Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

শিয়রে ভোট, ‘পিকে’-র চোখ রেলশহরেও

লোকসভায় ধাক্কার পরেই প্রশান্তের হাত ধরেছে তৃণমূল। জনসংযোগে জোয়ার আনতে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে রাজ্যে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

বরুণ দে
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৯ ০২:১২
Share: Save:

রাজ্যে বিধানসভা ভোটের দেরি আছে। তবে তার আগেই ভোট-পরীক্ষায় বসবে রেলশহর। খড়্গপুর (সদর) বিধানসভা কেন্দ্রের সেই উপ-নির্বাচনের আগে দলীয় সংগঠন গোছাতে তৎপর তৃণমূল। রেলশহরে এসে দফায় দফায় বৈঠক করছেন দলের তরফে জেলার পর্যবেক্ষক মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরও না কি বাড়তি নজর রেখেছেন রেলশহরের দিকে!

লোকসভায় ধাক্কার পরেই প্রশান্তের হাত ধরেছে তৃণমূল। জনসংযোগে জোয়ার আনতে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে রাজ্যে। গ্রামে, শহরে ছুটছেন তৃণমূলের নেতা, বিধায়কেরা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এই কর্মসূচির পিছনেও রয়েছেন পিকে। তাঁর অফিস থেকে নেতা-মন্ত্রী-বিধায়কদের ফোন করে কর্মসূচির খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ‘পিকে’র অফিসের ফোন পেয়েছেন রেলশহরের একাধিক নেতাও।

শুধু তাই নয়, নেতাদের প্রচার সামগ্রী বিলির পাশাপাশি খড়্গপুরে আলাদা ভাবে প্রচার সামগ্রী বিলির ব্যবস্থা করেছেন ‘পিকে’র সংস্থার প্রতিনিধিরা। বিষয়টি তাৎপর্যপূণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সূত্রের খবর, সম্প্রতি ‘পিকে’র সংস্থার একাধিক প্রতিনিধি রেলশহরে এসে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির ৪০ হাজার ক্যালেন্ডার বিলির ব্যবস্থা করেছেন। সেখানে রয়েছে ‘দিদিকে বলো’-য় যোগাযোগের ফোন নম্বর। মনে করা হচ্ছে, রেলশহরে ওই কর্মসূচির প্রচারে যাতে খামতি না থাকে তাই সরাসরি একেবারে কর্পোরেট ধাঁচে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।

খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার মানছেন, ‘‘শহরে 'দিদিকে বলো’র ক্যালেন্ডার এক সংস্থার লোকেরা এসে বিলি করেছেন।’’ তৃণমূলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পান্ডেরও বক্তব্য, ‘‘একটি সংস্থার লোকেরা এসে শহরে ‘দিদিকে বলো’র ক্যালেন্ডার বিলি করেছেন। ক্যালেন্ডারগুলি দেখতে বেশ ভাল। চকচকে।’’ বেশিরভাগ ক্যালেন্ডারই সংবাদপত্রের মধ্যে ঢুকিয়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

খড়্গপুরে তৃণমূলের বিধায়ক নেই। পুরপ্রধান ও স্থানীয় নেতারাই এখানে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি করছেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি মানছেন, ‘‘খড়্গপুরে দলের নেতারাই ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি করছেন।’’ দলের এক সূত্রের দাবি, প্রচারের প্রথমপর্বে ‘দিদিকে বলো’র কিট পেয়েছেন দেবাশিস চৌধুরী, জহরলাল পাল, শেখ হানিফ। দ্বিতীয়পর্বে ওই কিট পাবেন প্রদীপ সরকার, রবিশঙ্কর পান্ডে। কিট আনতে ২৪ অগস্ট কলকাতায় যাবেন রবিশঙ্কর। দল থেকে তাঁর কাছে তেমনই নির্দেশ এসেছে। দেবাশিস মানছেন, ‘‘দলের নির্দেশে কলকাতায় গিয়ে প্রচার সামগ্রী নিয়ে এসেছিলাম। যাঁদের সঙ্গে দেখা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছি।’’

দলের এক সূত্রে খবর, ‘পিকে’র সংস্থার এক প্রতিনিধির সঙ্গে দেবাশিসের মুখোমুখি কথাও হয়েছে। কলকাতায় কিটস আনতে গিয়েই না কি বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়। ওই প্রতিনিধি তাঁর কাছ থেকে খড়্গপুরের ব্যাপারে কিছু খোঁজখবর নিয়েছেন। কলকাতায় গিয়ে কি ‘পিকে’র সংস্থার কারও সঙ্গে দেখা হয়েছিল? দেবাশিসের জবাব, ‘‘নাম জানি না। একজনের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। যা যা জানতে চেয়েছিলেন জানিয়েছি।’’

খড়্গপুরে তৃণমূলের বিপর্যয়ের শুরু গত বিধানসভা নির্বাচন থেকে। এ বার লোকসভাতেও মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে জিতেছেন দিলীপ। শুধু খড়্গপুর থেকেই তিনি লিড পেয়েছেন ৪৫ হাজার ভোটের। রবিবারই খড়্গপুরে এসে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন শুভেন্দু। উপ-নির্বাচনের কথা শোনা গিয়েছে তাঁর মুখেও। দ্বন্দ্বে দীর্ণ দলকে এক ছাতার তলায় আনতে ব্যক্তিপন্থী না হয়ে তৃণমূলপন্থী হওয়ার বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Prashant Kishor TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE