ফের এক আলু চাষির অপমৃত্যুর ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ে। মৃতের নাম অজিত দাস (৪৯)। বাড়ি গোয়ালতোড় থানার হাতিমশানে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কীটনাশক খেয়েছিলেন অজিত। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় প্রথমে গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতাল, পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার সন্ধ্যায় সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবার সূত্রে খবর, বাজার আলুর দাম না-থাকায় চিন্তায় ছিলেন অজিতবাবু। এ নিয়ে স্ত্রী প্রতিমা দাসের সঙ্গে অশান্তিও বাধে। তার জেরেই এই ঘটনা। প্রশাসন অবশ্য জানাচ্ছে, একজন কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে ঘটনার সঙ্গে আলু চাষের সম্পর্ক নেই। মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্ত বলেন, “গোয়ালতোড়ের ঘটনার সঙ্গে আলু চাষের সম্পর্ক নেই।” এদিন দুপুরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়।
চলিত মরসুমে আবহাওয়া ভাল থাকায় এবং সেই ভাবে রোগ বা পোকার আক্রমণ না হওয়ায় আলুর ফলন ভালই হয়েছে। তার জেরে বাজারে আলুর দাম পড়েছে। আলু চাষিদের বক্তব্য, কালোবাজারির জন্য এমনিতেই বেশি দাম দিয়ে আলু বীজ সংগ্রহ করে আলু চাষ করতে হয়েছে। বিঘা প্রতি প্রায় দশ হাজার টাকা পড়েছে বীজ সংগ্রহ করতে। এ ছাড়া সারের দাম, কীটনাশকের দাম বেড়েছে। সব কিছু মিলিয়ে বিঘা প্রতি চাষে কুড়ি থেকে বাইশ হাজার টাকা খরচ পড়েছে। অথচ বাজারে আলুর দাম এখন নামমাত্র। চাষিদের কেজি প্রতি আলু বিক্রি করতে হচ্ছে আড়াই টাকায়। অর্থাত্ আড়াইশো টাকা কুইন্ট্যাল।
বিঘা প্রতি ক্ষতি হচ্ছে দশ থেকে বারো হাজার টাকা। ফলে চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। অজিতবাবু প্রায় চার বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। এ জন্য ঋণও নেন। কিন্তু ঋণ শোধ করতে পারছিলেন না। অজিতবাবুর জামাই রাজীব মাল বলেন, “ঋণ শোধ করতে না-পারায় চিন্তায় ছিলেন। বাজারে আলুর দামও তো নেই। মঙ্গলবার বিকেলে জমিতে গিয়েছিলেন। সেখানেই কীটনাশক খেয়ে নেন। পরে বাড়ি ফিরে আসার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন।” তাঁর কথায়, “জমিতে ওঁদের (শ্বশুর-শাশুড়ি) কথা কাটাকাটি হয়েছিল বলেই শুনেছি। তারপর এই ঘটনা।” প্রশাসন অবশ্য জানাচ্ছে, এই ঘটনা পারিবারিক বিবাদের জের। ঘটনার সঙ্গে সরাসরি আলুর দাম না-পাওয়ার সম্পর্ক নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy