যে নম্বরগুলির উল্লেখ রয়েছে, সেগুলি কাদের? প্রধান শিক্ষক জানান, তাঁরা ২২টি নম্বরের মধ্যে বেশ কয়েকটিতে ফোন করেছিলেন। কিন্তু অধিকাংশ নম্বরই ‘সুইচড অফ’ ছিল। কেবল একটি মাত্র নম্বরে এক ব্যক্তি ফোন ধরেছিলেন। অভিযোগ, তিনি গালিগালাজ দিয়ে রং নম্বর বলে ফোন কেটে দেন।

উল্লেখ্য, ছেলেধরা গুজব রুখতে পুলিশের তরফে মাঝে সচেতনতামূলক অভিযান চলেছে। এর মধ্যে মির্জাপুর স্কুলের ঘটনাটি সামনে আসায় নড়েচড়ে বসেছে ব্লক প্রশাসন। তমলুকের বিডিও গোবিন্দ দাস বলেন, ‘‘ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ঘটনাটি আমাকে জানিয়েছেন। আমরা পুলিশকে এলাকায় গিয়ে খোঁজ নিতে বলেছি।’’ তমলুকের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘কে বা কারা পোস্টার দিয়েছে, তার খোঁজ চলছে। এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Tamluk
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE