Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

চিংড়িচাষিরা সঙ্কটে, দাবি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ

পরিস্থিতি থেকে বাঁচানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ  চেয়ে আবেদন করল রাজ্যের চিংড়ি চাষিদের সংগঠন ‘সুরেন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউট অফ অ্যাকোয়াকালচার ট্রেনিং অ্যান্ড  রিসার্চ’।

ভে়ড়িতে চিংড়ি চাষ। —নিজস্ব চিত্র।

ভে়ড়িতে চিংড়ি চাষ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৩০
Share: Save:

বিপাকে রাজ্যের চিংড়ি চাষিরা। তাঁদের এই ‘বিপজ্জনক’ পরিস্থিতি থেকে বাঁচানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন করল রাজ্যের চিংড়ি চাষিদের সংগঠন ‘সুরেন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউট অফ অ্যাকোয়াকালচার ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ’।

রাজ্য সংগঠন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা নিয়ে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায়। সংগঠনের দাবি, অন্ধপ্রদেশ বা ওড়িশার তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে চিংড়ির উৎপাদন খরচ প্রতি কিলোগ্রামে ৬০ থেকে ৭০ টাকা বেশি। আবার অনেক চিংড়ি ফার্ম মালিক বিদ্যুতের সংযোগের জন্য আবেদন করলেও বিদ্যুৎ দফতর বিভিন্ন অজুহাতে গড়িমসি করে বলে অভিযোগ। ফলে বিদ্যুতের অভাবে ডিজেল ইঞ্জিনের ব্যবহারে চাষে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। এছাড়া চেন্নাই বা অন্য যেসব রাজ্য থেকে চিংড়ির মীন এই রাজ্যে আসছে, সেগুলি পরীক্ষিত নয় বলেও মৎস্যজীবীদের দাবি। আবার যে পরিমাণ সিড রাজ্যে আমদানি হয়, তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম।

সংগঠনের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে এখন বাগদা এবং ভ্যানামেই চিংড়ি চাষির সংখ্যা প্রায় ৩২ হাজার। এই চিংড়ি চাষ রাজ্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান সহ রুটি-রুজির একমাত্র পথ। কিন্তু তাঁরাই এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত এবং ঋণগ্রস্ত।

সংগঠনের বক্তব্য, চিংড়ির খাবার, ওষুধ ও মীনের উপর রাজ্য সরকারের তেমন নিয়ন্ত্রন নেই। ফলে দামের সঙ্গে চিংড়ির খাবার বা ওষুধের গুণগত মান ও ন্যায্য দামের মধ্যে বিস্তর ফারাক থাকছে বলে অভিযোগ। মাছ তোলার পর তা সংরক্ষণে সমস্যায় রয়েছে বলে দাবি। মৎস্যচাষিদের দাবি, ভ্যানামেই মাছকে মাইনাস ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। আর কলকাতায় ভ্যানামেই চিংড়ির রফতানিকারক মাত্র ৩২ জন রয়েছেন। তাঁদের হিমঘরেই মাছ রাখেন চিংড়ি চাষিরা। অনেক সময় যে দিন মাছ ধরা হয়, তার পরের দিন গ্রেডিং হয়। সে ক্ষেত্রে মাছের মান কিছুটা খারাপ হয়ে যায় বলে দাবি।

কাঁথি ৩ ব্লকের চিংড়ি চাষিদের রাজ্য সংগঠনের সম্পাদক মদনমোহন মণ্ডল বলেন, “রাজ্যের চিংড়ি চাষের ক্ষেত্রে পূর্ব মেদিনীপুর অন্যতম অগ্রণী জেলা। কিন্তু প্রায় দেড় বছর হয়ে গেল এই জেলাতে মৎস্য দফতরের সহ-মুখ্য অধিকর্তা (ব্রাকিস) পদটি শূন্য রয়েছে। সামুদ্রিক বিভাগের সহ-মুখ্য অধিকর্তা রামকৃষ্ণ সর্দার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। কিন্তু এত বিশাল কর্মকাণ্ড তাঁর একার পক্ষে সম্ভব নয়।’’ মদনমোহনবাবুর বক্তব্য, ‘‘নানা সমস্যা নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কিন্তু এবার মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করছি। তা না হলে চিংড়ি চাষিদের ভবিষ্যৎ শোচনীয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Prawn চিংড়ি Prawn culture
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE